Advertisement
E-Paper

কোথায় লুকনো ছিল তাঁর প্রতিভা

জিনিয়াস বলতে সাধারণ মানুষের মনে ভেসে ওঠে এক জনেরই ছবি। আলবার্ট আইনস্টাইন। যেন তাঁর চেয়ে বুদ্ধিমান আর কেউ হতে পারে না, হওয়া সম্ভব নয়। এ যুগে তিনিই বিজ্ঞানের শ্রেষ্ঠ আইকন। মেধার সেরা বিজ্ঞাপন।

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৭ ০০:০০


লেখক: মাইকেল পেটারনিটি

মূল্য: ৩০০.০০ 

প্রকাশক: আনন্দ

লেখক: মাইকেল পেটারনিটি মূল্য: ৩০০.০০ প্রকাশক: আনন্দ

গাড়ি নিয়ে পাড়ি/ সঙ্গে আইনস্টাইন

জিনিয়াস বলতে সাধারণ মানুষের মনে ভেসে ওঠে এক জনেরই ছবি। আলবার্ট আইনস্টাইন। যেন তাঁর চেয়ে বুদ্ধিমান আর কেউ হতে পারে না, হওয়া সম্ভব নয়। এ যুগে তিনিই বিজ্ঞানের শ্রেষ্ঠ আইকন। মেধার সেরা বিজ্ঞাপন। E=mc2 মানে কী, জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি কী বলে, সে সব জানে না সাধারণ মানুষ। শুধু এটুকু জানলেই চলে যে, তিনি ছিলেন প্রায় অকল্পনীয় প্রতিভার অধিকারী। কোথায় লুকনো ছিল তাঁর ওই প্রতিভা?

প্রশ্নটা সকলের। কিন্তু উত্তর পেতে বিচিত্র এক পথে এগোন এক জন। টমাস হার্ভে। এক প্যাথলজিস্ট। আইনস্টাইন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রাত সোয়া একটায়, ১৯৫৫ সালের ১৮ এপ্রিল। সারা জীবন ব্যক্তিপূজাকে ঘৃণার চোখে দেখেছেন আইনস্টাইন। অপ্রিয় হলেও জীবদ্দশায় সহ্য করেছেন তাঁকে ঘিরে মাতামাতি। পাছে মৃত্যুর পরে তাঁর সমাধিস্থল পরিণত হয় তীর্থক্ষেত্রে, সেই ভয়ে নির্দেশ দিয়ে রেখেছিলেন মৃত্যুর পর তাঁকে যেন দাহ করা হয়, এবং ছাই উড়িয়ে দেওয়া হয় অজানা জায়গায়। অথচ, আমেরিকার প্রিন্সটন শহরের যে হাসপাতালে মারা যান আইনস্টাইন, সেখানকার প্যাথলজিস্ট হার্ভে মৃত বিজ্ঞানীর মাথায় খুলি ভেঙে তাঁর মস্তিষ্কটি বের করে নেন। সে রাতে খুবলে নেওয়া হয় তার চোখ দুটিও, কিন্তু সে কাজের নায়কও হার্ভেই কি না, তা জানা যায় না। আইনস্টাইনের চোখ দুটি অন্যের দখলে চলে গেলেও মস্তিষ্কটি তিনি নিজের দখলে রাখেন। হাসপাতালে গচ্ছিত না রেখে নিজের দখলে কেন? তিনি মস্তিষ্ক কাটাছেঁড়া করে খুঁজবেন আইনস্টাইনের প্রতিভার উৎস।

সে গবেষণা যে এগোয়নি বেশি দূর, প্রাতঃস্মরণীয় বিজ্ঞানীর বিস্ময়কর প্রতিভার রহস্য যে তেমন উন্মোচিত হয়নি এখনও, তা জানা আছে। তবে কী ঘটেছিল সেই মস্তিষ্কের ভাগ্যে, তা নিয়ে লেখা হয়েছে দু’খানি বই। ক্যারোলিন আব্রাহাম-এর পজেসিং জিনিয়াস: দ্য ট্রু অ্যাকাউন্ট অব দ্য বিঝার ওডিসি অব আইনস্টাইন’স ব্রেন এবং মাইকেল পেটারনিটি-র ড্রাইভিং মিঃ আলবার্ট: আ ট্রিপ অ্যাক্রস আমেরিকা উইথ আইনস্টাইন’স ব্রেন। সাংবাদিক পেটারনিটি বয়াম-ভর্তি ওই মস্তিষ্ক এবং হার্ভেকে সঙ্গে নিয়ে গাড়ি চালিয়েছিলেন আমেরিকার পূর্ব থেকে পশ্চিম উপকূলে। সে অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে দীর্ঘ প্রবন্ধ লিখেছিলেন ‘হারপার’স’ ম্যাগাজিনে। অনবদ্য লেখাটি পুরস্কারও পায়। বিচিত্র সেই ভ্রমণ-সাহিত্যের স্বাদু অনুবাদ উপহার দিয়েছেন গৌতম বসু।

ইতিহাসে জনসংস্কৃতি/ পরিসরে উনিশ-বিশ শতক

সম্পাদক: অমিতাভ চট্টোপাধ্যায়

মূল্য: ৪০০.০০

প্রকাশক: গাঙচিল

ইদানীং নাকি ফিকশনের বাজার নামছে, উঠছে নন-ফিকশন। পাঠকের চাহিদা-মাফিক রচিত হচ্ছে নানা রকম নিবন্ধ। কখনও তা মুচমুচে ভাষায় লেখা, কখনও সেখানে পণ্ডিতী ভঙ্গির প্রদর্শন। ভাল গদ্য লেখা সহজ নয়, পাণ্ডিত্যের ঢাল-তরোয়াল থাকলেই লেখায় মৌলিকতা থাকবে এমন ভাবার কারণ নেই। ইতিহাসে জনসংস্কৃতি/ পরিসরে উনিশ-বিশ শতক নানা মাপের নানা ধাঁচের নিবন্ধের সংকলন। কলকাতার মিষ্টি, বাঙালির প্রযুক্তি চর্চা, বাংলার লোকধারণায় ও স্মৃতিবাহী পরম্পরায় মহামারী, ঊনবিংশ শতাব্দীর বঙ্গসমাজে প্রসাধন সামগ্রী, সুন্দরবনের জলজঙ্গল, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর মুদ্রণশিল্প, প্রথম যুগের ভারতীয় চলচ্চিত্র, গুণ্ডাদের কাহিনি, উপেন্দ্রকিশোরের সন্দেশ, বামপন্থী সংস্কৃতি আন্দোলন, রবীন্দ্রনাথের স্ত্রীর পত্র গল্পের কাহিনির সূত্রে পাশ্চাত্য আধুনিকতা, পুং মতাদর্শ ও রমণীয় আত্মবিলোপ— সংস্কৃতির সাড়ে বত্রিশ ভাজা দুই মলাটে ধরে রাখা হয়েছে ।

নানা মাপের এই লেখার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছন্দক সেনগুপ্তের ‘নবযুগের কারিগর: উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, মুদ্রণশিল্প ও ‘আমাদের আধুনিকতা’’। উপেন্দ্রকিশোরের কাজ ও ভাবনার সূত্র ধরে ছন্দক প্রশ্ন তুলেছেন ‘আমাদের আধুনিকতা’ কি সব ক্ষেত্রেই পাশ্চাত্যের হাতফেরতা অনুকৃত বিচ্যুত ‘আধুনিকতা’? উপেন্দ্রকিশোরের মতো কেউ কেউ কি মুদ্রণচর্চার ক্ষেত্রে অনুকরণের বহু ঊর্ধ্বে নিজস্ব অবদানের নজির রাখেননি? অমৃতা মণ্ডল আবার উনিশ শতকের প্রসাধন সামগ্রীর কথা লিখতে গিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পূর্বজদের রচনার দ্বারস্থ হয়েছেন। সাময়িকপত্রে প্রকাশিত বিজ্ঞাপন নিজে ভাল করে দেখার দরকার ছিল। এ কথা আরও কোনও কোনও লেখা সম্বন্ধে বলা চলে। তবে সাড়ে বত্রিশ ভাজায় সব উপাদানই স্বাদু ও সাধু হবে এমন আশা না করাই ভালো ।

পাখিওয়ালার ডায়রি

লেখক: সুব্রত চক্রবর্তী

মূল্য: ৩০০.০০

প্রকাশক: আনন্দ

খাঁচায় পাখি পোষা যে ভাবে ক্রমশ নিন্দনীয় হয়ে উঠছে, তাতে এ যুগের কোনও রামব্রহ্ম সান্যাল বা সত্যচরণ লাহার দেখা মেলা খুব কঠিন। পাখি পরিচর্যার কুশলী অভিজ্ঞতা ক্রমশ বিরল হচ্ছে। ‘পাখিওয়ালার ডায়রি’-র লেখক সুব্রত চক্রবর্তী আকৈশোর অজস্র রকমের পাখি পুষেছেন, বিদেশি পাখি তো বটেই, নিষেধের আগে অবধি দেশি পাখিও। এই বইতে তাঁর পোষিত পাখিদের মধ্য থেকে কেবল তোতা জাতীয় পাখিদের (Psittacidae ফ্যামিলি) প্রায় একশোটি প্রজাতি বেছে নিয়ে তিনি তাদের পরিচয় ও পরিচর্যার কথা লিখেছেন। বদ্রি, রোজেলা, ম্যাকাও, কাকাতুয়া ইত্যাদির সঙ্গে আমাদের দেশের টিয়া, মদনা, ফুলটুসিও এই দলটির সদস্য। একজন পক্ষিপালকের চোখ নিয়ে সতীর্থ পক্ষিপালকদের কথা মাথায় রেখে বইটি লেখা। ফলে এখানে পাখিদের আহার-বিহার-আবাস-পরিচর্যা সংক্রান্ত খুঁটিনাটি পরামর্শের পাশাপাশি ঠাঁই পায় কবে কোন পাখি কার হাতে প্রথম খাঁচায় বাচ্চা পেড়েছিল, সেই তথ্য। কয়েকজন প্রখ্যাত পক্ষিপালকের সঙ্গে তিনি আমাদের পরিচয় করিয়েছেন, জানিয়েছেন ভারত তথা বিদেশের কিছু পাখির বাজার ও পক্ষিবিক্রেতার কথাও। তবে, প্রতিটি ধরনের পাখির সঙ্গে পরিপালকের প্রত্যক্ষ সম্পর্কের বর্ণনা, তাঁর ব্যাপক অভিজ্ঞতার ছাপ, এ ‘ডায়রি’তে আরও বেশি আশা করা গিয়েছিল। জীবনভর পাখির সঙ্গ তাঁকে তো এনে দিয়েছে সেই সুযোগ!

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy