Advertisement
E-Paper

যে পোড়ামাটি নিখাদ ও ঐতিহ্যের

পশ্চিমবঙ্গে বিষ্ণুপুরের মন্দিরগুলো মল্ল রাজাদের আমলে তৈরি হয়েছিল। সপ্তম খ্রিস্টাব্দের শেষের দিকের সৃষ্ট এই সব মন্দিরে খুব উচ্চ মানের কাজ দেখা যায়। শিল্পী তাঁর কাজে মূলত রূপকথা বা কিংবদন্তি বা পুরাণের গল্পকথা থেকে উপাদান গ্রহণ করেন।

শমিতা বসু

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ০০:৫২
ভাস্কর্য: ‘শ্রী’ গ্যালারিতে আয়োজিত রামকুমার মান্নার প্রদর্শনীর একটি ছবি

ভাস্কর্য: ‘শ্রী’ গ্যালারিতে আয়োজিত রামকুমার মান্নার প্রদর্শনীর একটি ছবি

রামকুমার মান্নার টেরাকোটা বা পোড়ামাটির ভাস্কর্য কোনও পরিচয়ের অপেক্ষা রাখে না। তাঁর একক প্রদর্শনী হয়ে গেল ‘শ্রী’ গ্যালারিতে। প্রদর্শনীর নাম ‘মিথলজি রিক্রিয়েটেড’।

টেরাকোটার কাজ পৃথিবীতে প্রাচীন কাল থেকেই আছে। যেমন, মহেঞ্জোদরোতে খনন করে মূর্তি পাওয়া গিয়েছে। বালুচিস্তানে, মেসোপটেমিয়াতে নানা ধরনের মূর্তি উদ্ধার করা হয়েছে। চিন দেশে পাওয়া পোড়ামাটি সংগ্রহ বোধ হয় সবথেকে উৎকৃষ্ট। এ ছাড়াও আফ্রিকাতে যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিল টেরাকোটার ভাস্কর্য। রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর থেকে এর ব্যবহার সীমিত হতে থাকে। তার পর আবার রেনেসাঁর সময়ে নতুন ভাবে টেরাকোটার কাজ জনপ্রিয় হতে থাকে শিল্পীর সৃজনশীলতার মাধ্যম হিসেবে।

পশ্চিমবঙ্গে বিষ্ণুপুরের মন্দিরগুলো মল্ল রাজাদের আমলে তৈরি হয়েছিল। সপ্তম খ্রিস্টাব্দের শেষের দিকের সৃষ্ট এই সব মন্দিরে খুব উচ্চ মানের কাজ দেখা যায়। শিল্পী তাঁর কাজে মূলত রূপকথা বা কিংবদন্তি বা পুরাণের গল্পকথা থেকে উপাদান গ্রহণ করেন। পোড়ামাটির কাজ করতে বিশেষ রকম মাটির প্রয়োজন হয়। সেই মাটির সঙ্গে অন্য যা যা বস্তুর মিশ্রণ দরকার হয় সেই সব বিস্ময়কর ব্যাপার সম্ভব করেছেন শিল্পী রামকুমার। নির্মাণের দক্ষতা তাঁর যথেষ্ট। ছোটবেলা কেটেছে মেদিনীপুর জেলায়। তখন থেকেই নানা রকম বিমূর্ত আকৃতিতে মূর্তি গড়ার কাজ চলতে থাকে। কলকাতায় স্থানান্তরিত হওয়ার পরও এই পোড়ামাটির আকর্ষণে ‘ক্লে মডেলিং’-এ ডুবে যান এবং খুব অল্প সময়ের ভেতর নিজস্বতার পরিচয় দিতে থাকেন।

রামকুমারের কাজের মধ্যে নিখাদ পোড়ামাটির মূর্তিগুলো বড়ই সুন্দর। প্রথাগতভাবে শিবমূর্তি তিনি গড়েননি। এ শিব যেন রুদ্র নন, দেবতা নন, ইনি আমাদেরই একজন। নরম মুখশ্রী, ভাবটি বড় আর্দ্র। তাঁর রাধাকৃষ্ণের যুগল মূর্তি এবং আলাদা আলাদা রাধারানি বা মুরলীধর বড় সুন্দর। টেরাকোটায় মাটির স্বাভাবিক রং ছাড়া অন্য রংও ব্যবহার করেন শিল্পী। তাঁর শয়নরত লক্ষ্মী, পঞ্চমুখী গণেশ, পঞ্চমুখী হনুমান, ষাঁড় ইত্যাদি মূর্তি নয়নাভিরাম।

Terracotta টেরাকোটা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy