Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Vidyasagar

‘বইগুলিই সেকুলারিস্ট’

বিদ্যাসাগরের কাছে ধর্ম, জাত, সম্প্রদায় ছাপিয়ে মনুষ্যত্বের পরিচয়ই শেষ কথা।

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২১ ০২:২০
Share: Save:

সংবর্তক: জন্মদ্বিশতবর্ষে বিদ্যাসাগর বিশেষ সংখ্যা
সম্পাদনা: সৌরভরঞ্জন ঘোষ
৩৫০.০০

ধর্মীয় প্রভাবমুক্ত, আপসহীন, সেকুলার, মানবতাবাদী— আধুনিক মনের আলোকেই ভাস্বর চেহারায় ছোটখাটো মানুষটি। বিদ্যাসাগরের কাছে ধর্ম, জাত, সম্প্রদায় ছাপিয়ে মনুষ্যত্বের পরিচয়ই শেষ কথা। সংবর্তক পত্রিকার ‘সম্পাদকীয়’ প্রতিবেদন জানাচ্ছে, “...বিদ্যাসাগরের পরিপূর্ণ পরিচয় যে তাঁর অনন্য জীবনদর্শনের মধ্যেই নিহিত, তা-নিয়ে আমরা আজও খুব একটা সচেতন নই বলেই মনে হয়।” বিশেষ সংখ্যায় বিদ্যাসাগর-চর্চার এই ধারাটিকে সর্বাধিক জরুরি বলে মনে করেছে এই পত্রিকা। নানা ভাবে উঠে এসেছে বিদ্যাসাগরের ব্যক্তিত্ব, তাঁর ধর্ম ও দর্শন, ভাষা ও সাহিত্য, শিক্ষা তথা সমাজসংক্রান্ত ভাবনা। প্রবন্ধকারের তালিকায় আছেন শঙ্খ ঘোষ, রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য, পবিত্র সরকার, অভ্র ঘোষ, সৌরীন ভট্টাচার্য প্রমুখ। দু’টি পর্বে আলোচিত হয়েছে সমকালীন দৃষ্টিতে এবং বহির্বঙ্গে বিদ্যাসাগর। ‘বিদ্যাসাগর: ফিরে পড়া’ অংশে মুদ্রিত হয়েছে ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মণীন্দ্রকুমার ঘোষের দু’টি প্রবন্ধ। ‘পরিশিষ্ট’ অংশগুলিতে রয়েছে বিদ্যাসাগরের জীবনপঞ্জি, রচনাপঞ্জি, সাময়িকপত্রে বিদ্যাসাগর-চর্চার খসড়াপঞ্জি।

কথা সোপান: বিদ্যাসাগর বিশেষ ক্রোড়পত্র
সম্পাদনা: সুস্মিতা জোয়াদ্দার মুখোপাধ্যায়
৩০০.০০

বিদ্যাসাগরের জন্মদ্বিশতবার্ষিকীর সূচনায় কথা সোপান-এর মূল আকর্ষণ ছিল বিশেষ ক্রোড়পত্র ‘বিদ্যাসাগর’। সাতটি প্রবন্ধ ও পঞ্জির সমাহার, হরিপদ ভৌমিকের ‘কলকাতায় বিদ্যাসাগরের দিনলিপি’ থেকে পাঠক বুঝতে পারবেন এই শহরের সঙ্গে বিদ্যাসাগরের নিবিড় সংযোগসূত্রটি। আবীর কর তুলে ধরেছেন তাঁর বাংলা বর্ণমালা সংস্কারের বৃত্তান্ত, আশিস খাস্তগীর লিখেছেন বিদ্যাসাগরের প্রেস ও বই-দোকান, ‘সংস্কৃত যন্ত্র’ ও ‘সংস্কৃত বুক ডিপোজ়িটরি’ ঘিরে তাঁর আশা ও আশাভঙ্গের ইতিহাস, পরিচয় করিয়েছেন বীরসিংহে বই-সংগ্রহের সঙ্গে। তন্নিষ্ঠ পাঠক বিদ্যাসাগরের সংগ্রহে শেক্সপিয়র থেকে ভিক্তর উগো, দান্তে, মধুসূদন, তলস্তয়ের বই, এমনকি ডিটেকটিভ টেলস— বিস্ময় জাগায়। আছে কিছু বইয়ের আখ্যাপত্র, চিঠি, নথির প্রতিলিপিও।

কোরক: দ্বিশতজন্মবর্ষে ঈশ্বরচন্দ্র
সম্পাদনা: তাপস ভৌমিক
১৭৫.০০

হিতবাদী পত্রিকার সম্পাদক কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্য ছিলেন বিদ্যাসাগরের অত্যন্ত স্নেহভাজন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন: “বিদ্যাসাগর নাস্তিক ছিলেন...।” গোপা দত্তভৌমিকের ‘কৃষ্ণকমলের বিদ্যাসাগর’ ঠাঁই পেয়েছে কোরক পত্রিকার দ্বিশতজন্মবর্ষে ঈশ্বরচন্দ্র সংখ্যায়। বিদ্যাসাগরের তিন চরিতকার শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন, চণ্ডীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিহারীলাল সরকার-কৃত জীবনীর মূল্যায়ন করেছেন ছন্দা রায়। বিদ্যাসাগরের সহোদর অনুজ শম্ভুচন্দ্র তাঁর সম্বন্ধে অভিমত দিয়েছেন: “অগ্রজ মহাশয় শৈশবকাল হইতে কাল্পনিক দেবতার প্রতি কখনই ভক্তি বা শ্রদ্ধা করিতেন না।” এমন ঘটনার কথাও জানিয়েছেন তিনি, যেখানে বিদ্যাসাগর বলেছিলেন “ধর্ম যে কি, তাহা মনুষ্যের বর্তমান অবস্থায় জ্ঞানের অতীত এবং ইহা জানিবারও কোনো প্রয়োজন নাই।” রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য লিখেছেন, “বিদ্যাসাগর সম্পর্কে খ্রিস্টান মিশনারীদের প্রধান আপত্তি ছিল, তাঁর লেখা শিশুপাঠ্য বইগুলি শুধু এক জন সেকিউলারিস্টের তৈরি নয়, বইগুলিই সেকিউলারিস্ট।” রামকৃষ্ণবাবুর বিদ্যাসাগর-চর্চা নিয়ে লিখেছেন শুভেন্দু সরকার। উনিশ শতকের সমাজ-সংস্কার, নারীর অধিকার, শিক্ষাবিস্তার-সহ বিবিধ ব্যাপারে তুমুল দ্বন্দ্বময় যে বঙ্গদেশ এবং সেখানকার বিভিন্ন ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের যে টানাপড়েন, সে সবেরই জটিল বর্ণময় প্রকাশ যেন তাঁর জীবন... এমনই নানান চিহ্নে ঋদ্ধ কোরক-এর এই ‘শারদীয় ২০১৯’ সংখ্যাটি।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর: অ্যাজ় প্রিন্টার অ্যান্ড পাবলিশার
৪০.০০

এশিয়াটিক সোসাইটি, কলকাতা

এ বছর কলকাতা আন্তর্জাতিক পুস্তকমেলায় এশিয়াটিক সোসাইটির স্টলে প্রদর্শনী-পরিচায়ক পুস্তিকাটি সংগ্রহযোগ্য। মাত্র ২৩ পৃষ্ঠার পুস্তিকাটিতে উঠে এসেছে বিদ্যাসাগরের ‘বাংলা হরফ ও বিন্যাসের সংস্কার, সংস্কৃত প্রেস ও ডিপোজ়িটরি প্রতিষ্ঠা, শিক্ষামূলক বই, অনূদিত গ্রন্থ মুদ্রণ ও বিক্রয়ের ঐতিহাসিক গুরুত্ব।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Vidyasagar Review
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE