Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
পুস্তক পরিচয় ২

‘কাটা ঘুড়ির পিছনে আর ছুটতে পারি না’

ত্যাগে দুঃখে সাধনায় মনীষায় যাঁরা আমাদের পরিচয় আর ইতিহাস গড়ে তুলেছেন, তাঁদের সম্পর্কে আমার কিছু শ্রদ্ধা আছে। আজ নির্বিচারে তাঁদের ছবি আর মূর্তির কল্পনাতীত অবমাননা দেখে ধারণা জন্মেছিল— এ সমস্ত ডাহা পাগলের কাণ্ড, কোন রাজনৈতিক দল, যত বিপ্লবীই তাঁরা হোন না কেন, যে-ডালে বসে আছেন, সেই ডালের গোড়ায় কুড়ুল বসাবেন— এমন কাঁঠালে বুদ্ধি তাঁদের থাকতেই পারে না।’— নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সুনন্দর জার্নাল’, ১৯৭০।

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৫ ০০:০১
Share: Save:

ত্যাগে দুঃখে সাধনায় মনীষায় যাঁরা আমাদের পরিচয় আর ইতিহাস গড়ে তুলেছেন, তাঁদের সম্পর্কে আমার কিছু শ্রদ্ধা আছে। আজ নির্বিচারে তাঁদের ছবি আর মূর্তির কল্পনাতীত অবমাননা দেখে ধারণা জন্মেছিল— এ সমস্ত ডাহা পাগলের কাণ্ড, কোন রাজনৈতিক দল, যত বিপ্লবীই তাঁরা হোন না কেন, যে-ডালে বসে আছেন, সেই ডালের গোড়ায় কুড়ুল বসাবেন— এমন কাঁঠালে বুদ্ধি তাঁদের থাকতেই পারে না।’— নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সুনন্দর জার্নাল’, ১৯৭০। তাঁকে নিয়ে উজাগর-এর (সম্পা: উত্তম পুরকাইত) বিশেষ সংখ্যা। তাতে তাঁর রচনা ও অপ্রকাশিত চিঠিপত্র। তাঁকে নিয়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় অমিতাভ দাশগুপ্ত ও অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনার পুনর্মুদ্রণ, সঙ্গে বিশেষ রচনা সমরেশ মজুমদার ও রবিন পালের। তাঁর উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, রম্যরচনা, কিশোর সাহিত্য নিয়ে মূল্যায়ন। রয়েছে তাঁর গ্রন্থপঞ্জি-জীবনপঞ্জিও।

নৌকো-র (সম্পা: অমলেন্দু বিশ্বাস) ‘বিশেষ কবি ও কবিতা সংখ্যা’য় রমেন্দ্রকুমার আচার্যচৌধুরীকে নিয়ে লিখেছেন সুধীর চক্রবর্তী। বিপ্লবী আধুনিকতার তাত্‌পর্যে বিষ্ণু দে অরুণ মিত্র সুভাষ মুখোপাধ্যায় ও তাঁদের উত্তরসাধকদের নিয়ে তরুণ সান্যালের রচনা। আলোক সরকার লিখেছেন অরুণকুমার সরকার সম্পর্কে। এমনই আরও বিশিষ্ট কবিদের নিয়ে কবিদেরই রচনা।

এখন ইছামতী বিদ্যাধরী-র (সম্পা: অসীমকুমার রায়) বিষয় ‘কথাসাহিত্যের কথকতা’, অতিথি সম্পাদক অনিল ঘোষ। কথাসাহিত্য নিয়ে নতুন ভাবনার উন্মোচন করতে এ-দেশ ও ভিন্দেশের সাহিত্যব্যক্তিত্বদের কথা ও তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গির আলোচনা। প্যাট্রিক মোদিয়ানো বিষয়ে আলোচনা, সাধন চট্টোপাধ্যায়ের প্রবন্ধ, অমর মিত্র ও শচীন দাশের বিশেষ রচনা, নলিনী বেরার গল্প, ঊষসী ভট্টাচার্যের কাব্যগল্প বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে।

‘আমাদের বাল্যে, আমাদের কৈশোরে সেই চিলেকোঠা ছিল অজানা দ্বীপের মতো। এই চিলেকোঠায় আমরা ছিলাম রবিনসন ক্রুসোর মতো। আমরাই রাজা।’ লিখেছেন চন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ‘চিলেকোঠা’ নিয়ে, তাঁর সম্পাদিত কিঞ্জল-এর বিশেষ সংখ্যা ‘তিনটে-ছ’টা-ন’টা’-য়। সম্পাদকীয়তে তিনি জানিয়েছেন, নস্টালজিয়া নিয়ে এ-সংখ্যা, নামটা প্রতীকী, কারণ বাঙালি মধ্যবিত্তের জীবনে এই তিনটে-ছ’টা-ন’টা ছিল একদা বিনোদনের অভ্যাস, সিনেমার শো-টাইম। নাম-নিবন্ধটি লিখেছেন সোমনাথ রায়। আড্ডা নিয়ে চণ্ডী লাহিড়ী, আকাশবাণী নিয়ে তরুণ চক্রবর্তী। কড়িবরগা, হাতিবাগানের থিয়েটার, যৌথ পরিবার— উজ্জ্বল উদ্ধার।

দেওয়াল নিয়ে কথা-মেঘ-এর (সম্পা: শান্তনু অধিকারী) সাম্প্রতিক সংখ্যাটি। লেখকেরা সীমিত পরিসরেই উপস্থাপিত করেছেন দেওয়াল-এর নানা দিক, নানা ভাষ্য। তাঁদের রচনাদি ভাগ করা হয়েছে বিভিন্ন শিরোনামে— প্রত্ন দেওয়াল, পরিভাষার দেওয়াল, সংস্কৃতির দেওয়াল ইত্যাদি। এমনকী পরিশিষ্টে ফেসবুক-এরও দেওয়াল।

কবি দিনেশ দাস সম্পর্কে: ‘সূর্য দেখাবার জন্য আলো জ্বালবার, অঙ্গুলি নির্দেশের বা আরশির প্রয়োজন হয় না...’, লিখেছিলেন নীহাররঞ্জন রায়। সাহিত্যদর্পণ-এর (সম্পা: তরুণ রায়চৌধুরী) ‘কবি দিনেশ দাস জন্মশতবর্ষ সংখ্যা’য় তাঁকে নিয়ে নানা লেখার মধ্যে সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের কবিকে ইতিহাসের প্রেক্ষিতে দেখা: ‘নির্জন কবির ধারণা বিদায় নিল।... চল্লিশের দশকের প্রধান কবিরা সকলেই প্রায় সমাজের তাপ শুষে নিলেন তাঁদের বর্ণমালায়।... তরুণ দিনেশ-ও, বলা বাহুল্য; এই মিছিলে সামিল হলেন।’

পুণ্যিপুকুর-এর (সম্পা: ভাস্করব্রত পতি) ‘ঘুড়ি সংখ্যা’য় অঞ্চলভেদে বা দেশদেশান্তরে ঘুড়ি এবং তা ওড়ানোর হালহদিশ। সঙ্গে লাটাই-ঘুড়ি নিয়ে স্বপ্নের মতো স্মৃতিও, লিখেছেন পবিত্র সরকার ‘ঘুড়িও আর ওড়াতে পারি না, কিংবা তার চেয়েও বেশি যা কষ্টের বিষয়— কাটা ঘুড়ির পিছনে আর ছুটতে পারি না।’

‘কবিতা-গদ্য-ছবি— যে শিল্পকর্মই হোক, সেখানে স্পষ্টে-অস্পষ্টে উঠে আসে স্রষ্টার “আত্ম”।’— এই নিয়েই উপাংশু-র (সম্পা: শ্যামলকুমার বিশ্বাস) বিশেষ ‘আত্ম’ সংখ্যা।

‘পৃথিবীর সমস্ত জনগোষ্ঠীর স্বকীয় যাপন-পদ্ধতি ও অভিজ্ঞতার আলো-অন্ধকার ফুটে ওঠে লোককথার বিচিত্র আবহ আর রূপে। মুখে-মুখেই ছড়িয়ে পড়ে তা।... লিখিত ঐতিহ্য শুরু হওয়ার অনেক আগেই ছড়িয়েছে এ সমস্ত গল্প।’— লোককথা পত্রিকায় লিখেছেন সম্পাদক মানিক দাস ও সন্দীপন ভট্টাচার্য, সঙ্গে জানিয়েছেন ‘এ সংখ্যায় যেমন আছে মেক্সিকোর লোককথা, সঙ্গে দেশটা সম্বন্ধে জ্ঞাতব্য বহু তথ্য।’ মেক্সিকোর পটকথা লিখেছেন মানিক দাস আর লোককথাগুলি ভাষান্তর করেছেন সুতপা বসু।

ভারত-সহ সারা বিশ্বেই বামপন্থী মতাদর্শ আজ গভীর সঙ্কটে, নির্বাচনী রাজনীতির কৌশল থেকে সশস্ত্র সংগ্রামের ভাষ্য সবই প্রশ্নের মুখোমুখি। এই নিয়েই নানা নিবন্ধ নয় দরজা-য় (সম্পা: প্রলয় চক্রবর্তী কৃষ্ণেন্দু পালিত), বিষয়: বামপন্থা। ‘ভারতে দক্ষিণপন্থার উত্থান ও বামপন্থীদের কর্তব্য’ সন্তোষ রানার এই রচনাটির সঙ্গে নবনীতা দত্তের রচনা ‘সংসদীয় গণতন্ত্রে নারীর ক্ষমতায়ন ও বামপন্থী সীমাবদ্ধতা’।

জারি বোবাযুদ্ধ-এ (প্রচেতা ও তাপস ঘোষ) সুবিমল মিশ্রকে নিয়ে ক্রোড়পত্র। কুরোসাওয়ার সঙ্গে মার্কেজের কথোপকথন। জঁ-লুক গোদারের চিত্রনাট্য ‘টু অর থ্রি থিংস আই নো অ্যাবাউট হার’-এর সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়-কৃত ভাষান্তর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

narayan gangopadhyay book book review
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE