Advertisement
E-Paper

জিজ্ঞাসুর কাজে লাগবে

জ্ঞা নবিজ্ঞানের নানা বিষয় বাংলা ভাষায় বাঙালির কাছে পৌঁছে দেওয়ার তাগিদ অনেকটাই যেন হারিয়ে গিয়েছে। কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এখনও সক্রিয় থাকলেও, প্রয়োজনের তুলনায় জোগান খুব কম

শান্তনু চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৬ ০০:০১

জ্ঞা নবিজ্ঞানের নানা বিষয় বাংলা ভাষায় বাঙালির কাছে পৌঁছে দেওয়ার তাগিদ অনেকটাই যেন হারিয়ে গিয়েছে। কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এখনও সক্রিয় থাকলেও, প্রয়োজনের তুলনায় জোগান খুব কম।

নিছক আক্ষেপ না করে যাঁরা কাজে হাত দেন, তাঁদের একজন জগন্ময় মিত্র। প্রাণীবিদ্যা ও জেনেটিক্‌সের প্রবীণ গবেষক ও অধ্যাপক, এক সময়ে এন সি ই আর টি-তে বিজ্ঞান তথা জীববিজ্ঞান পঠন-পাঠনকে মনোগ্রাহী করার দায়িত্বেও ছিলেন। জিজ্ঞাসু ও কৌতূহলী অথচ প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণবিহীন পাঠকের জন্য বাংলায় জিন-বিজ্ঞান ও জিন-প্রযুক্তি নিয়ে একটি বই লিখেছেন। একটা ঘাটতি অনেকটা মিটল।

বংশগতিবিদ্যা ও বিবর্তন ভাবনার ইতিহাসের নিরিখে জিন-অধ্যয়ন ও তার প্রয়োগকে পাঠকের সামনে উপস্থিত করতে চেয়েছেন লেখক। রয়েছে মোপারতুই, লামার্ক, ডারউইন, মেন্ডেল, ওয়াইজমান, ডা ভ্রিস প্রভৃতির অবদানের প্রাঞ্জল আখ্যান; আছে মেন্ডেলের বংশগতির আঁক ও তার ব্যতিক্রমের মনোজ্ঞ বর্ণনা; ‘জিন চালচিত্র’ নামক পরিচ্ছেদে পাই জিন ও তার কর্মকাণ্ডের রাসায়নিক ভিত্তির বিশ্লেষণাত্মক বিবরণ। পৃষ্ঠাগুলির মনোযোগী পাঠক এই অবিশ্বাস্য জটিল রাসায়নিক ব্যবস্থাপনার একটা ধারণা করতে পারবেন। পড়তে পাবেন ডিএনএ-র কাঠামো আবিষ্কারের জমাটি বৈজ্ঞানিক গোয়েন্দা কাহিনির সারসংক্ষেপ। তবে, আজকাল প্রাণীর জৈব নিয়তি অনুধাবনের ক্ষেত্রে জিনোর্ধ্ব (এপিজেনেটিক) প্রক্রিয়া এবং ‘সংকেতবাহী নয়’ এমন জিনের ভূমিকা বিষয়গুলি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। এ বিষয়ে এই বইয়ে কিছু আলোচনা থাকলে ভাল হত।

সেই কতকাল আগে থেকেই তো মানুষ প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাছাই করা প্রাণীর মিলন ঘটিয়ে পছন্দমাফিক প্রাণীর প্রকার (ভ্যারাইটি) গড়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বিশ শতকে ডিএনএ সংকেতের মর্মোদ্ধারের ফলে প্রাণীর রদবদল ঘটানোর দারুণ ক্ষমতাশালী পদ্ধতি পাওয়া গেছে— জিন প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি প্রাণীর মধ্যে পছন্দসই বৈশিষ্ট্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তার জিন কাঠামোয় রদবদল ঘটায় এবং কাম্য বৈশিষ্ট্যের নির্ধারক জিন হামেশা আমদানি করে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিসিমের প্রাণীর দেহকোষ থেকে! নানান ক্ষেত্রে, যেমন কৃত্রিম হরমোন তৈরিতে, জিন প্রযুক্তি খুব উপকারী হয়েছে। তবে, এই প্রযুক্তির পদ্ধতি ও উপকারিতা যতটা উৎসাহের সঙ্গে আলোচিত হয়েছে, সেই তুলনায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর ব্যবহার নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন ও উদ্বেগগুলি তেমন আমল পায়নি। এক্ষেত্রে ভারসাম্য জরুরি ছিল বলে মনে হয়।

লেখক ও প্রকাশকের প্রয়াস প্রশংসনীয়। ছবি, নকশাগুলি ভাল। ছাত্রছাত্রী, আগ্রহী পাঠক লাভবান হলেন।

জিন: ইতিবৃত্ত ও প্রযুক্তি/ জিন-এর খেলা/ জিন নিয়ে খেলা, জগন্ময় মিত্র। থীমা, ৩৭৫.০০

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy