Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Editorial News

কাগুজে কানুন নয়, বাস্তবেও তা প্রয়োগ করুক প্রশাসক!

সদ্যজন্মানো শিশুও জানে, সে কানুন রয়েছে শুধু বইয়ের পাতাতেই। প্রশাসনকে এ বার যথাযথ ভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে হবে।

মৃত দুই ছাত্র। বিশ্বজিৎ ভুঁইঞা এবং সঞ্জয় বানু। ফাইল চিত্র।

মৃত দুই ছাত্র। বিশ্বজিৎ ভুঁইঞা এবং সঞ্জয় বানু। ফাইল চিত্র।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৩৫
Share: Save:

শনিবারের চিংড়িঘাটার দুর্ঘটনা এবং দুই ছাত্রের মর্মন্তুদ মৃত্যু আমাদের চোখের সামনে আরও এক বার ট্র্যাফিক-প্রশাসনের কঙ্কালসার চেহারাটাকে সামনে নিয়ে এল। বেপরোয়া বাসের লাগামছাড়া গতি এর আগেও বহু প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। প্রত্যেক বার আমরা মিডিয়ার লোকজন সে খবর প্রচার করেছি। জনতা ক্ষোভে গর্জে উঠেছে, প্রশাসন আরও এক বার নড়েচড়ে বসার ভঙ্গি দেখিয়েছে, দু’চারটে বৈঠক হয়েছে, তার পর আবার যে কে সেই। আমরা মিডিয়া অন্য দিকে নজর ঘুরিয়েছি, জনতা আবার জীবনের অন্য ছন্দে ফিরে গিয়েছে, প্রশাসন আবার তার যথাপূর্বং স্থবিরতায় ফিরে গিয়েছে, ওই বৈঠকগুলো অসম্পূর্ণ এবং প্রত্যাশিত ভাবেই অসফল থেকে গিয়েছে। তত দিন পর্যন্তই, যত দিন না আরও একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে, আরও মৃত্যু-ভাঙচুর-বিক্ষোভ-লাঠিচার্জ-ক্ষতিপূরণের চক্রটা আরও এক বার সম্পূর্ণ হচ্ছে। ভেবে দেখলে বাস সেই বেপরোয়াই থেকে গেল, ট্র্যাফিক-প্রশাসন থেকে গেল শিথিল, এবং আরও এক বার কিছু মৃত্যু ঘটল।

অথচ এর থেকে পরিত্রাণের দরকার রয়েছে, এ কথা আমরা সবাই বুঝেছি। দৌলতাবাদের বাসচালক মোবাইলে কথা বলতে বলতে বাস চালাতে পারেন অথবা রেষারেষির জেরে ট্র্যাফিক সিগন্যাল ভেঙে কলকাতায় বেপরোয়া বাস চালাতে পারেন চালক— এ সবই হতে পারে প্রশাসনিক শিথিলতার কারণে। প্রশাসন কঠোর হলে দৌলতাবাদে চালকের কানে মোবাইল থাকত না, বেঁচে যেত অনেক প্রাণ। অথবা রেষারেষির বাসে পিষ্ট হয়ে মরতে হত না অনেককেই হয়ত বা। এই মৃত্যুর দায় অতএব বর্তায় প্রশাসনের উপরেই। ট্র্যাফিক আইন কঠোর ভাবে বলবৎ করার দায়িত্ব ন্যস্ত থাকা সত্ত্বেও নিতান্ত গয়ংগচ্ছ ভঙ্গির জন্য বেঘোরে প্রাণ যাবে নিরীহ মানুষদের, এই দৃশ্যও বা কত দিন দেখব আমরা?

চিংড়িঘাটার দুর্ঘটনা আরও একটা দিকে নজর ঘোরালো আমাদের। সাইকেল বা ভ্যানরিকশা চালানোর ক্ষেত্রেও কিছু নির্দিষ্ট কানুন রয়েছে। সদ্যজন্মানো শিশুও জানে, সে কানুন রয়েছে শুধু বইয়ের পাতাতেই। প্রশাসনকে এ বার যথাযথ ভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে হবে। অন্যথায় এই ধরনের দুর্ঘটনা বার বার দেখব আমরা এবং প্রত্যেক বার দেখব এই রকম প্রতিক্রিয়ার ছবি।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

আরও পড়ুন
‘ছেলেটা বাঁচতে চেয়েছিল’

এক বার ঘুরে দাঁড়ানো দরকার। এ বার সেই সময় এসেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE