এত গভীর সঙ্কটে রয়েছেন ভারতীয় নারী! পরিস্থিতি সত্যিই শিউরে উঠতে বাধ্য করে।
নারী যে সঙ্কটে রয়েছেন এ দেশে, সে কথা দেশের সরকারও জানে। সঙ্কট কাটাতে সরকারি উদ্যোগ বা আয়োজন বিস্তর। কিন্তু সে সবের ফাঁকেই নারী কখনও ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছেন, কখনও ভূমিষ্ঠ হয়ে গলগ্রহ হয়ে উঠছেন, কখনও শৈশবেই ভোগ্যপণ্যে রূপান্তরিত হচ্ছেন।
‘বেটি বচাও, বেটি পঢ়াও’-এর মতো সরকারি কর্মসূচি রয়েছে এ দেশে। কিন্তু এ দেশেই কখনও কন্যাভ্রূণকে হত্যা করা হচ্ছে, কখনও গর্ভাবস্থাতেই বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে কন্যাসন্তানকে, কখনও ভূমিষ্ঠ হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই যৌন নিগ্রহের লক্ষ্যবস্তু করে তোলা হচ্ছে তাকে।
দেশের দুই প্রান্ত থেকে এল দু’টি খবর। তেলঙ্গানা থেকে খবর এল, গর্ভস্থ কন্যাভ্রূণকে বেচে দেওয়ার অভিনব ব্যবসা শুরু হয়েছে। কেরল থেকে খবর এল, শিশুদের যৌন নিগ্রহ করার ভিডিও রেকর্ডিং হচ্ছে, তার পর সে ভিডিও নীল ছবি হিসেবে ছড়িয়ে পড়ছে হাতে হাতে।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
‘বেটি বচাও, বেটি পঢ়াও’ স্লোগান কতটা প্রাসঙ্গিক আমাদের দেশে, বুঝতে নিশ্চয়ই অসুবিধা হয় না আর। কিন্তু প্রশ্ন জাগে সরকারের তরফে এমন স্লোগান বা এমন প্রয়াস সত্ত্বেও মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধ কমে না কেন? ‘বেটি বচাও, বেটি পঢ়াও’ কি শুধু স্লোগান হয়েই থেকে যাবে এ দেশে? এক দিকে নারীসুরক্ষা ও নারীকল্যাণের কথা ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করা হবে, অন্য দিকে জন্মের আগে থেকেই নারী অপরাধের শিকার হতে থাকবে? বৈপরীত্য এই পর্যায়ে পৌঁছেছে! ভাবলে বিস্ময় তো জাগেই। শিউরেও উঠতে হয়।
আরও পড়ুন
মাতৃগর্ভেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে কন্যাভ্রূণ!
স্বাধীনতার সত্তর বছর পরেও কন্যাসন্তানের সুরক্ষার জন্য বিশেষ নীতি বা কর্মসূচি গ্রহণ করতে হয় ভারতের সরকারকে, সে বড় কম লজ্জার বিষয় নয় ভারতের সমাজের জন্য। কিন্তু তেলঙ্গানা আর কেরল থেকে যে খবর এল, তা ম্লান করে দেয় পূর্বাপর যাবতীয় লজ্জাকে। আর মুখ লুকানোর জায়গা খুঁজে পাওয়া যায় না।
আরও পড়ুন
গ্রুপ চ্যাটে শিশুদের পর্নো ভিডিও কেরলে, ধৃত ১
শুধু সরকারি উদ্যোগে সম্ভবত বদলাবার নয় এ পরিস্থিতি। সামাজিক উদ্যোগ এবং আগ্রহটাও অত্যন্ত জরুরি। আরও অনেকটা দেরি হয়ে যাওয়ার আগে সে কথা আমরা বুঝতে পারব কি?