পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।—ছবি এএফপি।
কাম্য যদি শান্তি হয়, তা হলে এই দায়িত্বজ্ঞানহীন উল্লম্ফন বন্ধ হওয়া উচিত। জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ পাকিস্তানকে যে অত্যন্ত বিচলিত করেছে, তা ইসলামাবাদের প্রতিক্রিয়াতেই স্পষ্ট। কিন্তু এই বিচলনের জেরে এমন কোনও পরিস্থিতির জন্ম দেওয়া পাকিস্তানের উচিত হবে না, যা এই উপমহাদেশকে আরও অনেক বড় অশান্তির মুখে ফেলে দিতে পারে। তেমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি করা পাকিস্তানের পক্ষে কতটা লাভজনক হবে, সে কথা ভেবে নেওয়া দরকার ইমরান খানের।
জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাক টানাপড়েন যে স্বাধীনতা প্রাপ্তির কাল থেকেই চলছে, সে কথা দু’দেশের প্রায় কোনও নাগরিকেরই অজানা নয়। জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে ভারত এবং পাকিস্তানের দাবি যে সম্পূর্ণ পরস্পর বিরোধী, তা-ও কারও অজানা নয়। এই ইস্যু দু’দেশের রাজনীতিকেই ভীষণ ভাবে প্রভাবিতও করে। তাই দীর্ঘদিনের এক স্থিতাবস্থা ছুড়ে ফেলে ভারত সরকার লহমায় জম্মু-কাশ্মীরের উপরে নিজের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করার পদক্ষেপ করলে পাকিস্তানের নেতৃবর্গ স্নায়বিক হয়ে পড়বেন, এটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু পাকিস্তানকে নিজের সীমাবদ্ধতার কথাও মাথায় রাখতে হবে। যে আস্ফালন পাকিস্তান দেখাচ্ছে, তা ভারতকে নিজের অবস্থান থেকে বিন্দুমাত্র টলাতে পারবে কি? ভেবে দেখা উচিত ইসলামাবাদের কর্তাদের।
ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করেছে পাকিস্তান। নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নিচ্ছে তারা ভারত থেকে। ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে চলেছে তারা। দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা বন্ধ করার কথা ঘোষণা করেছে। সমঝোতা এক্সপ্রেসের যাত্রা থামিয়ে দিয়েছে। নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তাপ বাড়িয়ে তুলেছে। ভারতে আবার পুলওয়ামার মত ঘটনা ঘটবে বলে খোদ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হুমকি দিয়েছেন।
যে দ্রুততায় উত্তপ্ত হচ্ছে পরিস্থিতি, তার সঙ্গে পাকিস্তান তাল মেলাতে পারবে তো? পরিস্থিতি ইসলামাবাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে তো?
জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা কোন ধাঁচে চলবে, তা ভারতই স্থির করবে। জম্মু-কাশ্মীর সংক্রান্ত বিতর্ককে যদি দ্বিপাক্ষিক বিষয় হিসেবেই ধরতে হয়, তা হলেও বিষয়টি নয়াদিল্লি এবং শ্রীনগরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। পাকিস্তান এর মধ্যে কোথাও নেই। তাই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নয়াদিল্লির কোনও পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় এত বেলাগাম হয়ে পড়া ইসলামাবাদকে মানায় না। ভারত কিন্তু এত কিছুর পরেও সংযত আচরণই করছে। পাক উল্লম্ফন বন্ধ না হলে পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা কিন্তু থেকেই যায়।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
আরও পড়ুন: ৩৭০ অনুচ্ছেদ শুধু সন্ত্রাসবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদ, দুর্নীতি দিয়েছে জম্মু কাশ্মীরে: মোদী
আরও পড়ুন: জিহাদের ঘোলা জলকে কাজে লাগিয়েই কাশ্মীরে তার শিকড় কাটতে চাইছে টিম-ডোভাল
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy