Advertisement
০৮ অক্টোবর ২০২৪
London Diary

লন্ডন ডায়েরি: ক্ষুধার ব্রিটেনকে বাঁচাতে ফিরবে চার্চিলের বুদ্ধি?

ন্যায্য মূল্যে থাকত মাংস দেওয়া মূল পদ, দু’রকমের নিরামিষ পদ, ডিজ়ার্ট, চা। এতই জনপ্রিয় হয়েছিল যে, প্রতি হপ্তায় দশটা নতুন শাখা খুলত।

শ্রাবণী বসু
শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৪:৪২
Share: Save:

ব্রিটেনে জীবনধারণের খরচ ঊর্ধ্বমুখী, পরিবারগুলি খাবার জোগাড়েই হিমশিম। দাবি উঠছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ন্যাশনাল রেস্তরাঁ সার্ভিস ফেরানোর। চল্লিশের দশকে অর্থনীতির ক্রান্তিকালে, মানুষের পুষ্টিকর আহার নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের আগ্রহে নতুন রেস্তরাঁ চেন তৈরি হয়। উৎকৃষ্ট মানের খাবার মিলত পকেটসই দামে, আসতেন সব স্তরের মানুষ। আসল নাম ছিল কমিউনিটি ফিডিং সেন্টার, বদলে ব্রিটিশ রেস্তরাঁ রাখেন চার্চিল। অলাভজনক পদ্ধতিতে এগুলি চলত। স্বেচ্ছাসেবীরা রাঁধতেন, পরিবেশন করতেন। চকবোর্ডে প্রাত্যহিক মেনু লেখা হত। ন্যায্য মূল্যে থাকত মাংস দেওয়া মূল পদ, দু’রকমের নিরামিষ পদ, ডিজ়ার্ট, চা। এতই জনপ্রিয় হয়েছিল যে, প্রতি হপ্তায় দশটা নতুন শাখা খুলত। এমপি’দের পৃষ্ঠপোষকতাধন্য অলাভজনক সংস্থার প্রতিবেদনে চল্লিশের দশকের ব্রিটেনের সেই গণ-আহারস্থল বা ক্যান্টিন ফেরানোর দাবি উঠেছে। সেখানে ভর্তুকি হারে মরসুমি ও স্থানীয় ভাবে জোগাড় করা পুষ্টিকর খাবার মিলবে, অপচয় কমবে। চ্যারিটি বা রেস্তরাঁ-বিলাস নয়। বরং, পুরো গোষ্ঠীর রোজকার খাবার জায়গা হবে। বিশ্বের নানা শহরেই এই ব্যবস্থা আছে। সিঙ্গাপুরে স্বাধীনতার পর গোষ্ঠী ভোজনালয় তৈরি হয়েছিল। পোল্যান্ডে কমিউনিস্ট যুগে জনপ্রিয় ছিল সরকারি সহায়তায় তৈরি ‘মিল্ক বার’, আজও সুলভে খাবার মেলে সেখানে।ব্রি

ব্রিটিস রেস্তরাঁ (বাঁ দিকে), চার্চির (ডান দিকে)

ব্রিটিস রেস্তরাঁ (বাঁ দিকে), চার্চির (ডান দিকে)

জেমস বন্ড কোথায়?

ইয়ান ফ্লেমিং-এর লেখা গুপ্তচর কাহিনির ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির ফিল্ম-স্বত্ব কেনেন অ্যালবার্ট ব্রকোলি। ১৯৬২-তে এল প্রথম বন্ড-ফিল্ম ডক্টর নো। ব্রিটেনের রানির সিক্রেট সার্ভিসে অপরাধীকে হত্যার ছাড়পত্র-প্রাপ্ত এজেন্ট জ়িরো জ়িরো সেভেন অর্থাৎ জেমস বন্ডের ফিল্মের জয়যাত্রা চলছে পরের ছয় দশক। প্রথম বন্ড হন শন কনরি। বয়স বাড়ায় ফিল্ম সিরিজ়ে বন্ডের চরিত্রে এক জন অভিনেতার মেয়াদ শেষ হলেই জনমানসে শুরু হয় জল্পনা, কে হবেন পরের বন্ড। বন্ডের চরিত্র থেকে ড্যানিয়েল ক্রেগের অবসরের পরই প্রত্যাশার পারদ চড়ছে। কিন্তু প্রযোজকদের বক্তব্য: অভিনেতা, পরিচালক, চিত্রনাট্য ঠিক হয়নি। অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা। ২০১৫-র স্পেকটার-এর পর ’২১-এ এসেছিল নো টাইম টু ডাই। সেখানেই জাপানের প্রত্যন্ত দ্বীপে মিসাইল বিস্ফোরণে উড়ে যান বন্ড। ক্রেগ-অভিনীত বন্ডের মৃত্যু দেখানোর পর নতুন বন্ডের তল্লাশির কারণেই সমস্যার সূত্রপাত। পর্দায় বন্ড আবার নবরূপে জীবনলাভের আগে, শেষ দু’টি বন্ড-সিনেমার মধ্যে সময়ের তফাতই এখনও পর্যন্ত দীর্ঘতম।

ছবির থ্যাচার

দাপট: ছবির পাশে মার্গারেট থ্যাচার।

দাপট: ছবির পাশে মার্গারেট থ্যাচার।

দশ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের পড়াশোনার ঘর-আলো-করা মার্গারেট থ্যাচারের প্রতিকৃতিটি সরালেন কিয়ের স্টার্মার। লেবার দলেরই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন ওই ছবির বরাত দেন, অর্থ দেন অনামা দাতা। পড়ার ঘরের ফায়ারপ্লেসের উপর ছিল ছবিটি, ঘরটিকে লোকে বলত থ্যাচার রুম। ওই ঘরেই নাকি স্টার্মার তাঁর জীবনীলেখক টম বল্ডউইনের সঙ্গে কথা বলছিলেন। লেখক প্রশ্ন করেন, থ্যাচার স্টার্মারের দিকে যে ভাবে চেয়ে আছেন, অস্বস্তি হচ্ছে? ছবিটা কি স্টার্মার সরিয়ে দেবেন? দু’টি প্রশ্নের উত্তরেই হ্যাঁ বলেন প্রধানমন্ত্রী। ২০০৭-এ ব্রাউন ডাউনিং স্ট্রিটে চায়ের আমন্ত্রণে থ্যাচারকে জানান, ছবিটি আঁকাচ্ছেন। শিল্পী রিচার্ড স্টোনের জন্য দু’বছর ধরে পোজ় দেন থ্যাচার, সাজপোশাকও নিজেই বাছেন। বলেন, বিখ্যাত হ্যান্ডব্যাগটিও থাকবে। এ ঘরে রাত পর্যন্ত কাজ করতেন থ্যাচার। ফকল্যান্ডের যুদ্ধ জিতে শান্তি পেয়ে প্রিয় হুইস্কির গেলাস হাতে নীরবে কাঁদেন এখানেই। আলঙ্কারিক সোনালি ফ্রেমের বিশাল প্রতিকৃতিটি কোথায় সরল, জানা যায়নি। নতুন বাড়ি খুঁজতে হবে ছবির থ্যাচারকে।

হ্যারির প্রত্যাবর্তন?

২০২০-তে সপরিবার আমেরিকা চলে যান প্রিন্স হ্যারি। এখন নাকি মাঝেসাঝে ফিরে বাবার সঙ্গে সম্পর্কের মেরামতি চান। পুরনো সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, চুপচাপ রাজ-দায়িত্বগুলি ফের শুরু করে, চিকিৎসাধীন বাবার পাশে থাকা যায় কি না, ভাবছেন। রাজপরিবার রাজি হলে নীরবে, সংবাদমাধ্যমের নজর এড়িয়ে, ছোটখাটো অনুষ্ঠানে হাজিরার মাধ্যমে ফিরবেন। হয়তো, বহু দিন শুধুই ফিতে কাটবেন। কিন্তু, উইলিয়ামের রাজি হওয়া মুশকিল। গত হপ্তায়, ডায়ানার ভগিনীপতির শেষকৃত্যে দুই রাজকুমারই গিয়েছিলেন। আলাদা বসেছিলেন, বাক্যালাপ হয়নি।

অন্য বিষয়গুলি:

Winston Churchill british World War II
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE