শুভবুদ্ধির অনুসারী হওয়ার প্রয়োজনীয়তাকে কোনও পরিস্থিতিতেই অস্বীকার করা সম্ভব নয়। তাই হৃদয় রক্তাক্ত এবং ক্ষতবিক্ষত হওয়া সত্ত্বেও আজ স্বস্তি অনুভূত হচ্ছে। কারণ স্বজনবিয়োগে বিধ্বস্ত হয়েও শহিদ জওয়ানের স্ত্রী যে সংবেদনশীলতায় অবিচল ছিলেন, শেষ পর্যন্ত তারই জয়সূচিত হওয়ার ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে।
ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমান পাকিস্তানের হেফাজত থেকে মুক্তি পাচ্ছেন— তার চেয়ে সুখের খবর এই মুহূর্তে আর কী হতে পারে? ভারতীয় বায়ুসেনার ওই পাইলটকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে এবং নিঃশর্তে মুক্তি দিতে হবে, কোনও দর কষাকষি চলবে না— দ্ব্যর্থহীন বার্তা ছিল ভারতের। পরিস্থিতির চাপেই হোক বা সদিচ্ছার উদ্রেকে, পাকিস্তান মেনে নিল ভারতের দাবি। নিজের দেশের আইনসভায় দাঁড়িয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ঘোষণা করলেন সে কথা।
অভিনন্দন বর্তমানকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে পাক ঘোষণার খবর ভারতে পৌঁছতেই উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে। আসমুদ্র হিমাচল করছিল প্রার্থনা, শুরু করেছে উৎসব এ বার। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, শান্তির বার্তা দিতেই অভিনন্দনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত। ভারতেও কিন্তু ক্ষোভের আঁচ লহমায় প্রশমনের পথে। পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর থেকে যে ক্ষোভে-আক্রোশে-অসন্তোষে ফুঁসছিল গোটা দেশ। অভিনন্দনের মুক্তির ঘোষণা আচমকা পরিস্থিতিতে বদল এনেছে। যুদ্ধই একমাত্র প্রত্যুত্তর পাকিস্তানের জন্য, যুদ্ধই একমাত্র সমাধান এই মুহুর্তে— যাঁরা এ ভাবে ভাবছিলেন, তাঁরাও স্থিতধী হতে শুরু করেছেন। প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রয়োজনীয়তাটা পাকিস্তান এত দিনে বুঝতে পেরেছে এবং যুদ্ধ ছাড়াই তা বোঝানো গিয়েছে বলে ভারতবাসী এ বার সম্ভবত বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন। সত্যের সবচেয়ে বড় সাফল্য এখানেই।