Advertisement
E-Paper

দিল্লি ডায়েরি

বিজয়া দশমীর দিন নাগপুরে আরএসএস দফতরের অনুষ্ঠানটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনুষ্ঠানে এক দিকে স্থানীয় মুসলমান চিকিৎসক ও বিদ্বজ্জনেরা যেমন আমন্ত্রিত ছিলেন, তেমনই হিন্দু গুরু হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মধ্যপ্রদেশের জনপ্রিয় নির্মলবাবাকে।

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৭ ০০:২২

এক ঢিলে মারা গেল বেশ কয়েকটা পাখি

অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন কা গুস্‌সা কিউ আতা হ্যায়? দিল্লির সংবাদমাধ্যমে এই ছিল রোজকার আলোচনা। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ডাকছে, তিনিও যেতে প্রস্তুত ছিলেন। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে রিজার্ভ ব্যাংকের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ ছিলেন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ। নর্থ ব্লকে রাজস্ব সচিব, গুজরাতি আমলা হাসমুখ আঢিয়ার দাপটে ক্লান্তও ছিলেন। কবে থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বলছিলেন, আর্থিক উপদেষ্টামণ্ডলীকে ফের বাঁচিয়ে তোলা হোক। তাও শুনছিলেন না প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ আমলা মহল, নৃপেন্দ্র মিশ্র থেকে পি কে মিশ্র।। অরবিন্দের গোঁসা থামাতে ময়দানে নামলেন অরুণ জেটলি। পানাগড়িয়া চলে যাওয়ার পর, বা তার আগে রঘুরাম রাজনের বিদায় ও সাম্প্রতিক সমালোচনার পর অরবিন্দের প্রস্থান প্রধানমন্ত্রীও মানতে চাননি। অরুণ তাই আর্থিক পরিষদ গঠন করে সেখানে নিয়ে এলেন নীতি আয়োগের সচিব বিবেক দেবরায়কে, প্রাক্তন অর্থসচিব রতন ওয়াটলকেও সদস্য সচিব করলেন। অরবিন্দকে এক্সটেনশন দিয়ে বার্তা দেওয়া হল— নৃপেন-পি কে-হাসমুখ নয়, এ বার মুখ্য ভূমিকায় বিবেক-রতন-অরবিন্দ! এক ঢিলে বেশ কয়েকটা পাখি মারলেন মোদী।

মানভঞ্জন: মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন ও অরুণ জেটলি

পড়েছেন তো?

গৌরী লঙ্কেশের হত্যাকাণ্ডের পর দেশ জুড়ে মোদী-বিরোধী বার্তা, সোশ্যাল মিডিয়াও তৎপর। সাংবাদিকদের মিছিল দিল্লি থেকে কলকাতার রাজপথে। হঠাৎই রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে বিজেপি। আর এমনই পরিস্থিতিতে সঞ্জীব গোয়েন্‌কার ‘ওপেন’ পত্রিকার প্রচ্ছদনিবন্ধ— মোদীকে ঘৃণার লক্ষ্য করছে কারা ও কেন? সাংবাদিকদের একাংশ কেন অ্যাক্টিভিস্ট? আপাতত শাহি দিল্লির গুঞ্জন, এ হেন তৈলাক্ত বিরল সমর্থনে প্রধানমন্ত্রী যারপরনাই আহ্লাদিত। পাটকেলের বদলে ইট? তবে দিদি প্রচ্ছদনিবন্ধটি পড়েছেন তো?

পিকে দর্শন

দিল্লিতে হেলি রোডে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অতিথিশালা ‘বঙ্গভবন’-এর কাছেই সরু গলির মধ্যে ‘অগ্রসেন কি বাওলি’। পাথরের কাঠামোয় ঘেরা বাওলির নীচে কুয়োর মধ্যে ধাপে ধাপে নেমে গেছে সিঁড়ি। কথিত, অগ্রবাল সম্প্রদায়ের পূর্বপুরুষ রাজা অগ্রসেন এটি তৈরি করান। বঙ্গভবনে আসা বাঙালিরা অ্যাদ্দিন বাওলির ছায়া মাড়াতেন না। এখানকার অনেক কর্মীর বিশ্বাস, বাওলির জলে ভূত আছে। তবে আমির খানের ‘পিকে’ সিনেমার পর দেখা যাচ্ছে অন্য ছবি। পিকে-র শুটিং হয়েছিল এখানে। পিকে-রূপী আমির খানের রাতের আস্তানা ছিল এই বাওলি। বঙ্গভবনে এসে বাঙালি এখন অগ্রসেনের বাওলি দেখতে ছুটছে। যদি পিকে-দর্শন ঘটে!

হাসপাতালে বাবা

বিজয়া দশমীর দিন নাগপুরে আরএসএস দফতরের অনুষ্ঠানটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনুষ্ঠানে এক দিকে স্থানীয় মুসলমান চিকিৎসক ও বিদ্বজ্জনেরা যেমন আমন্ত্রিত ছিলেন, তেমনই হিন্দু গুরু হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মধ্যপ্রদেশের জনপ্রিয় নির্মলবাবাকে। রাম রহিম থেকে আসারাম বাপু, গুরুদের নিয়ে এখন দেশের নানা প্রান্তে নানা বিতর্ক। নির্মলবাবা অবশ্য এখনও পর্যন্ত নির্মলই আছেন, কিন্তু ভাগ্যদেবীর বাধা— নাগপুরে আসার পথে তিনি বিমানবন্দরেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যায়। তাই শেষমেশ নাগপুরের বিজয়া দশমীর উৎসবে নয়, গেলেন হাসপাতালে। মুখ্য অতিথির উপস্থিতি ছাড়াই অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে হল মোহন ভাগবতকে।

ডিগ্গিরাজার পরে কে

মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ কি এ বার সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নিচ্ছেন? রাহুল গাঁধীর একদা ঘনিষ্ঠ দিগ্বিজয়— যিনি ‘ডিগ্গিরাজা’ বলেই ঘনিষ্ঠ মহলে বেশি পরিচিত— এখন রাহুল-বৃত্তের বাইরে। এ বার তিনি সমগ্র নর্মদা পরিক্রমার এক দীর্ঘ কর্মসূচি গ্রহণ করে রাহুলের কাছ থেকে এক মাসেরও বেশি সময়ের ছুটি চেয়ে নিয়েছেন। এই কর্মসূচি কংগ্রেসের দলীয় নয়, তাঁর ব্যক্তিগত। দিল্লির মসনদে গুঞ্জন, ডিগ্গিরাজা এ বার হয়তো আর ভোটে লড়বেন না। তার বদলে কি তাঁর বর্তমান স্ত্রী অমৃতা সিংহকে (আগে ছিলেন অমৃতা রাই) প্রার্থী করবেন দিগ্বিজয়? সাংবাদিক অমৃতাকে জড়িয়ে এক সময় শুরু হয়েছিল হাজার বিবাদ, আগের স্ত্রী আশা-র মৃত্যুর পর তাঁকে বিয়ে করে সব বিতর্কের অবসান ঘটিয়েছেন তিনি। এ বার কি তবে তাঁর ছেলে নয়, স্ত্রী অমৃতাই প্রার্থী? অমৃতা আজকাল বিবৃতি দেওয়াও শুরু করেছেন, তাতেই জল্পনা আরও বেড়েছে।

জুটিতে: অমৃতা সিংহ ও দিগ্বিজয় সিংহ

অমিতাভের ধাঁধা

অস্বস্তিতে পড়ে গেছেন অমিতাভ বচ্চন। তিনি নরেন্দ্র মোদীর বিশেষ ঘনিষ্ঠ, গুজরাত সরকারের অ্যাম্বাসাডর, এখন স্বচ্ছতা অভিযানেরও নায়ক। তাঁর ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রতি নতুন করে শুরু হয়েছে। এই কুইজ-অনুষ্ঠানে একটি ধাঁধা থাকে, যেখানে কারও কণ্ঠস্বর শুনিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এটা কার গলা? সে দিন এক পর্বে শোনা গেল গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদীর কণ্ঠস্বর। কিন্তু কথোপকথনটি ছিল বিতর্কিত ‘স্নুপগেট’ নিয়ে। এমন একটা অনুষ্ঠানের কুইজে এ হেন প্রশ্ন? এর মধ্যে কি কোনও ষড়যন্ত্র আছে? প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়, গোয়েন্দারাও ক্ষুব্ধ।

জয়ন্ত ঘোষাল, প্রেমাংশু চৌধুরী

Delhi Diaries
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy