ভাবিত: বরুণ গাঁধী
এ বার বরুণ গাঁধীও বিজেপি ছাড়ার কথা ভাবছেন? দিল্লির গুঞ্জন, বরুণ নাকি ঘন ঘন দিদি প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে দেখা করছেন। জেঠিমা সনিয়ার সঙ্গেও ওঁর ভাল সম্পর্ক। বরুণের বিয়েতে সনিয়া, রাহুল, প্রিয়ঙ্কা— সবাই এসেছিলেন। বরুণের বাঙালি বউ যামিনীর প্রথম সন্তানের মৃত্যুর শোকে ও পরে আর এক সন্তান হওয়ার আনন্দঘন ঘটনাতেও সনিয়া-প্রিয়ঙ্কা এসেছিলেন। শোনা যাচ্ছে, মোদী অমিত শাহ-র কার্যকলাপে বরুণ ক্ষুব্ধ। দলের কাছ থেকে তাঁর প্রাপ্তির আশাও খুবই কম। তবে বরুণকে নিজেদের দলে নেওয়ার ব্যাপারে কংগ্রেসের বহু প্রবীণ নেতার মত, বরুণ কংগ্রেসের সম্পদ নন, বোঝা হবেন। বরুণের মা মেনকাও পুত্রের জেঠিমা-ভক্তিতে নাকি খুব প্রীত নন। সনিয়ার সঙ্গে মনোমালিন্যের স্মৃতি কি আজও ভোলেননি সঞ্জয়-জায়া?
অরাজনৈতিক
রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন, কিন্তু সম্প্রতি বেশ ক’টি ক্ষেত্রে দলের অভিমত থেকে সরে নিজস্ব মতামত টুইট করেছেন। টিপু সুলতানের প্রশংসা করেছেন। যে দিন বিজেপি শিবির খিচুড়িকে জাতীয় খাদ্য বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারে ব্যস্ত ছিল, তখন টুইট করে বিরিয়ানিকেও সুস্বাদু ভারতীয় খাদ্য বলে ঘোষণা করেন। খিচুড়ি আর বিরিয়ানির সংঘাত এড়াতেই নাকি তাঁর এ কৌশল। সম্প্রতি কলকাতায় এসে প্রশংসা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। রাষ্ট্রপতির সম্মানে রাজ্য সরকারের আয়োজিত বেনজির সংবর্ধনাও সাদরে গ্রহণ করেছেন। দিল্লিতে গুঞ্জন, রাষ্ট্রপতিও কি এখন নিজের অরাজনৈতিক ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠায় মরিয়া? না কি তিনি যা করছেন তা প্রধানমন্ত্রীরই প্রচ্ছন্ন সমর্থনে!
টেবিলকে আলবিদা
দিল্লিতে কোন আমলার কতটা গুরুত্ব তা নাকি নির্ধারিত হয় তাঁর দফতরে টেবিলের সাইজ দিয়ে। উপসচিব থেকে যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব, মুখ্য সচিব— টেবিলের সাইজ ছোট থেকে বড় হতে থাকে। সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ডেরেক ও’ব্রায়েন পরিবহণ, পর্যটনের মতো মন্ত্রকের সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন, মুকুল রায়কে সরিয়ে দেওয়ার পর। নতুন সংসদ ভবনের পাঁচতলায় চিদম্বরম, আনন্দ শর্মার পাশেই তাঁর ঘর। ঘরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক বিশাল ছবি। ডেরেক পুরনো বিরাট টেবিল সরিয়ে নিজের বসার জায়গা করেছেন এক কোণে ছোট ডেস্কের সামনে ছোট্ট চেয়ার রেখে। বৈঠকের জন্য আছে সোফা। ল্যাপটপে কাজের অভ্যেস আধুনিকমনা ডেরেকের। তাই সংসদের এত দিনের সামন্ততান্ত্রিক পরম্পরা বদলে, বিশাল টেবিলকে আলবিদা জানিয়েছেন তিনি।
এই জমানায় নতুন
বফর্স কেলেঙ্কারির সময় অভিযোগ ছিল, ভারতীয় অস্ত্র-দালাল উইন চাড্ডা বড় অঙ্কের ঘুষ পেয়েছিলেন। যার অংশ নাকি রাজনীতিকদের কাছেও যায়। বাজপেয়ী-আডবাণী যুগে আওয়াজ ওঠে, এই ভারতীয় দালালদের ভূমিকা বন্ধ করো। কিন্তু সেই প্রথা উঠে যায়নি। মনমোহন-জমানায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি নাকি প্রতিরক্ষার কেনাবেচা নিয়ে এত উদ্বেগে ছিলেন, কার্যত সব কাজ বন্ধ হতে বসে। কিন্তু দালালরা থেকেই যায়। নরেন্দ্র মোদী এসে প্রতিরক্ষায় ভারতীয় দালাল প্রথা তুলে দিয়েছেন বদলে চালু করেছেন যৌথ উদ্যোগ। বেছে নেওয়া হয়েছে নানা বেসরকারি সংস্থাকে। জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন, তাই সরকারের মনোনয়নই এখানে চূড়ান্ত। বিদেশি সংস্থা অস্ত্র ও প্রযুক্তি দেশে পাঠাবে। শতকরা ৯০ ভাগ বিদেশি বিনিয়োগ, শতকরা ১০ ভাগ হতে পারে ভারতীয় অংশীদার। কার্যত ‘সোয়েট ইক্যুইটি’ ভোগ করবে ভারতীয় সংস্থা। অসাধারণ কৌশল। এখন তাঁরা অংশীদার।
বাদ পড়লেন ‘রাজীব’
মধ্যপদলোপী: যশ গাঁধী
সাউথ ব্লকে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে যশ গাঁধী বেশ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়ে উঠেছেন। যশ প্রধামন্ত্রীর সোশ্যাল মিডিয়া ও ব্র্যান্ড বিষয়ক কাজকর্ম দেখাশোনা করেন। ২০১৪ সালের আগে থেকেই এই কাজ করতেন তিনি। নরেন্দ্র মোদী দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও করছেন সরকারি ভাবে। যশ হলেন গুজরাতের ছেলে, তাঁর বাবা সেই রাজ্যে এক বড় ব্যবসায়ী। যশের জীবনযাত্রা অবশ্য খুবই সাধারণ। কথা হল, যশের পুরো নাম যশ রাজীব গাঁধী। গুজরাতিরা নিজেদের নামের মধ্যে বাবার নামও ব্যবহার করে থাকেন। যশের বাবার নাম রাজীব গাঁধী, যা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সমনামী। সাউথ ব্লকে যোগ দেওয়ার পর যশের নেমপ্লেটে লেখা ছিল, যশ রাজীব গাঁধী। সেই নেমপ্লেট নিয়ে প্রবল সংশয় তৈরি হওয়ায়, শেষ পর্যন্ত ‘রাজীব’ শব্দটি তুলে নতুন নেমপ্লেট তৈরি করে বসালেন যশ।
নব নব রূপে
অরবিন্দ কেজরীবালের ঝড় স্তিমিত, দিল্লিতে অসন্তোষ তীব্র হচ্ছে। ওঁর শরীরও ভাল যাচ্ছে না। রটনা, কেজরীবাল নাকি মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে রাজ্যসভার সদস্য হয়ে যাবেন, কুর্সিতে বসিয়ে দেবেন মণীশ সিসৌদিয়াকে। সে ক্ষেত্রে ২০১৯-এর আগে মোদী-বিরোধী মঞ্চ গঠন ও জোট-রাজনীতিতে তাঁর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
জয়ন্ত ঘোষাল
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy