প্রধানমন্ত্রীকে ছাড় কেন? কেন ছাড় মোদী সরকারের মন্ত্রীদের? প্রশ্ন উঠেছে সাংসদদের নতুন হাজিরা ব্যবস্থা নিয়ে। সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন। এত দিন সাংসদরা অধিবেশনে এলে রেজিস্টারে সই করে উপস্থিতি নথিবদ্ধ করতেন। এ বার লোকসভায় সাংসদদের আসনেই রাখা মাল্টিমিডিয়া যন্ত্রে তাঁদের বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে উপস্থিতি ডিজিটালি নথিভুক্ত হবে। কংগ্রেসের প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেন এর থেকে ছাড় পাবেন? আঠারো থেকে আটাশ দিনের অধিবেশনে তিনি মাত্র তিন থেকে চার দিন হাজির হন। বিজেপির প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রীকে কি রোজ লোকসভায় গিয়ে ‘প্রেজ়েন্ট প্লিজ়’ বলতে হবে?।
উপস্থিত:লোকসভায় জবাবি ভাষণরত প্রধানমন্ত্রী, তাঁর হাজিরার হার ঘিরেই উঠছে প্রশ্ন।
দলবদলের দাবাড়ু
বিরোধী শিবিরের এক তরুণ সুদর্শন উচ্চশিক্ষিত রাজ্যসভা সাংসদকে নিয়ে জোর চর্চা দিল্লিতে। কিছু দিন আগেও তিনি তাঁর দলের হয়ে একটি রাজ্যের দায়িত্বে ছিলেন। উত্তর ভারতের সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে গদিতে বসিয়ে কার্যত তিনিই রাজ্য চালাতেন বলে অভিযোগ ছিল। কিন্তু দলের বিপদে তাঁকে দেশেই পাওয়া যায়নি। তাই তিনি কোণঠাসা। শোনা যাচ্ছে, ওই তরুণ বিজেপি ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত একটি শিল্প সংস্থার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসাবে কাজ শুরু করতে চাইছেন। ওই তরুণ সাংসদ নিজের দলের বা দলে তাঁর নিজের ভবিষ্যৎ দেখছেন না। তাঁর আশা, আপাতত শাসক ঘনিষ্ঠ কর্পোরেট সংস্থার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হয়ে কাজ করলে আগামী দিনে বিজেপির দরজা খুলবে। বিজেপি তাঁকে রাজ্যসভায় ফের সাংসদ করে পাঠাতে পারে! অঙ্ক কি মিলবে?
দিলীপ, মন্দির ও বিতর্ক
সম্প্রতি দলের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে দেখা করতে তিন দিনের সফরে দিল্লি এসেছিলেন দিলীপ ঘোষ। সস্ত্রীক দেখা করেন তাঁদের সঙ্গে। কলকাতা ফেরার আগে চিত্তরঞ্জন পার্কের কালী মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন। মন্দিরের অত্যুৎসাহী বিজেপি ঘেঁষা কর্মকর্তারা দিলীপদের একেবারে মন্দিরের গর্ভগৃহে নিয়ে চলে যান। তাতেই চটেছেন মন্দিরের অন্য বেশ কিছু কর্মকর্তা। মায়ের মন্দিরে সবাই সমান। তা হলে কেন ভিআইপি সম্মান দিয়ে দিলীপকে গর্ভগৃহে নিয়ে যাওয়া হল, প্রশ্ন তুলেছেন। সব মিলিয়ে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না দিলীপ ঘোষের।
বাজছে ফোনের ঘণ্টা
রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরে দায়িত্ব বেড়েছে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের, দিল্লি এলেও অনবরত বাজছে মোবাইলের ঘণ্টি। দলীয় কর্মীদের অভাব-অভিযোগ ছাড়াও পারিবারিক সমস্যাতেও শমীকের দ্বারস্থ অনেক বিজেপি মহিলা কর্মী। একটি ফোনে নিউ ব্যারাকপুর থেকে এক মহিলা জানান, শাশুড়ি অত্যাচার করেন। শমীককে বিহিত করতে হবে। শারীরিক অত্যাচার হলে পুলিশের দ্বারস্থ হতে পরামর্শ দেন শমীক। কিন্তু মহিলা জানান, তা নয়, শাশুড়ি তাঁর দিকে এমন রাগী চোখে তাকান যে, তিনি ওই দৃষ্টি দেখে মানসিক ভাবে অত্যাচারিত হচ্ছেন! কার্যত হতভম্ব শমীক শাশুড়ির চোখের দিকে না-তাকানোর নিদান দিয়ে সে যাত্রায় ফোন কাটেন। উৎপাত এড়াতে ফোন ধরার লোক রাখবেন কি না, ভাবছেন বিজেপি সভাপতি।
কাশ্মীরকে ছন্দে ফেরাতে
পহেলগাম কাণ্ডের পর স্তব্ধ হওয়া কাশ্মীরকে ছন্দে ফেরাতে সচেষ্ট সরকার, যাতে অন্তত বাইরে থেকে স্বাভাবিক দেখায়। এই প্রয়াসের অঙ্গ হিসাবে কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান দু’দিনের সংসদীয় পরামর্শদাতার কমিটি বৈঠকের সভাপতিত্ব করলেন শ্রীনগরে। ছিলেন বিভিন্ন দলের সাংসদ ও সরকারি কর্তারা। বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল ২ মে। পরিস্থিতির কারণে পিছিয়ে গেলেও কাশ্মীর থেকে সরেনি সরকার। আলোচ্যসূচিতে ছিল প্রাকৃতিক ফলন, জাতীয় তৈলবীজ মিশন।
আলোচনা: শ্রীনগরের বৈঠকে নেতারা।
খবর মিলবে আন্তর্জালে
প্রতিটি রাজ্য সরকারেরই দিল্লিতে রেসিডেন্ট কমিশনারের অফিস থাকে। তার কাজ মূলত দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় রাখা, রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করা এবং দিল্লিতে রাজ্যের সংস্কৃতি, পর্যটন, হস্তশিল্পের প্রচার। দিল্লিতে পশ্চিমবঙ্গের রেসিডেন্ট কমিশনারের দফতর নেট দুনিয়ায় পা রাখল। দিল্লিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কবে বাংলা সিনেমা নিয়ে চলচ্চিত্র উৎসব করবে, কবে নাটক হবে, কবে আম মেলা— সমাজমাধ্যমে তাদের পেজেই জানা যাবে।
প্রেমাংশু চৌধুরী,অনমিত্র সেনগুপ্ত, অগ্নি রায়
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)