জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় বরাবরই বামেদের ঘাঁটি ও আঁতুড়ঘর। বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দিল্লির সেই জেএনইউ থেকেই উঠে এসেছেন লালুপ্রসাদ-তেজস্বী যাদবের আরজেডি-র তরুণ নেত্রী কাঞ্চনা যাদব ও প্রিয়ঙ্কা ভারতী। বিহারের সাধারণ পরিবারের দুই ভূমিকন্যা জেএনইউ থেকেই আরজেডি-র ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। নানা দাবিদাওয়া নিয়ে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করেছেন। ছাত্র সংসদের নির্বাচনেও লড়েছিলেন। এখন তাঁরা আরজেডি-র জাতীয় মুখপাত্র হিসাবে টিভিতে ঝড় তুলেছেন। বিজেপির বাঘা মুখপাত্ররা তাঁদের সামলাতে জেরবার। প্রয়োজনে সনিয়া গান্ধী থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ইন্ডিয়া জোটের অন্য শরিক দলের নেতানেত্রীদের হয়েও লড়ে যান। দিল্লিতে দুই ‘তিরন্দাজ’ গড়ে তোলার পিছনে দ্রোণাচার্য দলের রাজ্যসভা সাংসদ অধ্যাপক মনোজ ঝা। যিনি নিজেও সংসদে ধারালো বাক্যবাণে মোদী সরকারকে বিদ্ধ করতে দক্ষ। কাঞ্চনা, প্রিয়ঙ্কা রাজনৈতিক বিতর্কে তাঁদের সাফল্যের অনেকখানি কৃতিত্ব বিজেপি বা এনডিএ-র মুখপাত্রদেরও দিতে চান। কারণ তাঁরা প্রস্তুতি নিয়েই আসেন না। উল্টো দিকে, ডক্টরেট করে ফেলা বিজ্ঞানের ছাত্রী কাঞ্চনা বা জার্মান স্টাডিজ়-এ পিএইচ ডি-রত প্রিয়ঙ্কা রীতিমতো গবেষণা করে বিতর্কের ময়দানে নামেন। দিল্লিতে এই প্রথম দলের দুই মুখকে তেজস্বী যাদব কতখানি গুরুত্ব দিচ্ছেন, তার প্রমাণ, ভোটার অধিকার যাত্রার মধ্যেও কাঞ্চনা ও প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন, অনলাইনে বৈঠক করেছেন। নেতৃত্বের এমন উৎসাহেই কাঞ্চনা বেঙ্গালুরুতে চাকরি পেয়েও তা ছেড়ে দিয়ে দিল্লিতেই থেকে গিয়েছেন।
মেধাবী: আরজেডি-র সম্পদ হয়ে উঠেছেন কাঞ্চনা যাদব।
মেধাবী: আরজেডি-র সম্পদ হয়ে উঠেছেন প্রিয়ঙ্কা ভারতী।
লেখাপড়া করে যে
ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার-এ সিআইএসএফ-এর ডিআইজি শিবকুমার মোহঙ্কার লেখা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করলেন অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী রামমোহন নায়ডু। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বিজেপি নেতা শাহনওয়াজ় হুসেন একটু তিক্ততার সৃষ্টি করলেন। বললেন, মঞ্চে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ নিশ্চয়ই পড়েছেন, কিন্তু তিনি বইটি উল্টেও দেখেননি! যত বারই লেখক পড়তে অনুরোধ করেছেন, শাহনওয়াজ়ের জবাব, লেখাপড়ায় এত মন থাকলে তিনি রাজনীতিকে পেশা হিসাবে ভাবতেন না! পরিস্থিতি হালকা করতে নায়ডু মোহঙ্কাকে বলেন, বইয়ের অডিয়ো সংস্করণ আনতে। তা হলে হয়তো শাহনওয়াজ়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে! ঘটনা হল, বইটি বিমান পরিষেবার হাজারো খুঁটিনাটি নিয়ে লেখা, কারণ মোহঙ্কা নিজে হায়দরাবাদের চিফ এয়রোড্রোম সিকিয়োরিটি অফিসার। আর শাহনওয়াজ় বাজপেয়ী জমানার বিমান পরিবহণ মন্ত্রী!
দক্ষিণী সুঘ্রাণ
দীর্ঘ দিন পর উপরাষ্ট্রপতির দফতর এবং বাসভবনে দক্ষিণ ভারতীয় ঘ্রাণ! পদে বসার পর সংসদের অ্যানেক্স ভবনে প্রবল বর্ষার বিকেলে প্রথম বার সি পি রাধাকৃষ্ণন বসলেন রাজ্যসভার নেতাদের সঙ্গে। পদাধিকারে তিনি রাজ্যসভার চেয়ারম্যানও বটে। উষ্ণতার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে, জানিয়েছেন সাংসদরা। হাই টি-তে সগৌরবে হাজির উষ্ণ সম্বর ও দোসা। উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু-র সময় এমনটা ঘটত, বলছেন ভোজনরসিক নেতারা। দক্ষিণ ভারতীয় খানা উবে যায় জগদীপ ধনখড়ের সময়। রাজস্থানি ডাল-বাটি-চুরমা আর উত্তর ভারতীয় সামোসারই ছিল গরম বাজার। পরিস্থিতি বদলেছে। দিল্লিতে রাধাকৃষ্ণনের হেঁশেলের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মূলত কোয়ম্বত্তূরের রাঁধুনিরা, এমনটাই খবর।
ভোটের মেহেন্দি
বিহারে আগামী মাসের শুরুতেই বিধানসভা ভোট। ভোটের হার বাড়াতে, নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করতে অভিনব উপায়ে প্রচারে নেমেছে নির্বাচন কমিশন। দেওয়ালি ও ছটকে মাথায় রেখে বিহারের গোপালগঞ্জ জেলায় মহিলাদের হাতে যে মেহেন্দি পরানো হচ্ছে তাতে কমিশন বার্তা দেওয়ার কৌশল নিয়েছে। লেখা হচ্ছে— ‘চলো ভোট দিতে যাই’। বা, ‘আমি প্রস্তুত ভোট দিতে’। একই হাতে উৎসবের রং ও ভোটের বার্তা। কমিশন বলছে, এখন ভোটের দিনে ওই হাতে বোতাম টেপার অপেক্ষা।
অভিনব: বিহারে মেহেন্দিতে ভোটবার্তা।
ভাঙা-গড়া
সেন্ট্রাল ভিস্টা পরবর্তী পর্যায়ে নতুন সেন্ট্রাল সেক্রেটারিয়েট ভবনে ঢোকার রাস্তা প্রস্তুত করতে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে নির্মাণ ভবন। আগে চলবে ভবন খালি করার যজ্ঞ। সব মন্ত্রক, কর্মীদের সরাতে হবে অন্যত্র। শোনা যাচ্ছে, অন্য মন্ত্রকের ভার বওয়ার জন্য সরকারি অফিসগুলি এখনও তৈরিই হয়নি। মজার ব্যাপার, ধ্বংস ও নির্মাণ যাদের হাতে সেই সেন্ট্রাল পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট-ই আস্তানা গড়ে বসে আছে নির্মাণ ভবনে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)