Advertisement
E-Paper

দগদগে ক্ষতস্থানে আবার আঘাত, রক্তক্ষরণ কি থামবে না?

কেন এই দুঃসহ যন্ত্রণা বারবার? কেন পর পর এমন অঘটন? চোখের সামনে একের পর এক ঝরছে তরতাজা প্রাণ। কোথাও খামতি নেই, দুর্বলতা নেই, অপূর্ণতা নেই, তবু আচমকা নিভে যাচ্ছে জীবন। অপার সম্ভাবনা অপেক্ষায় ছিল সামনে। কিন্তু সব যেন খরচ হয়ে গেল বেপরোয়া অপচয়ের ঢঙে।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৬ ০২:১৮
—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

কেন এই দুঃসহ যন্ত্রণা বারবার? কেন পর পর এমন অঘটন? চোখের সামনে একের পর এক ঝরছে তরতাজা প্রাণ। কোথাও খামতি নেই, দুর্বলতা নেই, অপূর্ণতা নেই, তবু আচমকা নিভে যাচ্ছে জীবন। অপার সম্ভাবনা অপেক্ষায় ছিল সামনে। কিন্তু সব যেন খরচ হয়ে গেল বেপরোয়া অপচয়ের ঢঙে।

আবেশ দাশগুপ্ত এখনও স্মৃতিতে দগদগে। জন্মদিনের উদ‌্‌যাপনে যে ভাবে ঘনিয়ে এসেছি্ল মৃত্যু, তা সহজে ভোলা সম্ভব নয়। তা নিয়ে এত আলোড়ন, এত তর্ক, এত তুফান! তবু আবার সেই মারণ মত্ততার মুখে পড়ল যৌবন। মন্দারমণি সৈকতে বাঁধনছাড়া, বেলাগাম উন্মত্ততা কেড়ে নিল তিনটে তরতাজা প্রাণ। বৈভব শাণ্ডিল্য, শিবরাজ নস্কর, সুরজ দাশগুপ্ত— তিনটে জীবন বিলীন হয়ে গেল সব সম্ভাবনার মুখে ছাই ঢেলে দিয়ে।

আজকের যৌবন কি এতই উন্মত্ত? বাঁধন হারানোর তাড়না কি এতই তীব্র যে জীবন-মরণের মাঝের দরজাটাও আজ হাট-খোলা? এত বুঁদ, এত চুর যে মৃত্যু কখন ভারী পদক্ষেপে খুব কাছে এসে দাঁড়িয়ে থাকছে, টেরই পাওয়া যাচ্ছে না?

জীবন সম্পৃক্ত হোক, সবারই হোক। তেমনটাই কাম্য। কিন্তু সম্পৃক্তির নেশাকেও অতিক্রম করে গিয়ে বেলাগাম ঝাঁপটা যখন অতিপৃক্তির দিকে, তখনই সে ঝাঁপ তুলনীয় হয়ে ওঠে আগুন দেখে পতঙ্গের অসীম উল্লাসের সঙ্গে।

আবেশকে নিয়ে লেখার পর মনে হয়েছিল, এ রকম আর হয়তো লিখতে হবে না। মনে হয়েছিল, এবার বোধ হয় সবাই খানিক সতর্ক হব, একটু সামলে চলব। কিন্তু দেখলাম, কেউ আমরা সতর্ক হইনি। যে তিনটি প্রাণ নির্নিমেষে ঝরে পড়ল অযাচিত সময়ে, তাঁদের পরিজনরা বলছেন, জানতেনই না যে ছেলেরা বাড়ি থেকে অত দূরে চলে গিয়েছে।

প্রশ্ন করতেই হচ্ছে, কেন জানতেন না? যৌবনের উন্মেষ কিয়ৎ অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে হয়তো। নিয়ন্ত্রণের লাটাইটা ধরে রাখার দায়ভারটুকু আশপাশের মানুষগুলোকেই নিতে হয়। লাটাই থেকে কেমন অপরিমাণ সুতো ছাড়া হয়েছিল যে ঘুড়িটা কত দূর চলে গিয়েছে, সে বোঝাই যায়নি?

প্রশ্ন আরও একটা করতে ইচ্ছা করছে। স্বচ্ছন্দ, সৌখিন এবং সমারোহের জীবনে অপ্রাপ্তি কোথায় ছিল যে এমন মারণ আকাঙ্খার দিকে ছুটতে হল? নাকি অপ্রাপ্তি একেবারেই ছিল না বলে প্রাপ্তির সমস্ত সীমাকে নিমেষে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ইচ্ছে হল?

যাঁদের উদ্দেশে এই প্রশ্ন, উত্তর দেওয়ার জন্য তাঁরা আজ আর নেই।

এই প্রশ্ন যেন আর করতে না হয়। কারণ, এই প্রশ্ন তখনই কাউকে করতে হয়, যখন তিনি উত্তর দেওয়ার অবস্থায় আর থাকেন না।

mandermoni accident news letter anjan bandopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy