এ দিকে আমেরিকা যে রাশিয়ার কাছ থেকে পারমাণবিক শিল্পের জন্য ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লুয়োরাইড, প্যালাডিয়াম, সার ও রাসায়নিক কেনে, তার বেলায় কী? শুল্ক বাড়ানোর ভয় দেখিয়ে ভারতের দিকে ‘ইট’টি ছুড়েছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। উল্টে আমেরিকার রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম এবং সার আমদানির এই প্রসঙ্গ তুলে ট্রাম্প-কে ‘পাটকেল’টি ফেরত দিল দিল্লি। এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে, থতমত প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলেই দাবি করেন। রাশিয়ার থেকে তেল আমদানির কারণে ভারতের উপরে এমনিতেই অসন্তুষ্ট ট্রাম্প। তাঁর অভিযোগ, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করে পরে সেটি খোলা বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে দিল্লি। ভারতের উপরে শুল্কের পরিমাণ দ্বিগুণ করে দিয়েছেন তিনি— জানিয়েছেন, কিছু দিনের মধ্যেই আমেরিকায় ভারতীয় পণ্যের উপরে চাপবে ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক। ভারত-আমেরিকা কূটনৈতিক সম্পর্ক আপাতত তলানিতে এসে ঠেকেছে। তবে, ভারতের পাল্টা চাপ দেওয়া দেখে মনে হচ্ছে, নয়া দিল্লিও সহজে জমি ছাড়বে না।
প্রশ্নবিদ্ধ: আমেরিকায় একটি সাংবাদিক সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প।
খনিজ-যুদ্ধ
এ যেন ‘অপণা মাংসেঁ হরিণা বৈরী’। দেশের মাটিতে বিপুল খনিজ সম্পদের ভান্ডারই কাল হয়েছে ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো-র (ডিআরসি)। কোবাল্ট ও কোল্টান খনির দখল ঘিরে সংঘর্ষ ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব উঠেছে চরমে। অনেক দিন ধরেই দেশের সরকার ও সেনার সঙ্গে ‘যুদ্ধ’ চলছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী-জোট ‘অ্যালায়েন্স ফ্লুভে কঙ্গো’-র (এএফসি), এই জোটের সশস্ত্র দল ‘এম২৩’ খনিজসমৃদ্ধ নানা অঞ্চল ও শহরের দখল নিচ্ছে একে একে। কঙ্গোর কোবাল্ট ও কোল্টান যায় সারা বিশ্বে, স্মার্টফোন-সহ নানা ইলেকট্রনিক্স-পণ্যের অপরিহার্য উপাদান তারা। সোনার ডিম-পাড়া হাঁসের দিকে তাই নজর ঘরে-বাইরে নানা পক্ষের। অথচ কঙ্গো এখনও বিশ্বের পাঁচ দরিদ্রতম দেশের একটি। এ দিকে এই ‘খনিজ যুদ্ধ’-এ মাত্র দু’সপ্তাহের মধ্যে প্রাণ গিয়েছে অন্তত তিন হাজার মানুষের। সম্পদ বড় বালাই, প্রাকৃতিক হলেও।
আড়চোখে দেখে
ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন চিনা ছাত্রছাত্রীতে ভর্তি। সম্প্রতি এক সংস্থার সমীক্ষার ফলাফলে অভিযোগ উঠল যে, চিনের সরকার নাকি ব্রিটেনে চিনা ছাত্রদের ব্যবহার করছে পরস্পরের উপরে নজরদারি করার কাজে। স্বভাবতই চিন ‘তীব্র অস্বীকার’ করেছে এমন ‘ভিত্তিহীন অভিযোগ’। তবে, কারও সন্দেহ হতেই পারে যে, খবরটা বেশ জেনেশুনেই ‘ফাঁস’ করা হয়েছে। যদি ‘সকলেই আড়চোখে সকলকে দেখে’, তা হলে রাষ্ট্রের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সঙ্ঘবদ্ধ হওয়ার আর উপায় থাকে না।
ইউটিউবকে বহিষ্কার
অনূর্ধ্ব-১৬ কিশোর-কিশোরীদের জন্য ইউটিউবকেও নিষিদ্ধ করল অস্ট্রেলিয়া। দেশটির সমাজমাধ্যম-সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞার কোপে আগেই পড়েছিল ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স, স্ন্যাপচ্যাট, টিকটক। ডিসেম্বর থেকে দেশে এই প্ল্যাটফর্মগুলি শিশুদের প্রবেশাধিকার দেবে না, নয়তো বিপুল জরিমানা। সুরক্ষা-সমীক্ষা মতে, দেশের ৩৭% শিশুই সাইটটিতে বিপজ্জনক বিষয়বস্তু দেখছে। উদার দুনিয়ায় এই প্রথম কোনও দেশে কিশোর-কিশোরীদের ইউটিউব দেখার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি হতে চলেছে। সমাজমাধ্যম সংস্থাগুলি বিপুল বিজ্ঞাপন আরম্ভ করেছে— তাদের ভান্ডারে ছোটদের জন্য কত অমূল্য রত্নরাজি রয়েছে, ফলাও করে সে কথা জানান দিচ্ছে। তবে কিনা, প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ছোটরা চিরকালই বড়দের হেসেখেলে দশ গোল দেয়। সরকার বারণ করেছে বলেই কি ইউটিউব দেখা বন্ধ করবে তারা? না কি, খুঁজে নেবে চোরাপথ? এবং, সেই পথ বেয়ে ঢুকে পড়বে বিপজ্জনকতর জিনিসপত্র? নিষেধাজ্ঞার চেয়ে বড় অনুপ্রেরণা বিরল, মনে রাখা ভাল।
সমস্যা: বিজ্ঞাপনে ইউটিউব ও শৈশব।
শিকার খুঁজছে
ডেনমার্কের আলবর্গ চিড়িয়াখানা বাসিন্দাদের সুস্থ রাখতে প্রাকৃতিক খাদ্যশৃঙ্খলের অনুরূপ অবস্থা চায়। তাই বাড়িতে অপ্রয়োজনীয় পোষ্য যেমন মুরগি, খরগোশ, গিনিপিগ, ছোট ঘোড়া ইত্যাদি থাকলে তাদের দিতে আবেদন করেছে। পোষ্যগুলিকে এশিয়াটিক সিংহ, সুমাত্রান বাঘ, ইউরোপিয়ান বনবিড়ালদের সামনে রাখা হবে। বন্দিদশাতেও শিকার করে খাওয়ার প্রাকৃতিক স্বাদ পাবে পশুরা, এমনই পরিকল্পনা। প্রশ্ন হল, এত দিন বিনা আয়াসে খাবার পেতে অভ্যস্ত পশুগুলি শিকার করার ঝামেলায় যেতে চাইবে কি?
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)