‘প্রোজেক্ট সানক্যাচার’-এর মাধ্যমে গুগল মহাকাশে কৃত্রিম মেধার ডেটা সেন্টার বা তথ্যকেন্দ্র তৈরি করবে। টেকনো-দুনিয়ার বড় সংস্থাগুলিও বলছে, এ বার গ্রহের বাইরে বেরিয়েই কাজকারবার করতে হবে। অ্যামাজ়ন প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজ়োস তো বলেইছেন, এ ছাড়া উপায়ও নেই। জীবনের সব ক্ষেত্রে মানুষ অভাবনীয় উন্নতি করেছে, শুধু অবনতি পরিবেশের। সমুদ্র, সবুজ, বাস্তুতন্ত্র— সব সভ্যতার চাপে ধুঁকছে, তাই গ্রহকে বাঁচাতে হবে। এ গ্রহ ব্যবহৃত হবে শুধু থাকার, শ্বাস নেওয়ার জন্য। বিষাক্ত হলকা ওগরাচ্ছে যে সব ভারী শিল্প, কলকারখানা, তথ্যকেন্দ্র, সব তুলে নিয়ে যেতে হবে পৃথিবীর বাইরে। প্রথম ধাপে সেগুলিকে চাঁদে কিংবা মহাকাশ কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হোক, তার পর আরও এগোনো যাবে। পৃথিবীর পিণ্ডি বুধো কিংবা ভাড়াটিয়া চন্দ্রবাবুর ঘাড়ে চাপানোর ফন্দি ভালই, কিন্তু এতে অন্তরিক্ষের ভারসাম্য বিগড়ে গেলে তো আরও বিপদ। তবে, যুদ্ধবাজ দেশগুলোর মাথায় এই বেলা দূরদূরান্তের ছায়াপথে গিয়ে লাঠালাঠি করার পরামর্শ ঢুকিয়ে দেওয়া যায়।
প্রতিষ্ঠাতা: ‘ইটালিয়ান টেক-উইক ২০২৫’ সম্মেলনে জেফ বেজ়োস।
চায় না
চিনঠাকুরের আপন দেশে আইনকানুন সর্বনেশে। কড়া ইন্টারনেট আইনের কারণে অ্যাপল-এর অ্যাপ-স্টোর সেখানে আলাদা। সেই অ্যাপ-স্টোর থেকে কর্তৃপক্ষের আদেশে ‘ব্লুড’ ও ‘ফিংকা’ বাদ গেল। সমকামীদের জনপ্রিয়তম ডেটিং অ্যাপ। এলজিবিটিকিউ+ সংগঠন উদ্বিগ্ন। আগেও আমেরিকার অনুরূপ অ্যাপ বহিষ্কৃত, ‘দুষ্ট বিষয়’ অভিযোগে। চিনে সমকাম বহু দিনই অপরাধ নয়, তবে সমলিঙ্গ বিবাহের স্বীকৃতি মেলেনি। বরং আন্তর্জালকে ‘স্বাস্থ্যকর’ রাখতে নীতি প্রচুর। রাষ্ট্রীয় গোঁড়ামির ক্ষেত্রে চিনের হলায়-গলায় ভাই-বেরাদর এক রাষ্ট্রকে আমরাও চিনি।
বাধা পেরিয়ে
তেহরানের রাস্তায় এখন বাইক চালাচ্ছেন বহু মেয়েই। এর জন্য তাঁদের এখনও ভ্রুকুটি, গালিগালাজ বা কখনসখনও পুলিশি হয়রানির শিকার হতে হলেও, মোটের উপরে সমাজ তাঁদের এই দু’চাকার চক্কর মেনে নিয়েছে। অতীতে নারীদের মোটরবাইক বা স্কুটার চালানো থেকে বিরত রেখেছিল দু’টি জিনিস। ইরানের ফারসি ভাষায় লেখা পুলিশ-বিধিতে বিশেষ ভাবে কেবল পুরুষদের মোটরবাইক লাইসেন্স পাওয়ার কথাই রয়েছে। তা ছাড়া এর সাংস্কৃতিক দিকটিও দেখার। মেয়েরা এখন চাকরি, রাজনৈতিক পদ ও গাড়ির লাইসেন্স পেলেও, ১৯৭৯-র ইসলামিক বিপ্লবের পর থেকে দেশটিতে নারীদের আচরণ সম্পর্কে কঠোর ভাবে রক্ষণশীল, শিয়া ইসলামের ধারণা আরোপিত হয়। সম্প্রতি দেশে হিজাব-বিধি কঠোর করা হলেও, মেয়েদের বাইক চালানোর ‘স্বাধীনতা’ সমাজ-পরিবর্তনেরই লক্ষণ বলতে হবে।
ছেলেখেলার ফল
গত কয়েক মাসে বেশ কিছু ক্যাফে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছে আমেরিকায়। এমনকি, মহাপ্রতাপশালী স্টারবাকস-ও জানিয়েছে, তারা খরচ কমানোর পথ খুঁজছে— তার অন্যতম হল ছাঁটাই। কফিতে অরুচি হয়নি দেশবাসীর, ঝামেলাটি পাকিয়েছেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট। আমেরিকায় যে-হেতু কফি চাষ হয় না, ফলে সব কফিই আমদানি করতে হয় ব্রাজ়িল, কলম্বিয়া বা ভিয়েতনামের মতো দেশ থেকে। আমেরিকাকে ফের মহান বানানোর চক্করে সে সব দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের উপরে বেশ চড়া শুল্ক বসেছে। দাম বেড়েছে কফির, ফলে চাহিদায় ঘাটতি। কফিতে যাতে কর বসানো না হয়, সে জন্য আইন তৈরির উদ্যোগ করেছেন দুই ডেমোক্র্যাট সেনেটর। অর্থনীতি নিয়ে ছেলেখেলার ফল সাধারণত ভাল হয় না, আবারও প্রমাণ হল।
মহার্ঘ: করের ধাক্কায় টান কফিতে।
হিংসা অব্যাহত
সম্প্রতি অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের উত্তরে প্যালেস্টাইনিদের একটি গুদাম, বেদুইন গ্রাম ও কৃষিজমি লক্ষ করে এক দল ইজ়রায়েলি বসতি-স্থাপনকারী অগ্নিসংযোগ শুরু করে। তাতে আহত হয়েছেন বহু প্যালেস্টাইনি। এ ধরনের হামলা আসলে ভয় দেখানো ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টিরই অংশ, মত অনেকের। বর্তমানে ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক ও ইস্ট জেরুসালেমে প্রায় সাত লক্ষ ইহুদির বাস। ১৯৬৭-র ‘মিডল ইস্ট ওয়র’-এর সময়ে ইজ়রায়েল এই অঞ্চলটি দখল করে। ইজ়রায়েলি বসতি-স্থাপনকারীদের পাশে বাস করেন প্রায় ৩৩ লক্ষ প্যালেস্টাইনি। ২০২৩-এর অক্টোবরে গাজ়ায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক জুড়ে হিংসা ক্রমবর্ধমান।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)