ইঞ্জিনিয়ারের গায়ে কাদা ঢালছেন নীতেশ রাণের (ডান দিকে) সমর্থকেরা। ছবি: পিটিআই।
ঠগ বাছতে কি গাঁ উজার হয়ে যাবে এবার? কোন পক্ষই কি অনুসরণীয় কোনও দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে না? শুধু লজ্জার মুখোমুখিই কি দাঁড় করাবে সবাই বারবার? আকাশ বিজয়বর্গীয়র ব্যাটের ঘা এখনও সামলাতে পারিনি আমরা। উপর্যূপরি এসে পড়ল নীতেশ রাণের কাদা জল। ঘুরে দাঁড়াব কী ভাবে, কোন পথে, কাকে অবলম্বণ করে বুঝে ওঠা যাচ্ছে না।
মধ্যপ্রদেশে বিজেপি বিধায়ক আকাশ বিজয়বর্গীয় পুরকর্তাকে ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে তীব্র নিন্দার মুখে পড়েছেন। শুধু বিরোধী দলগুলো নয়, আকাশের নিজের দল বিজেপিও ওই ঘটনার নিন্দা করতে বাধ্য হয়েছে। খোদ প্রধানমন্ত্রীকে মুখ খুলতে হয়েছে দলীয় বৈঠকে, বহিষ্কারের হুঁশিয়ারি দিতে হয়েছে। ওই হুঁশিয়ারি কি শুধু আকাশ বিজয়বর্গীয়ের প্রতি ছিল? না, নরেন্দ্র মোদীর ওই বার্তা ছিল তাঁর দলের প্রত্যেক নেতা-কর্মীর উদ্দেশে। কিন্তু সে বার্তা থেকে শুধু বিজেপি-কেই শিক্ষা নিতে হবে, অন্য কোনও রাজনৈতিক দল শিক্ষা নিতে পারবে না, এমন নয়। আবার আকাশ বিজয়বর্গীয় যে একটি মারাত্মক কুকীর্তি ঘটিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে কঠোর বার্তা আসার আগে পর্যন্ত তা বোঝা যাচ্ছিল না, এমনও নয়। দেশজোড়া নিন্দাই বুঝিয়ে দিয়েছিল, ইনদওর শহরের বিজেপি বিধায়ক অত্যন্ত গর্হিত কাণ্ড করেছেন। তার পরেও মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস বিধায়ক নীতেশ রাণে পুরকর্তার গায়ে বাতলি করে কাদা জল ঢাললেন কোন বুদ্ধিতে, তা ভেবেই বিস্মিত হতে হচ্ছে!
মধ্যপ্রদেশের ঘটনার অভিঘাত কেটে যাওয়ার অনেক পরে যদি এইরকম ঘটনা দেশের অন্য কোনও প্রান্তে কেউ ঘটাতেন, তাহলেও মুখরক্ষার কোনও অজুহাত খুঁজে বার করার চেষ্টা করা যেতে পারত। বিচ্ছিন্ন বা বিক্ষিপ্ত ঘটনা, আকাশ বা নীতেশের কীর্তি কোনও সাধারণ প্রবণতা নয়— এইরকম বলা যেতে পারত। কিন্তু সে উপায়ও রইল না। রাজনীতিকদের নির্লজ্জ গুন্ডামি দেখে নাগরিকদের বিস্ময়, দেশজোড়া নিন্দা, তীক্ষ্ণ সমালোচনা— কোনও কিছুতেই এই সব রাজনীতিকদের কিছু যায় আসে না বলেই এখন মনে হচ্ছে।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
মধ্যপ্রদেশের আকাশ বা মহারাষ্ট্রের নীতেশ রাণে, দু’জনেই আইন প্রণেতা। তাঁরাই আইন নিজেদের হাতে তুলে নিলেন, এবং আইন ভাঙার মারাত্মক ও লজ্জাজনক দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন। দু’জনেই আবার তরুণ নেতা। রাজনীতির ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কি তাহলে এই প্রবণতারই অনুসারী হবে? ভাবলেই তো সন্ত্রস্ত্র হয়ে পড়তে হচ্ছে! রাজনীতিতে এমন কোনও পক্ষকেই প্রায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, যারা এই দোষে দুষ্ট নয়। এই শ্রেণির রাজনীতিকদের জন্য দ্ব্যর্থহীন নিন্দা তো রইলই। গোটা দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতিও সতর্ক বার্তা রইল— স্বেচ্ছাচারিতায় রাশ টানতে না পারলে নাগরিকদের বিশ্বাস উঠে যাবে।
আরও পড়ুন: ইঞ্জিনিয়ারকে কাদা বিধায়ক-সঙ্গীদের
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy