Advertisement
E-Paper

এতটা অপ্রস্তুত আমরা!

বালিগঞ্জ গার্ডেন রোডের বাসিন্দা অনিন্বিতা মুখার্জির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কানাড়া ব্যাঙ্কের গোলপার্ক শাখায়। রবিবার তাঁর মোবাইলে একটি মেসেজ আসে। দেখা যায়, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ২০ হাজার টাকা কোনও এটিএম থেকে তোলা হয়েছে।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৮ ০০:৩৩
বিশেষজ্ঞরা বলছেন ডেবিট কার্ডের ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে জালিয়াতি হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন ডেবিট কার্ডের ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে জালিয়াতি হয়েছে।

বড় বিপর্যয় আসার আগে তার নানা উপসর্গ অনুভূত হতে শুরু করে। কলকাতা তারই ছায়া দেখল। বেনজির ব্যাঙ্ক জালিয়াতির কবলে পড়লেন দক্ষিণ কলকাতার বেশ কিছু বাসিন্দা। এটিএম থেকে গায়েব হয়ে গেল হাজার হাজার টাকা। গড়িয়াহাট এবং রবীন্দ্র সরোবর থানায় ৩৫টিরও বেশি অভিযোগ জমা পড়ল।

এই রকম সঙ্কট আগে কখনও দেখা যায়নি কলকাতায়। যাঁদের টাকা গায়েব হয়েছে, তাঁদের কারও এটিএম কার্ডই খোওয়া যায়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন ডেবিট কার্ডের ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে জালিয়াতি হয়েছে। মুম্বইতে আগে এ রকম ঘটনা ঘটেছে। দিল্লির বেশ কিছু ব্যাঙ্ক গ্রাহকও এই রকম জালিয়াতির শিকার হয়েছেন। কিন্তু কলকাতায় ব্যাঙ্ক জালিয়াতদের এত বড় হানাদারি এই প্রথম। পুলিশ-প্রশাসন তত্পরতার সঙ্গে ময়দানে নেমেছে। জালিয়াতি কী ভাবে হল, নেপথ্যে কারা রয়েছে, দ্রুত খুঁজে বার করার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ জনতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও যে আর সুরক্ষিত নেই, তা বুঝতে কারওরই অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

পৃথিবী ডিজিটাল হয়ে উঠছে। তাল মিলিয়ে ভারতকেও ডিজিটাল করে তোলার প্রয়াস চলছে। আর্থিক লেনদেনও যত বেশি করে সম্ভব ডিজিটাল মাধ্যমেই হোক, চাইছে সরকার। কিন্তু আমাদের ডিজিটাল দক্ষতা যত বাড়ছে, ডিজিটাল প্রতারণা বা সাইবার জালিয়াতির নিত্যনতুন কলাকৌশলের উদ্ভাবনও তত বেশি করে হচ্ছে। দক্ষিণ কলকাতার একটি ছোট এলাকায় একই দিনে এটিএম ব্যবহার করে এত জন গ্রাহকের টাকা গায়েব করে দেওয়ার ঘটনা তারই দৃষ্টান্ত।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

ডিজিটাল মাধ্যমের উপরে ভরসা রাখার জন্য প্রশাসন যতটা উত্সাহ নাগরিকদের দিচ্ছে, সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশাসন আদৌ কি ততটা তত্পর? সাইবার জালিয়াতি বা সাইবার হানাদারি কত রকম ভাবে হতে পারে, সে বিষয়ে আমাদের প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট ওয়াকিবহাল তো? ঘোর সংশয় রয়েছে। ট্রাই কর্তার সঙ্গে সম্প্রতি যে ঘটনা ঘটেছে, তাতেই বোঝা যায়, আমাদের দেশে সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত অধিকাংশ আশ্বাসই ফাঁকা আওয়াজ। নিজের আধার নম্বর সর্বসমক্ষে প্রকাশ করে দিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন ট্রাই কর্তা। কোনও হ্যাকারের ক্ষমতা থাকলে ওই আধার নম্বরকে কাজে লাগিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে দেখাক— চ্যালেঞ্জ ছিল ট্রাই কর্তার। এক হ্যাকার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলেন, ট্রাই কর্তার আধার নম্বরকে কাজে লাগিয়ে তাঁর নানা ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিলেন। ট্রাই কর্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকাও ফেললেন। অতএব, অবধারিত ভাবে প্রশ্ন উঠে গেল আধারে সমন্বিত তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে।

আরও পড়ুন: কলকাতার বহু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে দু’দিনে লক্ষ লক্ষ টাকা গায়েব!

আর কিন্তু অবহেলা করার সময় নেই। সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি এ বার আরও গুরুত্ব দিয়ে বিচার করা দরকার। এখনও পর্যন্ত বিপর্যয় কোনও অভাবনীয় আকার নেয়নি। তবে সাইবার জালিয়াতি প্রতিরোধ করতে আমরা এখনও কতটা অপ্রস্তুত, তার প্রমাণ মিলে গিয়েছে। এই মুহূর্ত থেকে যদি পদক্ষেপ করা শুরু না হয়, তা হলে ভবিষ্যতে অভাবনীয় বিপর্যয় আমাদের অপেক্ষায় থাকবে।

আরও পড়ুন: জেনে রাখুন এটিএমে কী ভাবে ফাঁদ পাতছে দুর্বৃত্তরা

Newsletter Anjan Bandyopadhyay Bank Fraud ATM অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যাঙ্ক প্রতারণা ATM Fraud
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy