Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Editorial News

এত আড়ম্বর, তা-ও ভিজতে না ভিজতেই ভেসে গেল কলকাতা

বর্ষার উপর দায় চাপানো খুব কঠিন হচ্ছে। শহরের বেশ কিছু অংশে শুক্রবার ভারী বর্ষণ হয়েছে ঠিকই। তবে সর্বত্র নয়। তায়ে আবার ঝেঁপে বৃষ্টির সবে প্রথম দিন। এতেই ত্রাহি ত্রাহি রব উঠলে তো বর্ষার আবাহনই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

বানভাসি কলকাতার সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ। —নিজস্ব চিত্র।

বানভাসি কলকাতার সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ। —নিজস্ব চিত্র।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৭ ০৫:০৭
Share: Save:

আফসোস করছিল বাংলা, আফসোস করছিল মহানগর। আষাঢ়ের তিন-তিনটে সপ্তাহ যে কেটে গেল, সে যেন বোঝাই যাচ্ছিল না। কখনও ছিটেফোঁটা, কখনও ঝিরঝিরে, কখনও ঝমঝমিয়ে নামছিল বৃষ্টি, কিন্তু স্থায়িত্ব ছিল বড় কম। কলকাতা ভিজছিল বটে, কিন্তু আষাঢ়ের বেশির ভাগটাই কাটিয়ে আসার পর যেমন জবজবে ভেজা একটা অনুভূতি থাকে, তা একেবারেই ছিল না। পুবের বাংলায় ঝেঁপে বৃষ্টি নেমেছে। পশ্চিমের মরুরাজ্যেও বরুণদেবের অশেষ কৃপা এ বার। তবু পশ্চিমবঙ্গ কেন অঝোর ধারা থেকে বঞ্চিত? আক্ষেপের শেষ ছিল না বাঙালির। অবশেষে আষাঢ়ের উপান্তে পৌঁছে ঋতু বাংলার প্রতি সদয় হল। কিন্তু মহানগরে ফের আক্ষেপ। ভারী বর্ষণের প্রথম দিনেই স্রোত বইল মহানগরের পথে পথে। বেশ খানিকটা থমকেই গেল গাড়ি-ঘোড়ার গতি। জল-জনিত ট্র্যাফিক জ্যামে নাকাল হল প্রায় গোটা কলকাতা।

দায় কার? বর্ষার? নাকি মহানগর ব্যবস্থাপনার?

বর্ষার উপর দায় চাপানো খুব কঠিন হচ্ছে। শহরের বেশ কিছু অংশে শুক্রবার ভারী বর্ষণ হয়েছে ঠিকই। তবে সর্বত্র নয়। তায়ে আবার ঝেঁপে বৃষ্টির সবে প্রথম দিন। এতেই ত্রাহি ত্রাহি রব উঠলে তো বর্ষার আবাহনই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

মহানগর ব্যবস্থাপনায়, বিশেষত নিকাশিতে, অবহেলা যে বিস্তর হয়েছে, তা বেশ বোঝা গেল। শহরের নিকাশি ব্যবস্থায় আমূল বদল এসে গিয়েছে, বর্ষার শহরের বানভাসি ছবি আর ফিরে আসার নয়— এ সব বেশ দর্প নিয়েই বলেন পৌরসংস্থার দণ্ডমুণ্ডের কর্তারা। দর্পিত উচ্চারণগুলো কি তা হলে অনেকটাই অন্তঃসারশূন্য? একটু জোরে বৃষ্টি নামতেই কিন্তু এই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

কলকাতার উন্নয়ন, সৌন্দর্যায়ন এবং নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্যের প্রতি বর্তমান রাজ্য সরকারের কিন্তু বিশেষ নজর রয়েছে। মহানগরের কোনও প্রয়োজনীয়তা তহবিলের অভাবে পূরণ হয় না বা হবে না, এমনটা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর সচরাচর হতে দেন না। তা সত্ত্বেও নিকাশির এমন নাকানি-চোবানি দশা কেন, বোঝা শক্ত হয়ে দাঁড়ায়।

মন ভরানো বৃষ্টির প্রথম দিনেই যদি এই অবস্থা হয় শহরের, তা হলে শেষ আষাঢ় আর গোটা শ্রাবণ স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত নিয়ে হাজির হলে কী হবে? শ্যামবাজার ডুবুডুবু, বেহালা ভেসে যায় দশা দেখতে হবে? প্রশ্নগুলো ভাসতে শুরু করে দিয়েছে। মহানগরের ব্যবস্থাপকরা এখনই হয়তো এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন না। তবে মৌখিক উত্তর না পেলেও ক্ষতি নেই। কাজে জবাব পেলেই বরং বেশি সন্তুষ্ট হবে মহানগর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE