কৃষ্ণচন্দ্র দে সম্পর্কে প্রতিবেদনটি (‘অন্তর্দৃষ্টি দিয়েই তিনি সুরসাধনা করেছিলেন’, পত্রিকা, ৪-৫) পড়ে ভাল লাগল। কিছু যোগ করতে চাই।
মঞ্চের গান আর রেকর্ডের গান আলাদা আলাদা শৈলীতে গাইতেন কৃষ্ণচন্দ্র। এও শিল্পী হিসেবে তাঁর বাস্তববোধ এবং অন্তর্দৃষ্টির পরিচয়।
সুধীর চক্রবর্তী লিখেছেন, কৃষ্ণচন্দ্র দে ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাটকে ‘ঘন তমসাবৃত অম্বর ধরণী’ গাইতেন ‘টিপিকাল নাটুকে’ ভঙ্গিতে, ‘একেবারে মঞ্চ কাঁপিয়ে’।
আবার রবীন্দ্রনাথের ‘আঁধার রাতে একলা পাগল’ গানটি রেকর্ডে গেয়েছিলেন অন্য ভাবে, আত্মনিবেদনের আর্তি মিশিয়ে (নির্বাচিত প্রবন্ধ, সুধীর চক্রবর্তী )।
১৯৫৭ সালে ‘একতারা’ ছায়াছবিতে অতিথি শিল্পী হিসাবে জীবনে শেষ বারের মতো পর্দায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
কৃষ্ণচন্দ্র সম্পর্কে একটি স্মৃতিচারণায় পরিচালক অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, প্রবীণ বয়সে এক বার একটি গান রেকর্ড করানো হয় তাঁকে দিয়ে। গানটি কর্তৃপক্ষের পছন্দ না হওয়ায়, আবার সেটি হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে দিয়ে নতুন করে গাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হেমন্ত জানতেন না, গানটি আগে কৃষ্ণচন্দ্র গেয়েছেন। কিন্তু রেকর্ডিংয়ের আগে কোনও ভাবে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন এবং আগের রেকর্ডিংটি শুনতে চান। কৃষ্ণচন্দ্রের গাওয়া গানটি তাঁকে শোনানো হলে, তিনি কিছু ক্ষণ নিবিষ্ট মনে বসে থাকেন এবং শেষে বলেন, যে গান আগে কৃষ্ণচন্দ্রবাবু গেয়েছেন, সে গান তিনি কিছুতেই গাইতে পারবেন না।
পৃথা কুণ্ডু
কলকাতা-৩৫
কী কী চাই
ব্রডগেজে রূপান্তরিত বর্ধমান-কাটোয়া রেলে এ পর্যন্ত মাত্র ছ’জোড়া ট্রেন চালু হয়েছে। কিন্তু বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। কাটোয়া থেকে সকাল ৮:৪৫-এর পরে দীর্ঘ সোয়া সাত ঘণ্টা বাদে বিকেল ৪টেয় ট্রেন, বর্ধমান থেকেও সকাল ৯:৩০-এর পর বেলা ২টোয়, তার পরে আবার সন্ধ্যা ৬:৩০-এ ট্রেন রয়েছে। টিকিট বিক্রির হিসেবেই রেল দেখতে পাচ্ছে, যাত্রী ব্যাপক হারে বাড়ছে। তাই অবিলম্বে আরও অন্তত তিন জোড়া ট্রেন চালু হওয়া দরকার। ইতিমধ্যে এক জোড়া চালু হওয়া হাওড়া-কাটোয়া যাতায়াতকারী ট্রেনকে সময়সারণিতে যোগ করে সকাল ও বিকেলে আরও এক জোড়া করে হাওড়া-কাটোয়া ট্রেন চলাচল দরকার।
বর্ধমান স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের সঙ্গে আরও কাউন্টার ও যাত্রীদের মাথার উপরে ছাউনি চাই।
কৈচর হল্টে যাত্রীর ব্যাপকতার দরুন একে স্টেশনে রূপান্তরিত করা উচিত। তা ছাড়া, রিটার্ন টিকিটের ব্যবস্থা, স্টেশন চত্বর নিয়মিত পরিষ্কার, স্টেশনে ওঠার অসমাপ্ত রাস্তার সমাপ্তিকরণ, দক্ষিণ দিকে (যাত্রীদের ভিড় মূলত এ দিকেই) ওঠানামার সিঁড়ি দরকার। প্ল্যাটফর্ম খুব এবড়োখেবড়ো হয়ে গিয়েছে, বহু জায়গা ঘাসে ঢেকে গিয়েছে।
অমল চন্দ্র চৌধুরী
ক্ষীরগ্রাম, পূর্ব বর্ধমান
ওভারব্রিজ
সোনারপুর রেল জংশনের ওভারব্রিজটি অর্ধেক অংশে ব্যবহারযোগ্য, বাকি অর্ধেকটা (রেলের তরফ থেকেই) অব্যবহারযোগ্য হিসেবে বহু দিন ধরে পড়ে রয়েছে। ফলে, যাত্রীরা চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ধরতে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেল লাইন পার হতে বাধ্য।
অরুণ মালাকার
কলকাতা-১০৩
পার্ক সার্কাস
দক্ষিণ শিয়ালদহ লাইনের প্রথম স্টেশনটি হল পার্ক সার্কাস। স্টেশনটি মনে হয় ভারতবর্ষের মানচিত্রের বাইরে অবস্থিত।
কারণ: ১) বিগত ২৫ বছর ধরে যাতায়াতের ফলে দেখেছি কোনও পরিবর্তন হয়নি। কোনও পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। অন্য কোনও জলেরও নয়।
২) টয়লেটের ব্যবস্থা যা আছে তা ব্যবহারের অযোগ্য। পুরুষ যাত্রীরা রেল লাইন ধরে দাঁড়িয়ে পড়েন। মহিলাদের অবস্থা বুঝতেই পারছেন।
৩) প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেনের মধ্যেকার দূরত্ব তিন ফুট সাড়ে তিন ইঞ্চি, আমাদের মতো চার ফুট দশ ইঞ্চি মহিলাদের হামাগুড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে হয়। বৃদ্ধবৃদ্ধাদের কী করুণ অবস্থা!
৪) সকাল ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত আপ-ডাউন মিলিয়ে বহু ট্রেন এই স্টেশনে থামে না। যার ফলে বহু মানুষ যাঁরা শিফটিং ডিউটি করেন (সরকারি ও বেসরকারি) তাঁদের পক্ষে বাড়িতে ফেরত আসা ও ডিউটিতে যাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
৫) স্টেশন থেকে যাতায়াত করার জন্য কোনও নির্দিষ্ট রাস্তা নেই। সবাইকেই তাই রেল লাইন ধরে যাতায়াত করতে হয়। ফলে যা ‘বিপদ’ ঘটার ঘটে যায়। এর জন্য রেল কোম্পানি দায়ী থাকে না।
৬) আপ-ডাউন ট্রেনের কোনও অ্যানাউন্সমেন্ট হয় না।
৭) টিকিট কাউন্টারটি স্টেশনের একেবারে শেষ প্রান্তে অবস্থিত। দ্বিতীয় কাউন্টার খোলার প্রয়োজন।
৮) স্টেশনে একটি মাত্র ছোট শেডের ব্যবস্থা আছে। রোদ-জল-ঝড় থেকে মাথা বাঁচানোর জন্য দ্বিতীয় শেড নেই। একটিমাত্র শেডের নীচে বসা তো দূরঅস্ত্, দাঁড়ানোই কষ্টকর। সব জায়গাই হকারদের দখলে।
রুমা দাস
সোনারপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
আজব ব্যবস্থা
পারিবারিক প্রয়োজনে আমাকে ও স্ত্রীকে বরাহনগর রোড স্টেশন থেকে বসিরহাট (হাসনাবাদ স্টেশন) যেতে হয়। আমার বয়স ৮২ এবং স্ত্রীর বয়স ৭৩। যে হেতু দমদম স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে রেলগাড়ির মেঝের মধ্যে উচ্চতার পার্থক্যের কারণে বয়স্কা মহিলাদের ট্রেনে ওঠা বিপজ্জনক, তাই আমরা বরাহনগর থেকে ভায়া দমদমের পরিবর্তে ভায়া শিয়ালদহ হয়ে বসিরহাট যাওয়ার টিকিট কাটি। ভাড়া ৫ টাকা বেশি লাগে। কিন্তু বসিরহাট থেকে ফেরার সময় বসিরহাট স্টেশন থেকে বরাহনগর রোডে আসার সময় ভায়া শিয়ালদহ টিকিট মেলে না, কারণ ওই স্টেশনের রেলকর্মী বা যাঁরা বাইরে কিয়স্ক থেকে টিকিট দেন, তাঁরা বলেন, তাঁদের কম্পিউটারে ওই টিকিট দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। তাঁরা বলেন, দমদমে যদি ট্রেন বদল করতে না পারেন, তবে শিয়ালদহে গিয়ে আবার টিকিট কাটবেন।
অর্ণব কুমার সরকার
কলকাতা-৫৬
দুরবস্থা
গত ১-৪-১৯ তারিখে, আপ হাওড়া-ফলকনামা সুপার ফার্স্ট এক্সপ্রেসে চড়ি আমি ও স্ত্রী। দু’জনেই বরিষ্ঠ নাগরিক। ট্রেনটি আসছিল হাওড়া থেকে, আমরা চড়ি আমাদের নিকটবর্তী স্টেশন খড়্গপুরে। ট্রেনটির দুরবস্থা দেখে চমকে উঠি। ৭২ জনের বসার ও শোয়ার জায়গা থাকলেও প্রায় ১৭২ জন উঠেছিল এবং প্রায় সবাই ছিল সেকেন্দ্রাবাদ স্টেশনের প্যাসেঞ্জার। একটি কনফার্মড টিকিটের সঙ্গে ২-৩ জন করে, কোনও কোনও ক্ষেত্রে অনেক লটবহর নিয়ে হাওড়া থেকে বৈধ টিকিটের যাত্রী সেজে বসেছিল। আমরা সাধারণ মধ্যবিত্ত ছাপোষা মানুষ। গায়ের জোরও নেই, মনের জোরও, বয়সের কারণে একদম নেই বললেই চলে। কোনও রকমে ৪৯ এবং ৫২ নম্বর সিটে পৌঁছে আমাদের সঙ্গে থাকা দু’টি ব্যাগ ওদের ব্যাগের কাছেই রেখে কোনও উচ্চবাচ্য না করে বসে পড়ি। প্রত্যেকটি রিজ়ার্ভেশন কম্পার্টমেন্টের এমনই দুরবস্থা (শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরা ছাড়া)। রাতের অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর। অতিরিক্ত প্যাসেঞ্জার এবং লটবহর বেশি হওয়ার জন্য বৈধ টিকিটধারীদের শোয়ারও সুযোগ ছিল না। কেউ কেউ পায়ের কাছে বসেছিল, কেউ মাথার কাছে, কেউ দুটো বার্থের তলায় গামছা বা লুঙ্গি পেতে শুয়েছিল। যাতায়াতের রাস্তা একদম বন্ধ ছিল। তাই বাথরুমে যাওয়াও সম্ভব হচ্ছিল না। টিকিট পরীক্ষক টিকিট পরীক্ষা করলেও ওয়েটিং লিস্ট ও অন্য যাত্রীদের উদ্দেশে কোনও উচ্চবাচ্য করেননি।
রণজিৎ কুমার সাবুদ
উত্তরমুখরা, পশ্চিম মেদিনীপুর
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy