Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: তঁর কাছে কী শিখব?

দলটা যদি মহম্মদ আমিন, রবীন সেন, সমর মুখোপাধ্যায়, বি টি রণদিভে— এঁদের সংগ্রামী আদর্শ না ভুলে, ‘কংগ্রেস’ নামক দলটাকে রক্ষা করার হরকিষণ সিংহ সুরজিৎ পন্থীয় নীতিতে না চলত, হয়তো আজ এই দিন দেখতে হত না!

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৪০
Share: Save:

‘তাঁর কাছে শিখুন’ (৩০-১) চিঠিটি পড়ে ভীষণ রকম বিষম খেলাম। লেখক সিপিএমের কংগ্রেসপন্থী নেতা-কর্মীদের বুদ্ধবাবুর কাছে শিখবার পরামর্শ দিয়েছেন। চিঠিটি পড়ে মনে হল, লেখক কংগ্রেসের সঙ্গে দলের এই মাখামাখি বিলক্ষণ পছন্দ করেন না। খুব ভাল! কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতা বলে, এ-ব্যাপারে বুদ্ধবাবুর আদর্শ তো লেখকের আদর্শের থেকে আলাদা! কারণ বুদ্ধবাবুই তো সিপিএম-কংগ্রেস এই বকচ্ছপ জোটের মূল প্রবক্তা! তিনিই তো প্রকাশ্য সমাবেশে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে একই মালার বাঁধনে বাঁধা পড়ে দলকে গাড্ডায় ফেলে আজ ভাবুক হয়ে পড়েছেন! বুদ্ধবাবুর কাছে শিখেই তো বরং আজ দলটার এমন করুণ পরিণতি!

বরং দলটা যদি মহম্মদ আমিন, রবীন সেন, সমর মুখোপাধ্যায়, বি টি রণদিভে— এঁদের সংগ্রামী আদর্শ না ভুলে, ‘কংগ্রেস’ নামক দলটাকে রক্ষা করার হরকিষণ সিংহ সুরজিৎ পন্থীয় নীতিতে না চলত, হয়তো আজ এই দিন দেখতে হত না! পত্রলেখক বুদ্ধবাবুকে তাঁর আদর্শ ভাবতেই পারেন, কিন্তু আজ বরং সময় এসেছে বুদ্ধদেব দলটার যে ক্ষতিসাধন করেছেন, তার বিচার করার!

২০০৬-এ ২৩৫-টি আসন জয় করে উন্নততর বামফ্রন্টের স্লোগান দিলেন! যেন জ্যোতি কম হয়ে গেছে! আরও অনেক জ্যোতিতে বাংলা ভরাতে হবে! মন্ত্রিসভা তথা রাজ্য কমিটি ঘোষণা করল, কৃষি দিয়ে আর হবে না, এ-বার শিল্প চাই, শঙ্কিত চাষার ব্যাটা রেজ্জাক মোল্লা দলকে হুঁশিয়ারি দিলেন, ‘দলকে এর জন্য চরম মূল্য দিতে হবে।’ এর পর তো চাষার ব্যাটা ক্ষোভে দুঃখে বলেই বসলেন, ‘হেলে ধরতি পারে না কেউটে ধরতি গিছল’!

বুদ্ধবাবুর বিভিন্ন সময়ের দম্ভোক্তি দলটাকে মানুষের কাছ দূরে সরিয়ে এনেছে। আর কিছু গৌতম দেব, সুজন চক্রবর্তী মার্কা স্তাবক যেন বুদ্ধবাবুর মধ্যে নতুন স্তালিনকে খুঁজে পেয়েছিলেন! এ-ই হয়, যখন একটি কমিউনিস্ট আদর্শে বিশ্বাসী দলের নীতি-নির্ধারণে, শ্রমিক শ্রেণির পরিবর্তে, ছাত্র-যুবরা এসে বসে! শ্যামল চক্রবর্তীর মতো ছাত্র যুব রাজনীতি করা লোক কিনা সিটু-র কর্ণধার! পত্রলেখকের বেদনা অকৃত্রিম, কিন্তু সে জন্য বুদ্ধবাবুকে হিরো নয়, বরং দায়ী করা দরকার!

অমিত সরকার আসানসোল

আলু চাষ

খবরে প্রকাশ, এখনও রাজ্যের ৫০টি হিমঘরে ৬০ লক্ষ প্যাকেটের বেশি আলু জমা রয়েছে। অথচ এক মাস পরে নুতন আলু রাখার জন্য হিমঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রেডি করতে হবে। তাই হিমঘর মালিকরাও চিন্তায় পড়েছেন। গত বছর থেকে আলুর দামে ভাটার টান। এ-বার নিয়ে পর পর দু’বছর আলুর দামে এমন অধঃপতন। এর আগে সাধারণত এক বছর আলুর দাম না পাওয়া গেলে, পরের বছর চড়া দামে আলু বিক্রি করে আগের বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যেত। এ-বার এখনও পর্যন্ত দামের যা অবস্থা, তাতে চাষিদের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। ফলে কৃষকের মাথায় হাত।

এ-জন্য আলুর অতিরিক্ত চাষ এবং অতিরিক্ত উৎপাদন অনেকাংশে দায়ী। অভিজ্ঞতায় দেখেছি, অন্যান্য লাভজনক রবিশস্য চাষে ধারাবাহিক পরিচর্যা এবং ফসল তোলার কাজ চালাতে হয়। তুলনায় আলু চাষে শ্রম কম দিতে হয় এবং দাম পাওয়া গেলে লাভও যথেষ্ট থাকে। এ-ছাড়া আলু যেহেতু মাটির খুব গভীরে গিয়ে ফলে না, তাই বাইরে থেকে সার প্রয়োগের অনেকটা অংশ আলু নিতে পারে না। তাই ফসল তোলার পরেও আলু জমির উর্বরতা থেকে যায়। পরের ফসল চাষ করে চাষি কম খরচে ভাল লভ্যাংশ ঘরে তোলেন। এ-সব কারণে সম্ভবত আলু চাষের প্রতি চাষিদের ঝোঁক বেশি।

অন্য দিকে, অধিকাংশ রাজ্যে এখন কম-বেশি আলু চাষ হচ্ছে। ফলে রফতানির সুযোগ দিন-দিন কমছে। আবার এ-রাজ্যের মধ্যে সারা উত্তরবঙ্গ, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, পুরুলিয়া, পুর্ব মেদিনীপুরের মতো জেলা, যেখানে আলু চাষ প্রায় হত না, সেখানেও এখন আলু চাষ হচ্ছে। তাই রাজ্যের মধ্যেও বিভিন্ন জায়গায় আলুর চাহিদা আগের থেকে কমেছে। এই অবস্থায় আলুর ঠিক দাম বজায় রাখতে গেলে, আলু চাষ কমিয়ে চাষিদের অন্য ফসল চাষে উৎসাহী করা দরকার। আলু বিদেশে রফতানি করার ব্যবস্থাও করতে হবে। না-হলে আলুচাষির দুর্দিন আসন্ন।

প্রদ্যোত পালুই বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া

কে দায়ী?

আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠী বলেছেন, ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটিতে পার্ট-ওয়ানে ছেলে-মেয়েদের ফেল করার পিছনে তারা নিজেরাই দায়ী। দোষ কিন্তু একা তাদের নয়। কলেজগুলোতে ঠিকঠাক ক্লাস না হওয়ার জন্য কলেজগুলোই দায়ী। কলেজে যদি নিয়মিত ক্লাস হয়,
তা হলে অবশ্যই সবাই ক্লাস করতে যাবে।

২০১৭ জুন-জুলাই মাসে নিয়ম বদল হয়। অথচ বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীরা এই নিয়ম জানেই না। আবার জুলাই মাসে ছিল পার্ট-ওয়ান পরীক্ষা। ছাত্রছাত্রীরা জানতেই পারে না কখন কী নিয়ম চালু হচ্ছে। পরীক্ষার আগে এই ভাবে নিয়ম বদল করা কি খুব ভাল কাজ? নতুন নিয়ম চালু হলে, ছাত্র-ছাত্রীদের আগেই জানাতে হবে এবং সেই নিয়ম সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে দিতে হবে।

তাসনীম ইসলাম সাগরদিঘি, মুর্শিদাবাদ

গোড়ায় গলদ

শিশুদের যৌন নিগ্রহের ক্ষেত্রে অনেকেই মুশকিল-আসান দাওয়াই দিয়েছেন, বাচ্চাদের ‘গুড টাচ’ ও ‘ব্যাড টাচ’-এর পার্থক্য বোঝানো। কিন্তু কথা হল, একটা পাঁচ-ছ’বছরের বাচ্চার কি এতটা অনুভূতিশক্তি জন্মায়, যার জেরে সে গুড টাচ আর ব্যাড টাচের পার্থক্য বুঝতে পারবে! তার চেয়েও বড় কথা, কেউ যদি গুড টাচের অভিনয় করে মনে মনে ব্যাড টাচের আস্বাদ নেয়, তা হলে বাচ্চাটির উপর কি সব দায়ভার ছেড়ে দেওয়া যায়!

আসলে সমস্যা অন্য জায়গায়। আমাদের গোড়ায় গলদ রয়ে গেছে। পারিবারিক এবং সামাজিক দুই দিকেই যৌন সচেতনতার যথেষ্ট অভাব, ছেলেমেয়েদের যৌন শিক্ষায় শিক্ষিত না করে তোলার মানসিকতা, কোথাও কোনও যৌনতার গন্ধ পেলে ‘রে-রে’ করে তেড়ে আসা, পাড়ায় ছেলেমেয়েদের বন্ধুত্বপূর্ণ মেলামেশায় বাধা প্রদান এবং সন্দেহের চোখে দেখা— এই সমস্ত কিছুই আমাদের, সমাজের কিছু বদ্ধমূল ধারণা থেকে বেরিয়ে কিছুতেই মুক্তমনা হতে দিচ্ছে না। ফলে, কোথাও কোনও বাচ্চা, এমনকী বড়রাও, যৌন হেনস্তার শিকার হলে, আমরা না সেটার উপযুক্ত প্রতিবাদ করতে পারছি, না পারছি ছেলেমেয়েদেরকে সাহস জোগাতে যে, যেটা তোমার ক্ষেত্রে ঘটেছে সেটা অবশ্যই জঘন্য ঘটনা, এর জন্য দোষী ব্যক্তিদের অবশ্যই শাস্তি দেওয়া হবে, আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু এই ঘটনার জন্য তোমার জীবনের কোনও বিশেষ ক্ষতি হবে না, তোমার জীবন থেমে থাকবে না, হয়তো সাময়িক ভাবে একটু বিধ্বস্ত লাগবে, কিন্তু তার জন্য তুমি একটুও দায়ী ন‌ও, তোমার পোশাক দায়ী নয়, যারা এ-রকম কাজ করেছে তাদের জঘন্য পৈশাচিক বর্বর মানসিকতা দায়ী, তাদের শিক্ষা-দীক্ষা নিয়ে আমাদের সন্দেহ হয়। বোঝানো উচিত ছিল এ ভাবেই।

মহঃ আবু তাহের ভগবানগোলা, মুর্শিদাবাদ

ভ্রম সংশোধন

‘জেলায় বৈঠক কেন কেশরীর’ শীর্ষক সংবাদ প্রতিবেদনে (৭-২) লেখা হয়েছে, রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী মালদহে গিয়েছিলেন। কথাটা ঠিক নয়। রাজ্যপাল মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারি মুর্শিদাবাদে গিয়েছিলেন। এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPM Buddhadeb Bhattacharjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE