Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Coronavirus

সম্পাদক সমীপেষু: প্রবীণদের পরামর্শ

ঘর ধোয়ার চেষ্টা করবেন না, এতে পা পিছলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২০ ০০:৪৮
Share: Save:

বলা হচ্ছে, বয়স্কদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার প্রবণতা বেশি। তাই তাঁদের আরও কঠিন ভাবে এই বন্দিদশা মেনে চলতে হবে। এ দিকে দিনের পর দিন গৃহবন্দি থাকতে থাকতে বয়স্কদের মানসিক শক্তি অটুট রাখা মুশকিল। অনেক বয়স্কই আজকাল বাড়িতে বা ফ্ল্যাটে একলা অথবা দুজনে থাকেন। দেখাশোনা করার জন্য হয় সব সময়ের জন্য, নয়তো সীমিত সময়ের জন্য সেবিকা বা পরিচারিকা থাকেন। এই সময় তাঁরাও বাড়ি চলে গিয়েছেন, অথবা আসতে পারছেন না। ফলে বাড়ির সব কাজই নিজেদের ক্ষমতা অনুযায়ী করতে হচ্ছে। তাই কয়েকটা পরামর্শ। একসঙ্গে সব পদ না রেঁধে, দুটো পদের মাঝে কিছুটা বিশ্রাম নিন। ঘর ঝাঁট দিন লম্বা হাতল ঝাঁটা দিয়ে। বসে ঘর মুছবেন না, বিশেষ করে রক্তের চাপ কম বা বেশি থাকলে, মাথা ঘুরে যেতে পারে। লাঠি যুক্ত ‘মপ’ ব্যবহার করা সবচেয়ে উপযুক্ত। ঘর ধোয়ার চেষ্টা করবেন না, এতে পা পিছলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ঘরের মেঝেয় কোথাও জল যেন না পড়ে থাকে। বাথরুমে চটি পরে যাবেন না। ঘরের জানলা, বারান্দার দরজা যতটা সম্ভব খোলা রেখে আলো-হাওয়া ঢুকতে দিতে হবে। সম্ভব হলে বিকেলে ছাদে হাঁটুন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার সময় হাতল ধরবেন। হাঁটতে কোনও কারণে অসুবিধে থাকলে, লাঠি ব্যবহার করবেন। ঘুম থেকে উঠে খাট থেকে নামার আগে, কিছু ক্ষণ খাটে পা ঝুলিয়ে বসে, তার পর মাটিতে পা দিয়ে দাঁড়ান। হাতের কাছে খাওয়ার জল রাখুন। হাল্কা ধরনের বই পড়ুন, মন খারাপ করা বই একদম নয়। একই রকমের সিনেমা দেখুন। গান শুনুন। ফোনে পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন, কথা বলুন। প্রয়োজনে পুলিশের সাহায্য নিন।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

হরিদেবপুর

কেন বিরতি

অনেকে বলছেন, লকডাউন কিছু দিন তুলে নিয়ে, ফের করা উচিত। কিন্তু তার কোনও সঙ্গত যুক্তি নেই। এতে রোগ সংক্রমণের মুখে যে বাঁধ দেওয়া হয়েছে, তা ভেঙে গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। এমনিতেও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ অসুবিধা নেই। অসুবিধায় তাঁরা পড়েছেন, যাঁরা দিন আনেন দিন খান। চার-পাঁচ দিনের বিরতিতে এঁদের বিশেষ আর্থিক সুরাহা হবে না। বরং যেটা হতে পারে, সেটা হল— তাঁদের মধ্যে রোগ ছড়িয়ে পড়া। এর চেয়ে বরং ভাল লাগাতার লকডাউন বজায় রাখা। মানুষ আরও একটু কষ্ট করুন। কিন্তু সুস্থ থাকুন।

কৌশিক সরকার

রঘুনাথপুর, পুরুলিয়া

ল্যান্ডলাইন

গত ২০-২ তারিখ থেকে আমাদের ল্যান্ডলাইন সংযোগ একেবারে বন্ধ। এলাকায় বড় ড্রেনের কাজ শুরু হওয়ায় এই বিপত্তি। বহু বার জানানো হলেও কানেকশন চালু হয়নি। ড্রেনের কাজ শেষ হতে এখনও অনেক দেরি।

এ দিকে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের টাকা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৮-৩ তারিখে পেরিয়ে গেল। টেলিকম দফতরে ফোন করে জানলাম, আমার কানেকশন আর চালু হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই, কারণ মেন রাস্তায় স্থায়ী ভাবে একটা পিলার গাঁথা হয়ে গিয়েছে, যেখান থেকে মূল কেব্ল আমার এলাকায় ঢোকে। এ বার কী করব?

সুপ্রতিম প্রামাণিক

আমোদপুর, বীরভূম

শব্দপ্রহার

করোনা রুখতে আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে আপ্রাণ লড়ে যাচ্ছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। সম্প্রতি করোনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর লেখা একটি গান কিছু বার্তা সহ রেকর্ড করা হয়েছে। এবং বিটি রোড, সোদপুর ট্র্যাফিক মোড়ে এই রেকর্ডটি রোজ সকাল সাতটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত বিরামহীন ভাবে বাজিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

কিন্তু কেন, সেটা বোধগম্য নয়। রাস্তা তো প্রায় ফাঁকা। কারাই বা শুনছে! তা ছাড়া রেকর্ডের প্রচারিত বিষয়বস্তু এত দিনে সবারই জানা। অমি এক জন বয়স্ক নাগরিক। রোজ এই পনেরো ঘন্টার অবিরাম শব্দপ্রহার এই কঠিন সময়টাকে আরও কঠিন করে তুলেছে।

অশোক চক্রবর্তী

কলকাতা-১১৪

প্রবীণদের দশা

কেন্দ্রীয় সরকার ক্ষুদ্র ও স্বল্প সঞ্চয়ের সুদের হার ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সংশোধন করে যে নতুন হার বলবৎ করল, তাতে সর্ব শ্রেণির সাধারণ মানুষের— বিশেষত প্রবীণ মানুষের— ওপর যে বিরাট আর্থিক আঘাত নেমে আসবে, সন্দেহ নেই।

প্রবীণ নাগরিকদের জন্য বর্তমানে আমানতের ওপর বার্ষিক যে ৮.৬ শতাংশ সুদ দেওয়া হত, তা কমিয়ে আগামী তিন মাসের জন্য করা হল ৭.৪ শতাংশ। আর পাবলিক প্রভিডেন্ড ফান্ডের সুদ বর্তমানের ৭.৯ শতাংশ থেকে কমে হল ৭.১ শতাংশ।

দেশের বর্তমান গভীর আর্থিক সঙ্কট সুস্পষ্ট। ক্রমহ্রাসমান চাহিদার ফলে কলকারখানা শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদন ক্রমশ কমছে, শিল্পে নতুন লগ্নির পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, প্রতি দিন কর্মচ্যুত হচ্ছেন অসংখ্য শ্রমিক কর্মচারী। এই পরিস্থিতিতে যখন দরকার মানুষের হাতে খরচ করার মতো অর্থ জোগানো, তখনই সরকারের এই সুদ কমানোর মতো কঠিন পদক্ষেপ জনজীবনে আরও দুর্দশা নিয়ে আসবে।

সুদ-নির্ভর অসংখ্য প্রবীণ নাগরিকের, এই দুর্মূল্যের বাজারে, স্বাস্থ্য পরিষেবার খরচ বহন করতে প্রাণান্তকর অবস্থা হবে। নানা অজুহাতে একে একে প্রবীণ নাগরিকদের অনেক সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

সম্প্রতি করোনা সংক্রমণের দোহাই দিয়ে রেলে প্রবীণ নাগরিকদের কনসেশন তুলে দেওয়া হল। বলা হল, এই পরিস্থিতিতে বয়স্ক নাগরিকদের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে তাঁদের রেল ভ্রমণ থেকে নিবৃত্ত করতে সাময়িক এই পদক্ষেপ নেওয়া হল। ভাবটা এমন, যেন বয়স্ক মানুষেরা তাঁদের নিজেদের ভালমন্দ বুঝতে পারেন না।

যে সরকার প্রবীণ নাগরিকদের জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ছাঁটাই করতে সদা তৎপর, তার দ্বারা দেশের মঙ্গল হবে কি?

দেবকী রঞ্জন গঙ্গোপাধ্যায়

উত্তরপাড়া, হুগলি

ব্রডব্যান্ড

আমি এক জন প্রবীণ নাগরিক। গত ২০ মার্চ, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ‘জনতা কারফিউ’-এর আগেই আমার বাইরের বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম, বিএসএনএল-এর ব্রডব্যান্ড পরিষেবা দেহ রেখেছে। প্রায় প্রত্যেক মাসেই এক-তৃতীয়াংশ সময় এটি খারাপ থাকে।

বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ওষুধ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী, আনাজপাতি থেকে ইলেকট্রিক বিল, ফোনের বিল পেমেন্ট, নতুন অর্থবর্ষের শুরুতে ব্যাঙ্কে ফর্ম জমা দেওয়া বা অন্যান্য ব্যাঙ্কিং পরিষেবা, এ রকম বহু কাজের জন্য আমি ইন্টারনেটের উপর খুব নির্ভরশীল। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, বিদ্যুৎ বা ব্যাঙ্কের মতো আপৎকালীন পরিষেবার মধ্যে টেলিকমকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

গত কয়েক দিনে আমি িবএসএনএলের সঙ্গে যোগাযোগ করার বহু চেষ্টা করেছি। জানানো হয়েছে, কর্মচারী আসেননি, তাই কিছু করা যাবে না। একটি এসএমএস-এর মাধ্যমে আমার মোবাইলে লাইনম্যান-এর মোবাইল নম্বর পাঠানো হয়েছে। লাইনম্যানকে ফোন করলে তিনি বলেছেন, গাড়ি না পাঠালে তিনি অফিসে আসবেন কী করে?

ফলে, যথেষ্ট পরিমাণে ঝুঁকি নিয়ে আমাকে বাজার, ব্যাঙ্ক, ওষুধের দোকান— এ রকম বহু জায়গায় যেতে হচ্ছে, সংক্রমণের আশঙ্কা থাকলেও আমি নিরুপায়।

সঞ্জয় ঘোষ

কলকাতা-৩

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE