Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: প্রেসিডেন্সি কেমন ছিল

ম্যাট্রিক পরীক্ষায় পাশ করা প্রথম দশ জন ছাত্রের মধ্যে আট জনই ছিল প্রেসিডেন্সিতে আমার সহপাঠী। আইএসসি পরীক্ষাতেও এই রকম রেজাল্ট হয়েছিল।

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৮ ০০:০০

প্রেসিডেন্সি কলেজ এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পেয়েছে। আমাদের মতো প্রাক্তনীরা এতে গৌরব অনুভব করি। বিকাশ সিংহ এ নিয়েই কিছু কথা বলেছেন (সম্পাদক সমীপেষু, ১২-১)। আমি মফস্সলের স্কুল থেকে ১৯৫০ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজে আইএসসি পড়তে আসি। ম্যাট্রিক পরীক্ষায় পাশ করা প্রথম দশ জন ছাত্রের মধ্যে আট জনই ছিল প্রেসিডেন্সিতে আমার সহপাঠী। আইএসসি পরীক্ষাতেও এই রকম রেজাল্ট হয়েছিল। আমাদের মধ্যে বেশ কয়েক জন ছাত্র (যেমন আমি, দিলীপ ভদ্র, পবিত্র ভড়, মৃণাল করগুপ্ত, রবার্টস এবং আরও কয়েক জন) হাফপ্যান্ট পরে কলেজে আসত। ইডেন হিন্দু হস্টেলে আমাদের সঙ্গে সুখময় চক্রবর্তী, সুসীমমুকুল দত্ত, শুকদেব সিংহর মতো অনেক দাদাও থাকতেন। কলেজের বিভিন্ন বিভাগে অসামান্য মেধাবী ছাত্রছাত্রী তো ছিলেনই।

প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাঙ্গণে বিজ্ঞান কংগ্রেস বসেছিল। উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। আমরা ছিলাম ভলান্টিয়ার। বিখ্যাত বিজ্ঞানী জে বি এস হ্যালডেন বিজ্ঞান কংগ্রেসে আসেন, এবং এ-দেশেই থেকে যান। বেকার বিল্ডিংয়ের ফিজিক্স থিয়েটারে অধ্যাপক হ্যালডেনের একাধিক বক্তৃতার আয়োজন করা হয়েছিল। বক্তৃতা চলার সময়ে ওই হলের স্লাইডিং ব্ল্যাকবোর্ডটার ওঠানো নামানো আমাদেরই করতে হত।

সরস্বতী পুজোর পরের দিন ইডেন হিন্দু হস্টেলের মাঠে ছোট প্যান্ডেল করে কলেজের প্রাক্তনীদের নিয়ে সারস্বত সম্মেলন হত। স্যর যদুনাথ সরকার, সুকুমার সেন, নলিনাক্ষ সান্যাল-এর মতো প্রখ্যাত মানুষেরা আসতেন ও বক্ত্ৃতা দিতেন। তাঁদের কথায় শ্লেষ ও মজার রাজনৈতিক টিপ্পনীও থাকত। সবাই উপভোগ করত।

শিশিরকুমার নিয়োগী

কলকাতা-৯১

ডা. তাইকোন্ডো

প্রথমেই আমি আগামী দিনের ডা. তাইকোন্ডোকে স্বাগত জানাই। প্রায়ই আলোচনা হচ্ছে, ডাক্তাররা তাইকোন্ডো শিখে নাকি আক্রমণ প্রতিহত করবেন। কার আক্রমণ? কেন আক্রমণ? কোন সীমারেখা পেরলে তাকে আক্রমণ বলা হবে? আক্রমণের পালটা আক্রমণে কি সমস্যা মিটবে? মারামারি করলে ক্রিমিনাল কেস তো ওই জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধেও হবে, তার দায়িত্ব সরকার নেবে? আক্রমণকারীরা তো অনেক জন থাকে— এক জন কী ভাবে তার মোকাবিলা করবেন? ডাক্তাররা কি আগামী দিনে গুন্ডা, মাফিয়ার জায়গা নেবেন? তা হলে তো ওঁরা ক্লাস না করলেও, কমজোরি প্রফেসরেরা ভয়ে-ভয়ে পাশ করিয়ে দেবেন! তার চেয়ে সরকার আগামী বাজেটে সরকারি ডাক্তারদের লোহার বর্ম আর হেলমেট কিনে দিক!

এ-ভাবে ডাক্তারদের প্রতি প্রতিনিয়ত কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের আক্রমণ প্রতিহত করা যাবে না। বিশেষত যেখানে প্রতি দিন ডাক্তারদের বিরুদ্ধে উসকানি তৈরি হচ্ছে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যর্থতা ঢাকার জন্যে। সব ডাক্তারি ছাত্র ও জুনিয়র ডাক্তারের প্রতি সিনিয়র দাদা হিসাবে আমার অনুরোধ— এই সব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উসকানি থেকে নিজেদের দূরে রাখুন। যখন তৃতীয় বর্ষ থেকে ক্লিনিক্যাল ক্লাস শুরু হয়, ইমার্জেন্সিতেও ছাত্রদের রোটেশনে ডিউটি পড়ে। অনেক ছাত্রই সেই ডিউটি করেন না। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম বর্ষের ছাত্ররা যদি ব্লাড প্রেশার দেখেও সিনিয়র দাদাদের সাহায্য করেন, তবে অনেক রোগীকে কম সংখ্যক ডাক্তাররাই ঠিক ভাবে দেখতে পারেন। তাই এই বিষয়ে মেডিক্যাল কলেজ প্রশাসনকে দৃঢ় হাতে কাজ করতে হবে। যাতে জুনিয়র থেকে সিনিয়র, নিজের ডিউটি ঠিক মতো করেন। রোগী বা তাঁর বাড়ির লোক অন্য গ্রহের লোক নন। যদি তাঁরা দেখেন কোনও ডাক্তার তাঁর রোগীকে যত্ন নিয়ে দেখছেন— আমার ত্রিশ বছরের অভিজ্ঞতায় আমি কখনও কাউকে বিশৃঙ্খল হতে দেখিনি।

আসল ভিলেন হল পরিকাঠামো আর ছোট, মেজ, বড় নেতাদের হস্তক্ষেপ— যার জন্য বেড থাকলেও ডাক্তাররা তা অসহায় রোগীকে দিতে পারেন না। বেড পেলেও ঠিক পরিকাঠামো নেই বলে ডাক্তার পরিষেবা দিতে ব্যর্থ হন। যখন দাদাদের বদান্যতা বা দালালদের সেলামিতেই রোগী ভর্তি হয়, তবে আর ডাক্তারদের হাসপাতালে কী ক্ষমতা? যা-ই হোক, আন্তরিক ভাবে রোগীকে দেখা, সহৃদয় ভাবে বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলা, যেটুকু সুযোগ আছে তা-ই সঠিক ভাবে রোগীকে বণ্টন করা আর কোনও প্ররোচনাতে পা না দেওয়া— এগুলো মেনে চললেই ডাক্তাররা আগামী দিনে ডা. তাইকোন্ডো না হয়ে ডা. পপুলার হয়ে উঠবেন।

দীপ ভট্টাচার্য

বেহালা

আ মরি

গত ২১ ফেব্রুয়ারি সারা দিন জুড়ে কিছু বাঙালি যা ব্যাপক হারে বাংলা ভাষা বাঁচানোর আন্দোলন করলেন সোশ্যাল মাধ্যমগুলোতে, তা অতুলনীয়। তবে, তাঁদের মধ্যে এমন কিছু জনগণ রয়েছেন, যাঁরা সারা বছর নিজের দেশ ছাড়া অন্য কোনও দেশকে সহ্য করতে পারেন না, ভারত-বাংলাদেশ ক্রিকেট ম্যাচের আগে বাংলাদেশকে বিশ্রী ভাবে গালাগালি দেন, কিন্তু ২১ তারিখ তাঁরাই দেখলাম বাংলাদেশের জন্যে গলা ফাটাচ্ছেন, থুড়ি, লিখছেন। আবার এমন কিছু লোক রয়েছেন, যাঁরা সারা বছরে বাংলা ভাষা বলতে কিংবা বাঙালি সংস্কৃতিকে আমল দিতেই ভুলে যান, শুধু পাশ্চাত্য সংস্কৃতি নিয়েই মাতামাতি করেন, কিন্তু এই তারিখটি দেখেই বেশ ফলাও করে ভাষা দিবসের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছিলেন ফেবু-র দেওয়াল জুড়ে। তবে একটা কথা বলে দিই, ভুলেও তাঁদের কক্ষনও জিজ্ঞাসা করতে যাবেন না, সত্যজিৎ রায়ের এই সিনেমাটি দেখেছিস বা শরৎচন্দ্রের ওই উপন্যাসটি পড়েছিস— ব্যস, তা হলেই খেল খতম!

কেয়া রায়

আলিপুরদুয়ার

সহৃদয়

এই শীতে কলকাতার এক দল কমবয়সি ছাত্রছাত্রী উত্তরবঙ্গে এক প্রত্যন্ত আদিবাসী গ্রামে গিয়ে স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য কাজ করল। বছর দুয়েক আগে, সদ্য স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে এই কিশোরকিশোরীরা ঠিক করেছিল, প্রথাগত উচ্চ শিক্ষা এবং কেরিয়ার গঠনের সঙ্গে সঙ্গে সমাজের অবহেলিত অংশের পাশে দাঁড়াবে তারা। তখন তারা একটি দল তৈরি করে। দলটি ইতিমধ্যে বিভিন্ন ধরনের কাজ করেছে। বিভিন্ন জেলায় পিছিয়ে পড়া শিশুদের জন্য জামাকাপড়, বইখাতা ও অন্যান্য লেখাপড়ার সামগ্রী পাঠানো থেকে শুরু করে কিছু গ্রামের স্কুলে গ্রন্থাগার এবং বিজ্ঞান ল্যাবরেটরি তৈরিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনও মূলত পড়ুয়া, উপার্জনবিহীন এই দলের সদস্যরা। নিজেদের দৈনন্দিন হাতখরচা বাঁচিয়েই তারা এই উদ্যোগ চালিয়ে যেতে চায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেক মহানুভব মানুষ।

২০১৭-র ডিসেম্বরে লক্ষ্য ছিল, উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার গ্রাম নাগরাকাটায় গিয়ে ওই এলাকার আদিবাসী শিশুদের পড়াশোনার সাহায্য করা। প্রায় ত্রিশ বছর আগে গৃহবধূ শ্রীমতী অজিতা টোপ্পো তাঁর ঐকান্তিক চেষ্টায় ওখানে গড়ে তুলেছেন ‘রোজল্যান্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়’। দরিদ্র, গ্রামীণ আদিবাসীদের সঙ্গে সেখানে লেখাপড়া শেখে চা-বাগান শ্রমিকদের সন্তানরাও।

এই স্কুলে গিয়ে সংস্থার প্রতিনিধিরা শতাধিক পড়ুয়াকে শীতবস্ত্র ও পড়াশোনার বিভিন্ন সামগ্রী দিল, গ্রন্থাগারে তিনশোরও বেশি বই দিল এবং শৌচাগার তৈরির জন্য নগদ কিছু আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করল। সংস্থার চার সদস্য
গত ৬ থেকে ৮ ডিসেম্বর নাগরাকাটায় উপস্থিত থেকে সেখানকার ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে অঙ্কের কর্মশালা, কুইজ ও বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করল।

নভোনীল চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা-৯১

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

Presidency University Education Taiconda
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy