E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: বিমায় সমস্যা

২০১৭ সালের নিয়ম অনুযায়ী অভিযোগ গ্রাহ্য করা গেল না। বুঝলাম, ওম্বুডসমান খোলা হয়েছে নামেই। জানতাম, ব্যাঙ্কের ওম্বুডসমান কিছু কাজ করে। তাই ইনশিয়োরেন্স ওম্বুডসমান-এ গিয়েছিলাম।

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৬:০৭

আমি ২০২৩ সালের মে ও জুন মাসে একটি নামী বেসরকারি বিমা কোম্পানির কাছ থেকে দু’টি স্বাস্থ্যবিমা করাই। এগুলো ২০২৪ সালে যথাসময়ে পুনর্নবীকরণ করি। নতুন কেনার সময় ও গত বছর পুনর্নবীকরণ করার আগে ওই কোম্পানি একাধিক মেল ও এসএমএস করে সময়ে পুনর্নবীকরণ করার জন্য। তা ছাড়া শুনেছিলাম, এর জন্য নাকি ৩০ দিন ‘গ্রেস পিরিয়ড’ পাওয়া যায়। আশ্চর্যজনক ভাবে, এই বছর পুনর্নবীকরণের জন্য আমার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি। সঙ্গে সঙ্গে আমি কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু তারা কিছুতেই পুনর্নবীকরণ করতে রাজি হল না। অভিযোগ করলে জানানো হয়, পুনর্নবীকরণের দিন-ক্ষণ আমার মনে রাখা উচিত ছিল। এখন কিছু করা যাবে না।

খবর পাই, বিমা সংস্থা এই পলিসি আর চালু রাখতে চাইছে না। বাধ্য হয়ে শেষ আশা হিসেবে ইনশিয়োরেন্স ওম্বুডসমান-এ অভিযোগ করি। তারা জানায় ২০১৭ সালের নিয়ম অনুযায়ী অভিযোগ গ্রাহ্য করা গেল না। বুঝলাম, ওম্বুডসমান খোলা হয়েছে নামেই। জানতাম, ব্যাঙ্কের ওম্বুডসমান কিছু কাজ করে। তাই ইনশিয়োরেন্স ওম্বুডসমান-এ গিয়েছিলাম। এমনিতেই বিমা কোম্পানিগুলো এজেন্টদের দিয়ে কাজ করায়। তাই একক ভাবে কোনও কাজ করতে গেলে এঁদের থেকে অনেক বাধা ও ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। গ্রিভান্স রিড্রেসাল সেল আছে, ওম্বুডসমান আছে, কোনওটাই খুব একটা কার্যকর নয়। তাই দেশের প্রবীণ নাগরিকদের প্রতি আমার পরামর্শ, স্বাস্থ্যবিমা কোনও বেসরকারি সংস্থা থেকে না করানোই ভাল।

শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, উত্তরপাড়া, হুগলি

কয় জনা?

শাশ্বত ঘোষের ‘রাজনীতির সীমান্ত’ (৫-৯) শীর্ষক প্রবন্ধের ভিত্তিতেই এই চিঠি। ‘তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা’— এ কথা মন যদি না-ই জানে, তা হলে কতটা ক্ষতি হবে জানি না। তবে একটি দেশে বাস করে কয় ‘জনা’ সেই সংক্রান্ত সঠিক তথ্য না থাকলে নীতি প্রণয়ন যারপরনাই বিপর্যস্ত হয়, এ কথা অনস্বীকার্য। ভারতের জনসংখ্যা কত? এই সহজ প্রশ্নের কিন্তু সহজ উত্তর আজ নেই।

প্রবন্ধে তথ্যের অপ্রতুলতা এবং সীমান্তবর্তী জেলার জনবিন্যাস নিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা রয়েছে। সে এক জটিল বিষয়। কিন্তু আজকের ভারতের মোট জনসংখ্যা কত? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর কি আছে? বিভিন্ন জায়গায় এই বিষয়ে খোঁজাখুঁজি করলে রাষ্ট্রপুঞ্জকে উল্লেখ করে কিছু তথ্য মেলে। যেমন, আনুমানিক ১৪৬ কোটি। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে দেশে জনগণনা তো হয়নি। তা হলে, লোক ভাবতেই পারে এটা নিশ্চয়ই ২০১১-র জনগণনা তথ্যের উপর ভিত্তি করে বার করা গাণিতিক ফল। এই গাণিতিক ফলকে সমীহ করেও প্রশ্ন থেকেই যায় যে, সরকারও কি জানে ভারতে কত জন মানুষ বসবাস করেন? যদি এটি ঠিকঠাক না জানা থাকে তা হলে বিভিন্ন নীতির ক্ষেত্রে কী ভাবে নিরূপণ করা যাবে কার, কী, কতটা দরকার?

সঠিক তথ্য না থাকার বোধ হয় বেশ কিছু সুবিধাও আছে। আর সেই সুবিধা পুরোপুরি ভাবে নেওয়ার চেষ্টা করছে কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ। আমার ঘরে বসত করে কয় জনা— সে বিষয়ে সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে একটা সুস্থির পরিকল্পনা করা যেতে পারে। তবে সঠিক তথ্য চেপে লাভ তোলার ইচ্ছে থাকলে অবশ্য অন্য কথা।

মানস ভৌমিক, বেলুড়, হাওড়া

দুর্গা আরাধনা

স্বাতী ভট্টাচার্যের ‘মায়ের গল্প, গল্পের মা’ (রবিবাসরীয়, ১৪-৯) পড়ে মন ভাল হয়ে গেল। প্রবন্ধকার বেদজ্ঞ অধ্যাপক লোকনাথ চক্রবর্তীর দেবী দুর্গা সম্পর্কিত বইটির কথা উল্লেখ করেছেন। প্রসঙ্গত, মনে পড়ে যাচ্ছে মরমীয়া বেদভাষ্যকার শ্রীমৎ অনির্বাণের লেখা-পত্রে ফুটে ওঠা দুর্গাতত্ত্বের কথা। সেই সঙ্গে শ্রী অরবিন্দরচিত দুর্গাস্তোত্রটির কথাও। সেই বিপ্লবী অরবিন্দ, যাঁকে লিখতে হয়েছিল— আমার জন্য রামকৃষ্ণই ব্যক্তিগত ভাবে এসেছিলেন এবং আমাকে প্রথম এই যোগের দিকে পরিচালিত করেছিলেন। আলিপুর-জেলে বিবেকানন্দ আমাকে সেই জ্ঞানের ভিত্তি দিয়েছিলেন যা আমাদের সাধনার বনিয়াদ...।

দেবী অসুরবধ করছেন প্রসন্নবদনে। মুখে কোনও ক্রূরতার, নিষ্ঠুরতার ছাপ নেই। কারণ নিছক হত্যা নয়, বরং অসুরবৃত্তির রূপান্তর ঘটিয়ে চেতনার স্ফুরণই মূল লক্ষ্য। সাধক দুর্গামূর্তি সামনে রেখে ক্রমে অন্তরে মূর্তিত্যাগ করে নিজ চেতনার বিস্ফারণ ঘটাবেন কাম-ক্রূরতা ছেড়ে প্রেম-শৌর্যে— এটাই আসল সাধনা। ব্রহ্মশক্তির প্রতীকী পুজো। আজীবন গীতোক্ত নিষ্কাম কর্মযোগ। বেদান্ত ও তন্ত্রের ধারণা এখানে শক্তিপুজোয় মিলেমিশে গিয়েছে। নীচের সূত্রগুলি লক্ষ করা যাক। নন্দা= বালিকা= ষষ্ঠী= অন্নময় কোশ; ভদ্রা= কিশোরী= সপ্তমী= প্রাণময় কোশ; জয়া= তরুণী= অষ্টমী= মনোময় কোশ; রিক্তা= যুবতী= নবমী= বিজ্ঞানময় কোশ; পূর্ণা= সমর্থা (মাতৃভাবাপন্না) যুবতী= দশমী= আনন্দময় কোশ।

এই জন্য শুরুতে কুমারীপূজা আর নবপত্রিকার (উর্বরতা) স্মরণ বিধান। মানবচৈতন্যের চরমপ্রসারিত অবস্থা— যাকে প্রাচ্যদর্শনে ‘ব্রহ্ম’ (বৃংহ+মন, বৃহদর্থে) আখ্যা দেওয়া হয়েছে— তার সঙ্গে নির্ভয়ে একাত্ম হয়ে জগৎ সম্বন্ধে মূল রহস্য অবগত হতে চাওয়া— যে কোনও উৎসবের (উৎ+সবন) প্রকৃত উদ্দেশ্য। তাতে যথার্থ শামিল হতে পারলে পুরুষ-প্রকৃতি বিবেক (দেহপুরে শায়িত অজর অমর আত্মা এবং মায়ারূপী নশ্বর বিশ্বচরাচরের বিভেদজ্ঞান) জনিত সচ্চিদানন্দময় ব্রহ্মস্বাদ আস্বাদন করা যায় মনে মনে, রসে-বশে থাকা যায় আজীবন। মহৎ এষণা(মহিষ) যুক্ত প্রাণ (বা অসু) সম্বলিত পশু (মহিষাসুর) তথা জীব যদি দুর্দমনীয় অসুরবৃত্তি বা ক্ষুদ্র অহংবোধের তাড়নায় পরাভব স্বীকার না করে ধ্যানযোগে চেতনার উত্তরণ ঘটিয়ে মহেশ (বা পশুপতি শিব) হতে নিরন্তর প্রয়াস পায়, তবে সে নিজেই এক দিন দুর্গাগতিপ্রাপ্ত মহিষাসুরমর্দনকারী হয়ে উঠতে পারে। এটাই সংক্ষেপে দুর্গা-আরাধনা (ব্রহ্মপ্রাপ্তির দুর্গম চেতনার স্তর অতিক্রমণ) তত্ত্ব।

ঋতব্রত মিত্র, কলকাতা-৪৭

দুর্ব্যবহার

কলকাতার দক্ষিণে রামগড়ের নিউ রায়পুর অঞ্চলে একটি নামকরা বহুজাতিক ই-কমার্স সংস্থার কিছু ডেলিভারি বয়ের আচরণ খুব খারাপ। তাঁরা সব সময় এক টাকা বা দু’টাকা খুচরোর জন্য গ্রাহকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। আবার নোটের পরিবর্তে খুচরো পয়সা দিলে সেটি নিতে অস্বীকার করেন। অনলাইনে কোনও জিনিস কেনার পর নিয়ম মেনে বদল করার সময় এঁরা নানা অজুহাত দেখিয়ে সেটি নিতে অস্বীকার করেন এবং বচসা শুরু করে দেন। যে-হেতু ডেলিভারি বয়দের আইডি কার্ড থাকে না এবং নাম জিজ্ঞাসা করলে তাঁরা বলতে চান না, তাই সংশ্লিষ্ট ডেলিভারি বয়ের নামে অভিযোগ জমা দেওয়া সম্ভব হয় না।

কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, তাঁরা অবিলম্বে প্রত্যেক ডেলিভারি বয়ের জন্য সচিত্র পরিচয়পত্র দেওয়ার ব্যবস্থা করুন, যাতে ক্রেতাদের নির্দিষ্ট ব্যক্তির নামে অভিযোগ জানাতে সুবিধা হয়।

অরুণ গুপ্ত, কলকাতা-৮৪

নরক-যন্ত্রণা

পূর্ব রেলের দমদম জংশন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। কিন্তু বর্তমানে যাত্রীদের দমদম রোড থেকে মেট্রো, চক্র, সারফেস রেল ধরা ও সহজে যাতায়াত একপ্রকার অসম্ভব। এর কারণ বেআইনি রাস্তা দখল, অপরিকল্পিত স্টেশনের রাস্তাঘাট এবং সব সময় জল জমে থাকা। যাত্রীরা রোজ নরক-যন্ত্রণা ভোগ করছেন। নজরদারির অভাব স্পষ্ট। দরকার দ্রুত আধুনিক সুরাহা ও উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা। প্রদীপ কুমার দাস, কলকাতা-৩০

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy