‘গভীর লজ্জা’ (১৬-৯) সম্পাদকীয়তে পশ্চিমবঙ্গে ২০২৩-২৪ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা দু’বছর আগের, অর্থাৎ ২০২১-২২ সালের অনুরূপ সংখ্যার চেয়ে ১ লক্ষ ৩৮ হাজার কম বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিষয়টি গভীর পরিতাপেরও। কারণ হিসাবে, সরকারি স্কুলে উপযুক্ত সংখ্যক শিক্ষকের অভাবে অভিভাবকদের বেসরকারি স্কুলের দিকে ঝোঁকের কথা, অন্য দু’-একটি বিষয়ের সঙ্গে উল্লিখিত হয়েছে। মনে হয়, অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ অনুল্লিখিত রয়ে গেছে— রাজ্যে ক্রমহ্রাসমান জন্মহার। ভারত সরকারের রেজিস্ট্রার জেনারেল-এর সদ্যপ্রকাশিত ‘স্যাম্পল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম’-এর স্ট্যাটিস্টিক্যাল রিপোর্টে (২০২৩) এই জন্মহার হ্রাসের প্রবণতার এক চিত্র পাওয়া যায়: ২০১৮ সালে রাজ্যে যেখানে হাজার অধিবাসী-পিছু বাৎসরিক জন্মহার ছিল ১৫.০, ২০২৩-এ তা নেমে দাঁড়ায় ১৪.০-য়। ৫ বছরে হ্রাস ১.০, যা সরলরৈখিক হিসাবে দাঁড়ায় বছরে হাজারে ০.২। উল্লেখ্য, রাজ্যে এই জন্মহার ২০০১ সালে ছিল ২০.৬, ২০০৬ সালে ১৮.৬ আর ২০১৮ সালে ১৫.০।
রাজ্যের জনসংখ্যা সংশ্লিষ্ট কালে যদি ১০ কোটি ধরা হয় (ভারতে এ যাবৎ প্রচলিত রীতি অনুসারে ২০২১ সালে অনুষ্ঠিতব্য জনশুমারি কোনও রাজ্যেই হয়নি), ২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গে হাজার অধিবাসী-পিছু ১৫ হিসাবে ১৫ লক্ষ শিশু জন্মেছে, পরের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে হাজার অধিবাসী-পিছু ০.২ কমে ১৪ লক্ষ ৮০ হাজার, ২০২০ সালে আরও ২০ হাজার কমে ১৪ লক্ষ ৬০ হাজার। এ ভাবে কমতে কমতে ২০২৩ সালে ১৪ লক্ষ শিশুর জন্ম হয়েছে। এটা অবশ্য খুব সরলীকৃত অনুমান।
এই সরলচিত্র অনুসারে ২০২১-২২ সাল-অন্তে প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হলে ২০২২-২৩ সালে ২০ হাজার কম শিক্ষার্থী প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। ২০২৩-২৪ সালের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী সংখ্যা আরও ৪০ হাজার কম দাঁড়ায়। দু’বছরে প্রাথমিকে শিক্ষার্থী সংখ্যা হ্রাসের পরিমাণ ৬০ হাজার। এই হিসাবে নতুন শিক্ষার্থীদের জন্মবছর দু’টিতে (২০১৬, ২০১৭) রাজ্যে জন্মহার হয়তো ২০১৮ বা পরবর্তী বছরগুলির তুলনায় বেশি বই কম ছিল না। জন্মহারের হ্রাসের মাত্রা আরও কিছু বেশি ছিল। কমবয়সিদের অকালমৃত্যু এখানে ধরা হয়নি— ৫-১০ শতাংশ নবজাতক ৬ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই মারা যায়। যা হোক, এই ৬০ হাজার সংখ্যাটি যথেষ্ট ইঙ্গিতবহ মনে হয়। ১ লক্ষ ৩৮ হাজারের মধ্যে ৬০ হাজার (প্রায় ৪৪ শতাংশ) নিশ্চয় গুরুত্বের দাবিদার। অবশিষ্টরা বেসরকারি স্কুলে পড়ে, বা স্কুলছুট। অন্য রাজ্যে চলে যাওয়া বা অন্য রাজ্য থেকে আসা শিক্ষার্থীদের নিট ফল উল্লেখযোগ্য মনে হয় না।
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকার কী হেতু বেসরকারি স্কুলের শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষার্থী সংখ্যার তথ্য সংগ্রহ করে না, বোধগম্য নয়। এদের প্রতি সরকারের কি কোনও দায় নেই? এ সব তথ্যের অভাবে সরকারের ‘স্কুলছুট সংখ্যা শূন্য’-র দাবি গ্রহণযোগ্য হতে পারে কী ভাবে?
আনন্দ পাঠক, কলকাতা-৬৫
পরিচ্ছন্নতা চাই
দক্ষিণ ২৪ পরগনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপনগর বারুইপুর। এই শহরের বারুইপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে প্রতি দিন হাজার হাজার রোগী ভিড় করেন চিকিৎসার আশায়। অথচ, এই হাসপাতালের উল্টো দিকে যা দৃশ্যমান, তা যেন স্বাস্থ্য পরিষেবার নামে এক ব্যঙ্গচিত্র।
একটি হাসপাতালের সামনের চিত্র যেমন পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকর ও সুপরিকল্পিত হওয়া উচিত, বারুইপুর হাসপাতালের ক্ষেত্রে তা ঠিক উল্টো। হাসপাতালের মূল প্রবেশপথের একেবারে উল্টো দিকেই নজরে পড়ে ময়লার স্তূপ— রোজকার পচা-গলা আবর্জনা, প্লাস্টিকের ব্যাগ, বর্জ্য, এবং তার আশপাশে উড়তে থাকা মাছি; কুকুর, অসহনীয় দুর্গন্ধ। কে বা কারা কী ভাবে এই জায়গাটাকে ভাগাড়ে পরিণত করেছে, তা জানা যায় না, ফলে পরিষ্কার করার দায়ও কারও নেই। রোগীদের শরীরের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের মনকেও স্বস্তি দেওয়াও জরুরি। অথচ, এখানে এক দিকে হাসপাতালের কোলাহল আর অন্য দিকে আবর্জনার স্তূপ থেকে আসা বিষাক্ত গন্ধ— এই চিত্র কি কোনও সভ্য সমাজে মানায়? এই ছবি শুধু অস্বাস্থ্যকর নয়, স্বাস্থ্য পরিষেবায় এক প্রকার প্রশাসনিক উদাসীনতারও প্রতিরূপ।
আমরা আমাদের শহরের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নত করার যে দাবি জানাই, তা শুধু ওষুধপত্র, ডাক্তার, বেড কিংবা অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য নয়, পরিবেশের ক্ষেত্রেও। অবিলম্বে এই ভাগাড়টি হাসপাতালের সামনে থেকে সরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা হোক হাসপাতাল চত্বরের। তবেই না সুস্থতার আশ্বাস পাবেন রোগীরা!
আবির সরকার, বারুইপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
বাস চাই
বেশ কয়েক মাস হল প্রান্তিক স্টেশন কবি সুভাষ-এর প্ল্যাটফর্মের স্তম্ভে ফাটল দেখা দেওয়ায় স্টেশনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে, যাঁরা কবি সুভাষ স্টেশনে নেমে মেট্রো ধরে দক্ষিণ কলকাতায় খুব সহজে যাতায়াত করতেন, তাঁদের খুবই অসুবিধা হচ্ছে। এর মধ্যে সব মেট্রো সব সময় শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্তও যাতায়াত করছিল না, টালিগঞ্জ তথা মহানায়ক উত্তমকুমার থেকেই যাত্রা শুরু বা শেষ হচ্ছিল। সোনারপুর স্টেশনে নেমে বেশির ভাগ যাত্রীকে অটোর উপরে নির্ভর করতে হচ্ছে মেট্রো ধরার জন্য। অফিস বা স্কুল-কলেজের ব্যস্ত সময়ে দীর্ঘ লাইন পড়ে। সোনারপুর থেকে টালিগঞ্জ বা হাওড়া যাওয়ার বাস আজ অবধি চালানো গেল না। একটি বাস শুধু টালিগঞ্জ হয়ে জোকার দিকে যায়।
তাই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তথা পরিবহণ মন্ত্রীর কাছে আবেদন, অবিলম্বে সোনারপুর-গড়িয়া-এসপ্লানেড হয়ে হাওড়া পর্যন্ত একটি বাস রুটের ব্যবস্থা করা হোক।
সুকুমার মুখোপাধ্যায়, কলকাতা-১৪৯
খন্দময় রাস্তা
গত অগস্টে ঘুরে এলাম শান্তিনিকেতন। বিশ্বভারতীতে আশ্রম দেখার জন্য প্রতি রবিবার দেড় ঘণ্টার ‘হেরিটেজ ওয়াক’ চালু হয়েছে কয়েকটি ‘স্লট’-এ। টিকিটের দাম মাথাপিছু ৩০০ টাকা। আমার ও আমার সতীর্থদের পক্ষে এত টাকা দিয়ে হেরিটেজ ওয়াক করা সম্ভব হয়নি। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করলে ভাল হয়। আরও পীড়াদায়ক ছিল আশ্রমদ্বারে পৌঁছনোর রাস্তাটি। অজস্র খানাখন্দে ভরা রাস্তায় যে কোনও মুহূর্তে টোটো উল্টে দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। খোয়াই ও শালবীথির ভিতর দিয়ে যে পথ চলে গেছে সোনাঝুরির দিকে, তা ছিল আরও খারাপ। বাইরে থেকে যাঁরা আসেন, তাঁদের কাছে রাস্তার এমন দুরবস্থা ভাল বার্তা দেবে না। প্রশাসন কি একটু নজর দেবে?
পার্থ দত্ত, কলকাতা-১০২
অস্পষ্ট লেখা
নরম পানীয় এবং মিনারেল ওয়াটারের বোতলের এক্সপায়ারি ডেট বোতলের গলার কাছে উল্লেখ করা থাকে। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তারিখটি এত হালকা করে ছাপা হয় যে তা ঠিকমতো বোঝা যায় না, বিশেষত স্থানীয় সংস্থার তৈরি পানীয়ের ক্ষেত্রে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, খাদ্য ও পানীয় সংক্রান্ত নিয়মাবলি ঠিকমতো মানা হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ানো হোক।
অভিজিৎ ঘোষ, নয়াচর, পূর্ব মেদিনীপুর
জোরালো আলো
পুজো এলেই শহর আলোয় ঝলমলিয়ে ওঠে। গবেষণা বলে, এত তীব্র আলোয় নিশাচর প্রাণী ও পাখিদের খুব অসুবিধা হয়। অথচ, কারও ভ্রুক্ষেপ নেই। প্রকৃতির স্বার্থে এ বিষয়ে ভাবনা জরুরি।
সৌরনীল দাস, কলকাতা-৩২
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)