Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: ‘নিরীহ’ কাকে বলে

আনন্দবাজার পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় একটি সংবাদের শিরোনাম (‘কাশ্মীরে বাহিনীর গুলিতে নিহত ৭ নিরীহ’, ১৬-১২) আর ছবি বড়ই দুঃখজনক। আমাদের দেশের সেনাবাহিনী কাশ্মীরে নিজেদের জীবন বিপন্ন করে বিদেশি সাহায্যপুষ্ট দেশদ্রোহী উগ্রপন্থী দমনে নিয়োজিত।

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

আনন্দবাজার পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় একটি সংবাদের শিরোনাম (‘কাশ্মীরে বাহিনীর গুলিতে নিহত ৭ নিরীহ’, ১৬-১২) আর ছবি বড়ই দুঃখজনক। আমাদের দেশের সেনাবাহিনী কাশ্মীরে নিজেদের জীবন বিপন্ন করে বিদেশি সাহায্যপুষ্ট দেশদ্রোহী উগ্রপন্থী দমনে নিয়োজিত। তাদের উদ্দেশে যারা পাথর ছোড়ে, আপনার পত্রিকা তাদের ‘নিরীহ’ বলে কী করে? এর পর হয়তো গুন্ডা মস্তানদেরকেও ‘নিরীহ’ আখ্যা দেবেন। কারণ তারা দেশের পুলিশের বিরুদ্ধে বন্দুক ধরে, বোম মারে!

দেশদ্রোহকে সমর্থন করে দেশের ও বিদেশের বাংলাভাষী মানুষের কাছে কী বার্তা পাঠাচ্ছেন? আপনার পত্রিকা যদি পাক অধিকৃত মুজফ্ফরাবাদ থেকে প্রকাশিত হত, কিংবা হুরিয়ত কনফারেন্সের ‘বাংলা ভাষার পত্রিকা’ হিসেবে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হত, তা হলে কিছু বলার ছিল না। কিন্তু আনন্দবাজার আমাদের গর্বের পত্রিকা। আপনারা বহু দিন ধরেই বাংলা ভাষাকে বহমান নদীর মতো পরিবর্তনের পথে নিয়ে চলেছেন। তা ‘বানান’ হোক বা ‘ব্যাকরণ’। এক জন দেশদ্রোহীর ছবি ছাপিয়ে তাকে ‘নিরীহ’ বলা আসলে বাংলা ভাষার অপমান। ভাষা কেবল বানান ভুল আর ব্যাকরণগত ত্রুটি সংশোধনেই সিদ্ধ হয় না। সঠিক শব্দ প্রয়োগেরও যথেষ্ট প্রয়োজন আছে।

বাঙালির দেশপ্রেম, ভারতবর্ষের জন্য বাঙালির আত্মবলিদান, এবং তার ভাষা-প্রেমকে উপেক্ষা করবেন না, আনন্দবাজার পত্রিকার পাঠক হিসেবে এই আশা রাখি।

বিভাস রায় চৌধুরী

হলদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর

আপত্তিকর

কাশ্মীরে সেনাবাহিনীর জওয়ানেরা প্রায় প্রতি দিনই উগ্রপন্থীদের গুলিতে আহত বা নিহত হচ্ছেন। ওই উগ্রপন্থীদের আশ্রয় প্রদান এবং সংঘর্ষের সময় ঢাল হিসাবে কাজ করে বিচ্ছিন্নতাবাদী কিছু কাশ্মীরি যুবক। তারা প্রায়শই সেনা অভিযানের সময়, সেনাদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে এবং উগ্রপন্থীদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করে। এ রকম পরিস্থিতিতে আপনাদের পরিবেশিত সংবাদ জাতীয়তাবাদ-বিরোধী শক্তি হিসেবে কাজ করবে না তো?

তা ছাড়া ভারত-সহ বিশ্বের নিরপেক্ষ মুসলিমরাও এই সংবাদের প্রেক্ষিতে মনে করতে পারেন যে, ভারতের সেনাবাহিনী মুসলিম নিধনে নিয়োজিত। এই ধরনের সংবাদ প্রচারে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি কলঙ্কিত হয়।

খগেন্দ্র নাথ মণ্ডল

সোনারপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

ক্যামেরাটা...

তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর থেকে মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় জেলায় যত প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন, আগে কোনও মুখ্যমন্ত্রীর আমলে সেটা হয়নি। জেলার প্রতিটি ব্যাপারে তাঁর নজর আমাদের অবাক করে। প্রশাসনিক আধিকারিকরা সবাই তটস্থ। টেলিভশনের দৌলতে আমজনতা সরাসরি প্রশাসনিক বৈঠক দেখবার সুযোগ পান।

কিন্তু একটা ব্যাপার খুবই দৃষ্টিকটু লাগে। অনেক সময় সরকারি আধিকারিকরা, দলের নেতৃস্থানীয়রা, যাঁরা বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজের মাথায় আছেন, তাঁদের মাননীয়া যে ভাবে বকাবকি করেন, সেটাতে আমজনতা আনন্দ পেলেও, ভুক্তভোগী খুবই অস্বস্তিতে পড়েন। জানি, মুখ্যমন্ত্রী যেটা করেন মানুষের ভালর জন্যই, কিন্তু এক জন সরকারি আধিকারিককে যদি সর্বসাধারণের সামনে বকাঝকা শুনতে হয়, সেটা শোভন নয়। বদ্ধ ঘরে যেটা বলা যায়, সেটা যদি খোলা জায়গায় আমজনতার সামনে বলা হয়, তা আধিকারিকের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করে। তাই মাননীয়ার কাছে আবেদন, প্রশাসনিক বৈঠক চলছে চলুক, শুধু সরাসরি সম্প্রচারটা বন্ধ করে দিন।

সমীর বরণ সাহা

কলকাতা-৮১

পুরানো সেই

‘কো-অর্ডিনেশন নেতা বদলি’ (৪-১২) সংবাদে প্রকাশ,, নবান্নে বিক্ষোভ দেখানোর অপরাধে কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক, দু’জন সহকারী সম্পাদক, যুগ্ম-সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, অফিস সেক্রেটারি-সহ মোট ১৪ জনকে বদলি করা হয়েছে। বিপুল পরিমাণ মহার্ঘ ভাতা বাকি, বেতন কমিশনের সময়সীমা ক্রমাগত বাড়ানো হচ্ছে— এর প্রতিবাদে আন্দোলন করার শাস্তি এই বদলি। সংবাদটি পড়ে একটি কথাই মনে এল।

এই সরকার যিনি চালান, তিনি যখন বিরোধী নেত্রী, তখন এক বার বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের সামনে চলে গিয়েছিলেন এবং পুলিশ তাঁকে জোর করে সরিয়ে দেয়। সেই পুলিশি অত্যাচার নিয়ে তিনি আজও সরব। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর ঘর থেকে বহু দূরে বিক্ষোভ দেখানোর শাস্তি যদি উত্তরবঙ্গে বদলি করা হয়, তা হলে তাঁকে সে দিন সরিয়ে দেওয়াও তো সঠিক পদক্ষেপ ছিল, তাই না? না কি, নেত্রী এবং সরকারি কর্মচারী এক গোত্রে পড়েন না?

সরকারে এলে প্রায় সব নেতাই নিজেদের পুরনো অবস্থান ভুলে যান। আমাদের মনে আছে বিধানসভা ভাঙচুরের কথা, এসপ্ল্যানেডের মতো জায়গায় বহু দিন ধরে অনশন অবস্থানের কথা। পূর্বতন সরকার কিন্তু এমন কোনও দমনমূলক ব্যবস্থা নেননি, সেই গণতান্ত্রিক সৌজন্য তাঁদের ছিল। এখন তো প্রতিবাদ মানেই চক্রান্ত, সমালোচনা মানেই কুৎসা। পরিবর্তন একেই বলে!

শুভেন রায়

কলকাতা-৫০

সত্যি বটে

রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে সত্যি কথা এ দেশে বড় দুর্লভ। সম্প্রতি রাজ্য প্রশাসনের কান্ডারির মুখে সেই বিরল ও অমোঘ সত্যি কথাটি শোনা গিয়েছে। উন্নয়ন হোক বা পরিষেবা— কিছু পেতে হলে তাঁর সঙ্গে থাকতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট ঘোষণা, ‘‘...স্কলারশিপ পেতে, কন্যাশ্রী-রূপশ্রী পেতে, সবুজসাথীর সাইকেল পেতে রাজ্যের কাছেই আসতে হবে, আমার কাছে আসতে হবে।’’

(‘কিছু পেতে হলে সঙ্গে থাকুন, বললেন মমতা’, ৪-১২)।

দুর্লভ এই সত্যি বলার জন্য আমরা অকুণ্ঠ চিত্তে মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ না জানালে নিজেরাই বিবেকের কাছে ছোট হয়ে যাব। মাত্র কয়েকটি কথায় তিনি নিজের ও তাঁর সরকারের দর্শন, নীতি, নির্বাচনী রাজনীতি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, এই দুনিয়া চলছে ‘দিবে আর নিবে মিলাবে মিলিবে, যাবে না ফিরে’ তত্ত্বে ভর করে। মানুষের মনের অবদমিত লোভকে উস্কে দিয়ে তাদের মেরুদণ্ড ন্যুব্জ করে দিতে পেরে— এই রাজ্যে ক্ষমতার স্থায়িত্বের পথ তিনি মসৃণ করার চেষ্টা করছেন। এই লক্ষ্যের পথে যারা বাধা, অর্থাৎ যারা তাঁর সঙ্গে নেই, মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন: তিনিও তাদের সঙ্গে নেই।

বহু দিন ধরে প্রাপ্য বকেয়া ডিএ নিয়ে নবান্নে কয়েক জন সরকারি কর্মী স্লোগান দিয়েছিল। সরকারি কর্মীদের বিভিন্ন আইনি রক্ষাকবচের কথা মাথায় রেখেই হয়তো তিনি তাদের চাকরি নট করে দিতে পারেননি। কিন্তু আন্দোলনকারী ১৪ জন কর্মীকে রাজ্যের দূরপ্রান্তে বদলি করে দিয়েছেন। এটা কি প্রতিহিংসা?

বিভিন্ন অন্যায়ের সঙ্গে আপস করে নিজের জীবন মসৃণ করার তা়ড়নায় ঘোরতর অন্যায়গুলি সহন করে নেওয়াও এই সমাজে ক্রমশই সহজ, স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। রাজনৈতিক নেতানেত্রীরা সমাজের এই মানসিকতাকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন। এই রাজ্যে এই ধান্দাবাজির সংস্কৃতিকে দ্রুত প্রতিষ্ঠা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

প্রণব রাহা

দুর্গাপুর-৪

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

ভ্রম সংশোধন

‘ব্যাঙ্ক বিতর্কে অতীতে ডুব, প্রশ্ন তবুও’ শীর্ষক সংবাদ প্রতিবেদনে (ব্যবসা, পৃ ১০, ১৯-১২) ব্যবহৃত ছবি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির। কিছু সংস্করণে ডোনাল্ড ট্রাম্প লেখা হয়েছিল। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Civic Issues Civil Society Politics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE