Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: এটা কি ভাল হচ্ছে?

রাসেলকে দেখে মনে হচ্ছে, বোলার কী বল করলেন, তাতে কিছুই এসে যায় না। ওঁর ফুটওয়ার্ক ভুল হচ্ছে, শরীর ভুল অবস্থানে আছে, কিন্তু ছক্কা মারছেন।

শেষ আপডেট: ০২ মে ২০১৯ ০০:৫০

এই আইপিএল-এ আন্দ্রে রাসেলের খেলা দেখে অনেকেই মুগ্ধ। কিন্তু হাততালি দেওয়ার পাশাপাশি আমাদের একটা কথা ভাবতে হবে, ক্রিকেট খেলাটা কিসের, দক্ষতার, না গায়ের জোরের? বোলার যখন বল করেন, সেই বল বুঝে, তার পর ব্যাট, প্যাড, মাথা সব কিছু লাইনে এনে, ঠিক স্ট্রোক নির্বাচন করে, ফিল্ডারদের মধ্যে ব্যবধান হিসেব করে, যে মার, তা-ই তো ক্রিকেটের মার। গায়ে অতিমানুষের মতো শক্তি আছে বলে যে কোনও বলে যে কোনও রকমে ব্যাটটা খুব জোরে হাঁকড়ে দিলাম, এ তো এক জন ব্যাটসম্যানের কাজ নয়।
অনেকে হয়তো বলবেন, এ তো তা হলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বিরুদ্ধেই কথা বলা হচ্ছে, কারণ ধ্রুপদী ক্রিকেটের সঙ্গে তার তো মূল পার্থক্যই এখানে যে, কেমন করে খেলব সে সব চুলোয় দিয়ে, যে ভাবে হোক রান করব— তা-ই এই নতুন ক্রিকেটের মূল মন্ত্র ও আবেদন। কিন্তু মন দিয়ে আইপিএল দেখলে বোঝা যাবে, অধিকাংশ ব্যাটসম্যানই ক্রিকেটীয় শটই খেলছেন।

রাসেলকে দেখে মনে হচ্ছে, বোলার কী বল করলেন, তাতে কিছুই এসে যায় না। ওঁর ফুটওয়ার্ক ভুল হচ্ছে, শরীর ভুল অবস্থানে আছে, কিন্তু ছক্কা মারছেন। কোনও বলে টাইমিং ঠিক হচ্ছে না, ছক্কা হচ্ছে। কোনও মারে ব্যাটের ঠিক জায়গায় লাগছেই না বল, তাতেও ছক্কা হচ্ছে। অর্থাৎ ওঁর গায়ে যা অবিশ্বাস্য জোর, তাতে কোনও মতে ব্যাটটা ঠেকিয়ে দিতে পারলেই বলটা বাউন্ডারির বাইরে উড়ে যাবে।
টেনিসেও বর্গ-ম্যাকেনরো’র যুগের পরে একটা যুগ এল, যখন প্রচণ্ড শারীরিক শক্তির একটা প্রধান ভূমিকা চলে এল। তার মানে এই নয় যে ফেডেরার বা নাদালের স্কিল কিছু কম, কিন্তু মিরোস্লাভ মেসির বা রমেশ কৃষ্ণনদের যে কারুকাজ, তা অবলুপ্ত হয়ে গেল।
ভয় হয়, ক্রিকেটের মতো একটা শৈল্পিক খেলায় যদি রাসেল অনেকের অনুপ্রেরণার খেলোয়াড় হয়ে ওঠেন (যা অত্যন্ত স্বাভাবিক), হয়তো জিম-এ গিয়ে প্রকাণ্ড পেশি বানানোতেই তাঁরা বেশি মনোযোগী হয়ে পড়বেন। নিশ্চয়ই পেশি বা জোর বা ফিটনেসের প্রবল ভূমিকা আছে ক্রিকেটে, তবু ক্রিকেট আর যা-ই হোক , কুস্তি বা ভারোত্তোলন নয়। সেটা আমাদের বুঝতেই হবে।

রমেশ সরকার

কলকাতা-৬৮

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তথ্যের সত্য

‘তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের আগেই যা ক্ষতি হওয়ার, হয়ে যায়’ (‘এমন যদি সত্যি হত, আহা’, ২০-৪) এই দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য দায়িত্ব নিতে হবে। তথ্যের বাজারে তথ্য সরবরাহের অধিকার এবং সেই মতো পরিকাঠামো ও ব্যবস্থা যদি আটকাতে না পারা যায় তবে তা নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। এখন প্রশ্ন, কে দায়িত্ব নেবে?

প্রথমেই রাষ্ট্র। যত ক্ষণ রাষ্ট্র নামক সংগঠন আছে তত ক্ষণ রাষ্ট্র, শাসক সরকার ও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দলকে গুরুদায়িত্ব নিতে হবে। দুই, সমাজ। সমাজে নানা সংগঠনকে দায়িত্ব নিতে হবে। তিন, গণমাধ্যম। গণমাধ্যমকে তথ্যের বিচার করতে হবে। চার, ব্যক্তিমানুষ। ব্যক্তিমানুষকে নিজেকে জাহির করার লোভ সামলাতে হবে। রাজনৈতিক নেতা বা সরকারি মন্ত্রী প্রথমেই ব্যক্তিমানুষ। এ ক্ষেত্রে তাঁর দায়িত্ব অনেক। প্রতিক্ষেত্রে তথ্য যাচাই করার জন্য পরিশ্রম করতে হবে। উস্কানিমূলক তথ্য বিচার করে পরিহার করতে হবে। এর জন্য সময় দিতে হবে। ক্ষমতার সিঁড়িতে ওঠার ধাপ ব্যক্তিমানুষ থেকে রাষ্ট্রে পৌঁছলে উচ্চতম অর্থাৎ রাষ্ট্রকে প্রথমে দায়িত্ব নিতে হবে। এর প্রভাব এর পর ছড়িয়ে পড়বে সর্বনিম্ন ব্যক্তিমানুষের স্তরে। গণতান্ত্রিক আস্থার আপাতত এটাই বাস্তব চিত্র।

এখন প্রথমেই মুশকিল হল— অত সময় নেই। তথ্য পেলাম, ছড়িয়ে দিলাম। সেটা আদতে আত্মঘাতী হবে কি না ভাববার, বিবেচনা করার ফুরসত নেই। স্বাধীনতার এত সাঙ্ঘাতিক ও মর্মান্তিক অপব্যবহার অতীব দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু কেন? লেখক লিখেছেন, এই মিথ্যে নির্মাণের লক্ষ্য দ্বিমুখী— রাজনৈতিক প্রচার ও ব্যবসায়িক লাভ। আসলে এর মূলে রয়েছে অস্তিত্বের সঙ্কট। রাষ্ট্র, সামাজিক সংগঠন, রাজনৈতিক দল, ব্যক্তিমানুষ সবাই নানা মাত্রা ও স্তরে অস্তিত্বের সঙ্কটে ভুগছেন। প্রথমে অর্থনৈতিক অস্তিত্ব। এর পর সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, আধ্যাত্মিক ইত্যাদি নানা ধরনের অস্তিত্ব। এ সব নিয়ন্ত্রণ করলেই তথ্যের সততা অস্তিত্বকেও সুস্থ, স্বাভাবিক, সুন্দর, সহনশীল করে তুলবে। অনেকেই জানেন এ সব তবুও একসঙ্গে সব ভুলে যাচ্ছি এটাই এখন সব থেকে বড় সত্য। কিন্তু সময় আছে কি সময় নষ্ট করে এই সামান্য তথ্য যাচাই করার?

শুভ্রাংশু কুমার রায়

ফটকগোড়া, হুগলি

জেগে উঠল ঘড়ি

‘৪০ বছর পর জেগে উঠল...’ (১৩-৪) শীর্ষক বিদ্যাসাগরের স্মৃতিধন্য দেওয়াল ঘড়ি সংক্রান্ত সংবাদ পরিবেশনের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। এই প্রসঙ্গে কিছু তথ্য সংযোজন করতে চাই।

প্রথমেই জানাই একটি তথ্যভ্রান্তির কথা। বিদ্যাসাগর ঘড়িটা কিনেছিলেন ১৮৭৮ সালে, ১৮৭৪-এ নয়। ১৮৭৮ সালের জানুয়ারি মাসে আমেরিকার অ্যানসোনিয়া ক্লক কোম্পানি ওই ঘড়ির একটি মডেল বাজারে আনে। ওই সময়ই বিদ্যাসাগর সম্ভবত ঘড়িটি কেনেন। অবশ্য ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে ওই কোম্পানি ওই মডেলের ঘড়ি তৈরি বন্ধ করে দেয়। উক্ত ঘড়িটি মনে হয় ১৯২৮ সালে খারাপ হয়। কারণ ঘড়িটির কেসের গায়ে লেখা আছে ওই বছরই ঘড়িটি প্রথম সারানো হয়।

৪০ বছর ধরে ঘড়িটি অচল ছিল বটে, তবে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে জানি, বিংশ শতাব্দীর আশি-নব্বইয়ের দশকে তৎকালীন স্কুল কর্তৃপক্ষ ঘড়িটি সারাতে সচেষ্ট ছিলেন; পরবর্তী কালে প্রধান শিক্ষক দেবব্রত ভট্টাচার্য মহাশয়ের অক্লান্ত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ঘড়িটি জড় পদার্থ রূপেই ছিল।

এই প্রসঙ্গে মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশন (মেন) প্রাক্তনীর (২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাক্তন ছাত্র শিক্ষক অশিক্ষক কর্মীদের মিলিত সংস্থা) বিশেষ ভূমিকার কথা বলতেই হবে। বিগত সরস্বতী পুজোর দিন স্কুলে আমাদের প্রাক্তনীর পরিচালন সমিতির অন্যতম বর্ষীয়ান সদস্য উজ্জ্বল (যার কথা প্রতিবেদনে উল্লিখিত হয়েছে) এবং আরও ক’জন প্রাক্তনীকে নিয়ে ঘড়িটির ব্যাপারে প্রণববাবুর সঙ্গে (ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) কথা বলি। উনি উৎসাহ প্রকাশ করে সম্পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

সে দিন থেকেই উজ্জ্বল চক্রবর্তী আর এক প্রাক্তনী দেবাশিস প্রামাণিককে (ইনিই ঘড়িটি যিনি সারান সেই প্রদ্যোতবাবুকে আবিষ্কার করেন) সঙ্গে নিয়ে এই ব্যাপারে সম্পূর্ণ আত্মনিয়োগ করেন। উক্ত দু’জনের নিঃস্বার্থ বিরামহীন প্রচেষ্টায় ঘড়িটির প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়।

লক্ষ্মীকান্ত ভট্টাচার্য

সভাপতি, মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশন (মেন) প্রাক্তনী

ক্ষমতামত্ত

ভিন্নমতের সহাবস্থান, সংসদে বা রাজ্য বিধানসভায় শাসক দল ও বিরোধী দলের অবস্থানেই, গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটে। কিন্তু কেউ যদি সংসদে সব আসন, বা রাজ্যে যতগুলি আসন সবকটিই চাই বলে আওয়াজ তোলেন, সেটা কি গণতান্ত্রিক মানসিকতার পরিচয়? কেউ অবশ্য বলতেই পারেন, অধিকাংশ আসন চাই সরকার গঠনের লক্ষ্যে। কিন্তু ‘অধিকাংশ’ আর ‘প্রত্যেকটা’ তো এক নয়। সবই চাই বলে মত্ত হয়ে উঠলে, সেটাকে প্রায় স্বৈরতন্ত্রী মনোভাব মনে হতে পারে।

স্বরাজবন্ধু রায়

কলকাতা-৭

মনে হয়

ভোট মরসুমে খবরের কাগজে প্রার্থীদের বিষয় আসয়ের ফিরিস্তিতে স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য দেখে মনে হয়, দেশে মুদ্রাস্ফীতি তেমন হয়নি।

দেবব্রত সেনগুপ্ত

কোন্নগর, হুগলি

Andre Russell আন্দ্রে রাসেল Political Leaders IPL
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy