Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
letters to editor

সম্পাদক সমীপেষু: অশালীন জল্পনা

সৌরভের মতো এক সম্মানিত ব্যক্তিকে ‘ট্রোল’ করার পিছনে এক শ্রেণির রাজনৈতিক মদতপুষ্ট নেট ব্যবহারকারীর ভূমিকা খুবই সক্রিয়। এই প্রবণতা বন্ধ হওয়া উচিত। 

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২১ ২৩:৪০
Share: Save:

আজকাল তারকাদের নিয়ে নেটরাজ্যে এত বেশি জল্পনা হচ্ছে, যা শালীনতার বাইরে চলে যাচ্ছে। ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের আচমকা অসুস্থতা এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে তাঁকে নিয়ে এমন চর্চা শুরু হয়েছে যে, এর ফলে তাঁর রক্তচাপ আরও বেড়ে যেতেই পারে। সুস্থতার পরিবর্তে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। বলা হচ্ছে, সৌরভ বিজেপিতে যোগ দেবেন কি না, জল্পনার আবহেই ২০২১-এর সূচনায় প্রাক্তন অধিনায়ক হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এ সব প্রতিক্রিয়ার ফুলঝুরি ট্রোল ক্রিকেটপ্রেমীদের যথেষ্ট ব্যথিত করেছে। কিছু দিন আগে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অসুস্থতা, মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের সময়েও নেটরাজ্যে তাঁর পরিজনদের নিয়ে বিচিত্র জল্পনা শালীনতার সীমা ছাড়িয়েছিল। এর ফলে পরিবারের সদস্যদেরও বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়, তাঁদের মনের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। আমরা ভেবে দেখি না, তারকারাও রক্তমাংসের মানুষ, এঁদেরও পরিবার-পরিজন আছে। আমরা যে সব মনগড়া কথা ভাইরাল করি, তাতে মানসিক ভাবে চরম আঘাত পেতে পারেন এঁরাও। ঘটনার আকস্মিকতায় কোনও দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

সৌরভের মতো এক সম্মানিত ব্যক্তিকে ‘ট্রোল’ করার পিছনে এক শ্রেণির রাজনৈতিক মদতপুষ্ট নেট ব্যবহারকারীর ভূমিকা খুবই সক্রিয়। এই প্রবণতা বন্ধ হওয়া উচিত।

পরেশনাথ কর্মকার

রানাঘাট, নদিয়া

শর্তহীন স্নেহ

রমাপ্রসন্ন ভট্টাচার্যের নিবন্ধ ‘এই শর্তহীন গ্রহণ ছিল তাঁর ধর্ম’ (৫-১) মা সারদার জগজ্জননী রূপটি তুলে ধরেছে। পৃথিবীতে সমস্ত সম্পর্কের মধ্যে একটা অলিখিত শর্ত থাকে, একমাত্র মা ও সন্তানের সম্পর্কের মধ্যে কোনও শর্ত থাকে না। তাঁর কাছে যারা এসেছে, যারা আসতে পারেনি, সব ভক্তের জন্য মঙ্গল কামনা করে গিয়েছেন মা সারদা। তাঁর সন্তান হওয়ার জন্য কোনও যোগ্যতা লাগে না। তিনি তো নিজ মুখে বলে দিয়েছেন তিনি সাধুরও মা, ডাকাতেরও মা। মা ছেলেদের ভার নিয়েছেন, আর কোনও চিন্তা নেই। শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছিলেন, কোন ছেলের পেটে কী সয়, তা মা সব জানেন। তাই কারও জন্য ঝোল, কারও জন্য ঝাল। মা সারদার অসামান্য বাস্তববুদ্ধি ছিল, তাই সেই আমলেও মেয়েদের বিয়ের জন্য উৎসাহিত না করে নিবেদিতা স্কুলে ভর্তি হওয়ার কথা বলেছেন। বিদেশিনিদের আপন করে নিয়েছেন, আচার-বিচার, জাতপাতকে গুরুত্ব না দিয়ে। গোটা বিশ্বের মানুষ যে তাঁর সন্তান, আর তিনি যে জগন্মাতা।

সর্বানী গুপ্ত

বড়জোড়া, বাঁকুড়া

ভাষা অন্য

ঋজু বসুর “‘চোলায় চোলায়’, ভোটের দশচক্রে ভাষা গো-ভূত’” (৩-১) প্রসঙ্গে কয়েকটি কথা। সত্তরের দশকে সর্বভারতীয় শ্রোতাদের কাছে মুম্বইয়ের ফিল্মি গানের পর যদি ‘গানের বাজার’ বলতে কিছু বোঝাত, তা ছিল বাংলায় পুজোর গান। প্রতি বছর অবাঙালি সঙ্গীতশিল্পীরা হিন্দি ফিল্মের গানের ব্যস্ত রুটিনের মধ্যেও বাংলার জন্যে বিশেষ একটা সময় তুলে রাখতেন। উচ্চাঙ্গ, লঘু সঙ্গীত এবং বাদ্যযন্ত্রে তখন বাংলার শিল্পীরা সারা দেশে সমাদৃত। বাঙালি সুরকার এবং গায়ক-গায়িকারা মুম্বইয়ের সিনেমা জগতে একটি বিশেষ জায়গা তৈরি করে ফেলেছেন। অবাঙালি শিল্পীদের গলায় বাংলা গান শুনিয়ে বাঙালি শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে যাওয়ার আন্তরিক ইচ্ছা থেকে গওহর জান, বেগম আখতারের গান আমরা পেয়েছি বাংলা গানের সম্ভারে। যাঁরা অবাঙালি শিল্পীদের নিজস্ব ভাষায় বাংলার তরজমা করে দিতেন, তাঁদের অধ্যবসায় যেমন ছিল, তেমনই অক্লান্ত ছিল অবাঙালি শিল্পীদের নিখুঁত বাংলা উচ্চারণের মহড়া। সেই সব কালজয়ী গান বাংলা সঙ্গীতকে সমৃদ্ধ করেছে।

পিনাকী রুদ্র

বারাসত, উত্তর ২৪ পরগনা

অবক্ষয় নয়

বছর শেষের গ্রাম-শহর-মফস্সলের লাউডস্পিকার টুম্পা নামের এক মহিলার প্রতি ভালবাসায় উত্তাল হয়ে উঠেছে। সঙ্গীত-অনুরাগী বহু মানুষ এই তথাকথিত অবক্ষয়ে যারপরনাই হতাশ ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। কিন্তু বিনোদনের জগতে নতুনত্বের চমক বরাবরই এসেছে। কয়েক বছর আগে ‘কোলাভেরি ডি’ গানে একটি গান না-জানা ছেলের বিদেশি কায়দায় গান গাওয়ার আত্মবিশ্বাসী চেষ্টা ফুটিয়ে তুললেন দক্ষিণী নায়ক ধনুশ। আমজনতার ভাল লাগল। আবার দক্ষিণী লুঙ্গি যখন বলিউডি গানের লিরিক হয়ে উঠল মজার মোড়কে, তখনও মানুষ মাতল সে গানের ছন্দে। ‘রঙ্গবতী’ গানটি জনপ্রিয় হওয়ার কারণ যদি হয় তার সুর ও চিত্রায়ণ, তবে গানটির ওড়িয়া ধরনের মুখবন্ধও একটি কারণ। ‘টুম্পা’ গানটি চটুল মনে হলেও গানের কথায়, উচ্চারণে সাদামাঠা মজা রয়েছে। সাংস্কৃতিক আধিপত্যবাদের বিপ্রতীপে সাধারণ মানুষের পছন্দের এই ধারাটিকেও গুরুত্ব দিতে হবে বইকি।

শোভন সেন

সাঁতরাগাছি, হাওড়া

পান্না-হিরে-চুনি

গৌতম চক্রবর্তীর ‘সব হারানোর বছর?’ (২৭-১২) প্রবন্ধে আরও কিছু সংযোজন করতে চাই। ফেরার জন্য প্রস্তুত হয়েও পঞ্চপাণ্ডবের আর ফেরা হল না। রয়ে গেলেন শরশয্যায় পিতামহকে ঘিরে। রাত গভীর। পিতামহ আস্তে আস্তে বললেন, “ও পারের আনিসুজ্জামানের সঙ্গে এ পারের দেবেশ রায়ও তো...।” ধরা গলায় অর্জুন বললেন, “প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ও আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।” ভীম বললেন, “তোমরা সবাই ভুলে গেলে পিকে, চুনীর পায়ের কাজ? বাঙালির এই দুই অহঙ্কারকেও তো চোখের জলে বিদায় জানিয়েছি।” নকুল নেট সার্চ করে জানলেন, আর এক কিংবদন্তি অলিম্পয়ান ফুটবলার নিখিল নন্দী আর নেই। শূন্যদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন পিতামহ ভীষ্ম। ময়দানের পান্না-হিরে-চুনি এক সঙ্গে বিলীন হয়েছে পঞ্চভূতে। যুধিষ্ঠির বললেন, “বর্ষশেষের বিলাসযাপন এ বারটা না-হয় থাক।” অর্জুন বললেন, “উঁহু, বাঁচার জন্য এটুকু দরকার।” পিতামহ ভীষ্ম ‘তথাস্তু’ বলে চক্ষু মুদলেন।

সুদেব মাল

খরসরাই , হুগলি

নাম নেই

সুন্দরবন বেড়াতে গিয়েছিলাম। প্রায় তিন দিনের লঞ্চ-যাত্রায় ফোনের ‘গুগল ম্যাপ’ খোলা থাকত অনেক ক্ষণ। আমাদের অবস্থান নিখুঁত ভাবে দেখাত একটি চলমান নীল বিন্দু। প্রধান নদীগুলির নামও জানিয়ে যাচ্ছিল অবিরাম। দ্বিতীয় দিনে প্রচুর নদীর গোলকধাঁধায় গুগল হার মানল। অনেক নদীর নাম আর জানা যাচ্ছিল না। সারেং সাহেব বেশির ভাগ নদীর স্থানীয় নাম ও যাত্রাপথ গড়গড় করে বলে যেতেন। গুগলও কিছু নদী চেনে না, এটা জেনে দারুণ মজা লেগেছিল।

অমিতাভ সরকার

কলকাতা-৩৬

উত্তরটা?

এক মাতাল আর এক মাতালকে বলছে, “আমার এই ব্যাগে ক’টা ডিম আছে যদি তুই বলতে পারিস, তা হলে ব্যাগের আটটা ডিমই তোর। আর যদি বলতে পারিস এগুলি কিসের ডিম, তা হলে ডিম-পাড়া মুরগিটাও তোকে দিয়ে দেব।” দ্বিতীয় মাতাল বলল, “ভাই একটা ক্লু দে।” বর্তমানে অনলাইন পরীক্ষা ব্যবস্থাটি ঠিক সেই রকম। আগে থেকে হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন পাঠানো, বই দেখে উত্তর লেখা, তিন ঘণ্টার পরীক্ষা পাঁচ ঘণ্টায় দেওয়া ইত্যাদির পরও ছাত্রছাত্রীরা আশানুরূপ নম্বর পাচ্ছে না। শিক্ষকরা যদি একটু ক্লু দিতেন, মানে কত নম্বর পাতায় উত্তর আছে, সেটা বলে দিতেন, ভাল হত।

জ্যোতিপ্রকাশ ঘোষ

বেড়ি পাঁচপোতা, উত্তর ২৪ পরগনা

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

letters to editor Sourav Ganguly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE