Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Superstition

সম্পাদক সমীপেষু: ভয়ের ভূত

ধর্মীয় পরিবেশ বুঝে ভিন্ন ভিন্ন ব্যবস্থাপনা আসলে শিক্ষাদানের পদ্ধতিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দেয়।

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২২ ০৪:২৮
Share: Save:

“ভয় ভাঙাতে স্কুলে ‘জলপড়া’” (৩১-৩) সংবাদ পড়ে নিজের অজানতেই যেন একেবারে চমকে উঠলাম! একবিংশ শতাব্দীর তৃতীয় দশকে পৌঁছে গিয়েছে বিশ্ব। এই বাংলারই আনাচে-কানাচে যখন অনেকেই বিবাহবার্ষিকীর দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে নিজের স্ত্রীকে চাঁদের জমি কিনে উপহার দিচ্ছেন, ঠিক তখনই মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে বিদ্যার্জনের আঙিনায় কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানসিকতার ছবি ধরা পড়ল।

খবরে প্রকাশ, ধুলিয়ান শহরের মধ্যে একটি স্কুলের হস্টেলের ছাত্রীরা ‘ভূতের ভয়’ পাচ্ছিল। আর সেই ভয় কাটাতে স্কুল কর্তৃপক্ষ এক জন পুরোহিত ও এক মৌলবীকে ডেকে জলপড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন। আবার প্রধান শিক্ষিকা সাফাই দিয়েছেন, “...মেয়েদের মানসিক ভয়টা কাটানোই মূল লক্ষ্য ছিল।” একটি বিদ্যালয়ে এই ঘটনা অনেকগুলি প্রশ্নের জন্ম দিল।

প্রথমত, ভূতের ভয় কাটানোর জন্য কি জলপড়া বা মন্ত্রপড়া ছাড়া আর কোনও দাওয়াই শিক্ষিকারা ভাবতে পারেননি? ছাত্রীদের ভয় কাটাতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বোঝানো যেত না?

দ্বিতীয়ত, ভূত হিন্দু না মুসলিম, না জেনে তাকে জব্দ করতেই কি দুই ধর্মের যাজককে একযোগে আহ্বান?

তৃতীয়ত, ছাত্রীদের মনে ওঝা, গুনিন, ঝাড়ফুঁক, তুকতাক ইত্যাদি সেকেলে ধারণা সুকৌশলে গেঁথে দেওয়া হল না কি?

চতুর্থত, ‘ভূতের ভয়’-এর উৎস ও কারণ অনুসন্ধান কি করা হয়েছিল?

এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষিকাদের মনোভাব কেমন, সে দিকটিও এড়িয়ে যাওয়ার নয়। কারণ, ধর্মীয় পরিবেশ বুঝে ভিন্ন ভিন্ন ব্যবস্থাপনা আসলে শিক্ষাদানের পদ্ধতিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দেয়। তা কুসংস্কার প্রশ্রয় দেওয়ার থেকেও ভয়ঙ্কর প্রবণতা। বিদ্যালয়ে শিক্ষাদানের এই যদি নমুনা হয়, তা হলে আজকের শিক্ষার্থীরা আগামী দিনে ব্যক্তিগত ও সমাজ জীবনে কোন পথে পরিচালিত হবে, তা সহজেই অনুমেয়। অবিলম্বে ওই স্কুলের শিক্ষিকা এবং ছাত্রীদের মনস্তত্ত্ববিদ দিয়ে কাউন্সেলিং
করানো প্রয়োজন।

মৃণালকান্তি ভট্টাচার্য‍

কেতুগ্রাম, পূর্ব বর্ধমান

কেন এত কর

রাজ্যের অভ্যন্তরে প্রত্যেক হাইওয়ের বেশ কিছু জায়গায় সরকারি টোল ট্যাক্স দিয়ে যানবাহন নিয়ে যেতে হয়। এই টোল ট্যাক্সের অঙ্ক বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম। কোথাও কোথাও এই অঙ্ক যথেষ্ট বেশি। ছোট গাড়ির জন্য সিঙ্গল ট্রিপে একশো পাঁচ টাকা ছিল। এখন আরও বাড়ানো হল। বাস, বারো চাকার ট্রাক, ছোট ট্রাক— আয়তন হিসাবে টোল দিতে হয়। এই টোল ট্যাক্স আদায় চলছে তো চলছেই, এর কি নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই? জনসাধারণ তো সরকার নির্ধারিত খাজনা দিয়ে থাকে। সরকারের পক্ষ থেকে এই সব ‘পথ কর’ মকুব করা প্রয়োজন। পেট্রল, ডিজ়েলের ক্রমবর্ধমান মূল্যের ফলে সমস্ত ভোগ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার মধ্যে এত টোল ট্যাক্স মানুষের অসুবিধের সৃষ্টি করছে।

অনিল বরণ রায়

হাজরামাঠ, পশ্চিম মেদিনীপুর

লাভ হবে কি

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অকালবর্ষণের কারণে এই বছর আলুর ফলন কম হয়েছে পূর্ব-বর্ধমানে। জেলার খণ্ডঘোষ, রায়না, জামালপুর, কালনা, আউশগ্রাম, মঙ্গলকোটের মতো অন্যান্য ব্লকে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে আলু চাষের প্রবল ক্ষতি হয়েছে। দ্বিতীয় বার নতুন করে বীজ বপন করতে গিয়ে চাষের খরচ বেড়েছে। সারের দামও আকাশছোঁয়া ছিল। তাই এ বছর সার্বিক ভাবেই আলু চাষের খরচ বেড়েছে। রাজ্যের মধ্যে হুগলি ও পূর্ব বর্ধমান জেলায় আলু উৎপাদন ভাল হয়। দামোদরের তীরবর্তী উর্বর মাটিতে বিঘা প্রতি ১০০-১২০ বস্তা আলু উৎপাদন হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এ বার বিঘা প্রতি ৪০-৭০ বস্তা আলুর ফলন হয়েছে। আলুর ফলন কম হলেও, এ বছর আলুর দাম বেশি। বড় চাষিরা হিমঘরে আলু মজুত রাখছেন, পরবর্তী কালে ভাল দামের আশায়। কিন্তু ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষিরা দাম বেশি পাওয়ায় মাঠ থেকে ফসল তুলেই বিক্রি করছেন। মহাজনের থেকে টাকা ঋণ অথবা গয়না বন্ধক রেখে অনেকে আলু চাষ করেছেন। বিপুল খরচ করে আলু চাষের মতো ফাটকা চাষে আদৌ কতটুকু লাভের মুখ দেখতে পাবেন চাষিরা?

সুকমল দালাল

খণ্ডঘোষ, পূর্ব বর্ধমান

বেহাল রাস্তা

আমি নামখানা থানার অন্তর্গত রাজনগর গ্রামের বাসিন্দা। পাশে শিবরামপুর গ্রাম। এই দুই গ্রামের একই গমনপথে মৌসুনি দ্বীপের অধিকাংশ মানুষ ও পর্যটক যাতায়াত করেন। ১১৭ নম্বর হাইওয়ে-তে সাতমাইল ও আটমাইলের পশ্চিমের দু’টি পথ হুজ্জুতের খেয়া ঘাট (মৌসুনি ঘাট) পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুনি, রাজনগর, শিবরামপুর-গামী সমস্ত ভারী যানবাহন, পর্যটকদের গাড়ি, টোটো, মোটর সাইকেল, মোটর ভ্যান এই পথ দিয়ে চলে। সাতমাইল থেকে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার রাস্তাটি প্রায় ভগ্নস্তূপে পরিণত হয়েছে। ফলে সব গাড়ি গত এক বছর আটমাইলের সরু রাস্তায় যাতায়াত করছিল। কিন্তু সংযোগকারী ব্রিজে ফাটল দেখা দেওয়ায় ওই পথও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রায় তিরিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ ও প্রয়োজনীয় যানবাহন রোজ ওই খারাপ রাস্তার উপর দিয়ে যাতায়াত করছে। গত কয়েক বছর এই রাস্তার কোনও রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। এ ছাড়া প্রতি বছর আমপান, ইয়াস-এর মতো বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই আছে। তখন এই রাস্তাই যোগাযোগের ও ত্রাণ বিলির একমাত্র সহায় হয়ে দাঁড়ায়। সংশ্লিষ্ট দফতরকে অনুরোধ, রাস্তাটি তাড়াতাড়ি সারানো হোক।

মীনাক্ষী গিরি

নামখানা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

শব্দ যন্ত্রণা

‘নির্মাণকাজের শব্দ-যন্ত্রণার বিরুদ্ধে লড়াই তরুণীর’ (২১-৩) শীর্ষক খবরটি পড়ে আমারও কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানাতে চাই। যে অঞ্চলে বসবাস করি, সেখানে সারা বছরই ফ্ল্যাটবাড়ির নির্মাণ কাজ চলতে থাকে। প্রোমোটারের কাজ শুরু হয় রাত ১১টার পর। ট্রাকের পর ট্রাক আসে ইট, বালি, কাঠের তক্তা, স্টোন চিপস, লোহা-লক্কড় নিয়ে। সেগুলি গাড়ি থেকে ছুড়ে ছুড়ে ফেলার জন্য বিকট শব্দের সৃষ্টি হয়। রাত দুটো পর্যন্ত এই কাজ চলে। সহজেই অনুমেয়, চার পাশের মানুষের, বিশেষত বয়স্ক ও শিশুদের এই শব্দদূষণে কী হাল হতে পারে। এর উপর আছে দিনের বেলা বাড়ির মেঝেয় মার্বেল বসানোর কাজ। তাতেও প্রচুর শব্দ হয়। পাশাপাশি বসেও একে অপরের কথা শোনা যায় না। কোর্টে যাওয়া সত্ত্বেও এই সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি।

সোমা দাস

কলকাতা-৫৫

উচ্চতা বৃদ্ধি

শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ডায়মন্ড হারবার লাইনে গড়িয়া, বারুইপুর, কল্যাণপুর ও দক্ষিণ দুর্গাপুর স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা এতটাই কম যে, নিত্যযাত্রীদের ট্রেন থেকে নামতে রীতিমতো কসরত করতে হচ্ছে। বিশেষত বহু মহিলা যাত্রীকে কার্যত হাতল ধরে ঝুলে নামতে হচ্ছে। এতে অনেকেই পায়ে বা কোমরে আঘাত পাচ্ছেন। রেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ, প্ল্যাটফর্মগুলির উচ্চতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে অবিলম্বে পদক্ষেপ করা হোক।

শ্যামশ্রী রায় কর্মকার

কলকাতা-৯৪

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Superstition
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE