Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: বদলির নিয়ম

শিক্ষকরা নিকটবর্তী বিদ্যালয়ে বদলি হলে তাঁরা বেশি সময় দিয়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন করতে সমর্থ হবেন।

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৪:৫৮
Share: Save:

‘অস্বচ্ছতার সঙ্কট’ (৭-৯) শীর্ষক সম্পাদকীয় বিষয়ে দু’একটা কথা তুলে ধরতে চাই। বিশেষত বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি সংক্রান্ত। প্রথমেই বলি যে, কোনও কারণেই মৃত্যু কাম্য নয়। বদলি একটি সরকারি পদ্ধতি, সরকারি নিয়মেই তা স্পষ্ট। আর বদলি তো সারা জীবনের জন্য নয়। পরবর্তী সময়ে আবার বদলির সুযোগ আসবে। তাই বলে আত্মহনন!

বর্তমান সরকার আসার পর দূরদূরান্তের বিদ্যালয়ে চাকরি করা শিক্ষকদের দীর্ঘ দিনের বদলির দাবি মুখ্যমন্ত্রী সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করেছেন। যাঁদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য ৪-৫ ঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হয়, তাঁদের ছাত্রদের পড়ানোর ধৈর্য বা মানসিকতা কতটা অবশিষ্ট থাকতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়। তাই মুখ্যমন্ত্রী কয়েক বছর আগেই মিউচুয়াল ট্রান্সফারের ব্যবস্থা করেছিলেন। তাতে যে বেশি সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকা উপকৃত হয়েছেন, তা বলা যাবে না। কারণ, পাঠ্যবিষয় এবং অন্যান্য শর্ত মিলিয়ে বিদ্যালয় খোঁজাই এক দুরূহ ব্যাপার ছিল।

বর্তমান সরকারের নতুন শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকদের বদলি সংক্রান্ত ব্যাপারটি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করে জেনারেল ট্রান্সফারের ব্যবস্থা করেছিলেন। তাতে অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা বদলি হয়ে নিকটবর্তী স্কুলে এসেছেন। কিন্তু আবার এ-ও শোনা যায়, অনেকে স্কুল পেয়েও আসতে পারেননি। কারণ জানা গিয়েছে, এই বদলির ক্ষেত্রেও নাকি টাকার খেলা চলে। ফলে, অনেক শিক্ষকই বদলির আগ্রহ হারিয়েছেন। মনে হয় এই সমস্যার কথা সরকার বাহাদুরের কানেও পৌঁছেছিল। তাই শিক্ষকদের বদলিকে কলুষমুক্ত করতে এবং সরকারের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তুলে ধরতে ‘উৎসশ্রী’ নামে শিক্ষকদের বদলির নতুন পোর্টাল খোলা হয়েছে। আশা করা যায়, এতে শিক্ষকরা উপকৃত হবেন। এটা ঠিক যে, শিক্ষকরা নিকটবর্তী বিদ্যালয়ে বদলি হলে তাঁরা বেশি সময় দিয়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন করতে সমর্থ হবেন। সরকারের এই পদক্ষেপ ধন্যবাদযোগ্য।

অজয় দেবনাথ

রানাঘাট, নদিয়া

মানুষ ভাবা চাই

অনিতা অগ্নিহোত্রী তাঁর প্রবন্ধে (‘একেই কি বলে সভ্যতা’, ৮-৯) আবারও আমাদের সবার সামনে সমাজে মেয়েদের প্রকৃত অবস্থানটি তুলে ধরেছেন। অর্থনৈতিক ভাবে সচ্ছল এবং অসচ্ছল মেয়েদের সামাজিক অবস্থানের মধ্যে খুব একটা তফাত নেই। গৃহবধূ মানে তিনি সারা জীবন সংসারের হাল ধরলেও, তাঁর কাজের কোনও মূল্য নেই। আর নারী যদি কর্মরতা হন, তা হলে তো ঘরের, বাইরের সব কাজ তাঁকেই করতে হয়। তবু একটা কথা গর্বের সঙ্গে বলা যায়, পুরুষকর্মী অফিসে, দফতরে কাজে ফাঁকি দিয়ে আড্ডা, চা, কফি পান করে নিজেকে কর্মবীর প্রতিপন্ন করেন। কিন্তু মহিলা কর্মচারী কাজ ফেলে গল্প করছেন, এ রকম চিত্র তুলনায় কম। আসলে মেয়েরা কাজের প্রতি পুরুষদের থেকে বেশি একনিষ্ঠ।

যদি সন্তান মানসিক বা দৈহিক প্রতিবন্ধী হন, আর সেই মা যদি কর্মরতা হন, তা হলে তাঁর হেনস্থার শেষ থাকে না। অনেক সময় স্বামীও তাঁকে ছেড়ে চলে যান। এই লড়াইয়ে হয়তো ক্লান্তি, হতাশা আসে, একাকিত্ব গ্রাস করে নারীকে। চিকিৎসক মেয়েটি হয়তো আত্মহনন ছাড়া আর সমাধানের রাস্তা খুঁজে পাননি। কিন্তু যদি কেউ একটু সহানুভূতি, অকৃত্রিম ভালবাসার হাত বাড়িয়ে দিতেন, সাহস জোগাতেন, তা হলে হয়তো অকালে একটা প্রাণ নষ্ট হত না। আমরা মেয়েরা দেবীর সম্মান চাই না, চাই সমাজ আমাদের পুরুষদের মতোই মানুষ ভাবুক। কর্মক্ষেত্রে, ঘরে একটু বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করুক। নারীরা অবলা নন। যতই প্রতিকূলতা আসুক, মেয়েরা তা দূর করে মাথা উঁচু করে বাঁচবেনই।

সর্বানী গুপ্ত

বড়জোড়া, বাঁকুড়া

আকাশকুসুম?

‘একেই কি বলে সভ্যতা’ শীর্ষক প্রবন্ধটি কর্মরত মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়, অথচ কম আলোচিত একটি বিষয়ের উপর আলো ফেলে। কর্মরত মহিলাদের সংগ্রাম, ভারতে একবিংশ শতকেও পুরুষের তুলনায় বহু গুণ বেশি। সেই সংগ্রামে, সরকারের ভরসাটুকু পাশে থাকলে লড়াই সহজ হয়।

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দফতর মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা অনুসারে, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সহজে নিজের জেলায় বদলির জন্য উৎসশ্রী পোর্টাল চালু করেছে। এই সাধু উদ্যোগ শুরুতেই হোঁচট খাচ্ছে। কারণ, নানা জটিল নিয়মকানুনের বাঁধনে বদলি প্রক্রিয়াকে বেঁধে ফেলার চেষ্টাও রয়েছে। ফলে, বহু শিক্ষিকা, যাঁদের চাকরিস্থল বাড়ি থেকে ষাট, সত্তর কিংবা একশো কিলোমিটার (বা তারও বেশি) দূরে, তাঁরাও বদলির সুযোগ পাচ্ছেন না। আবেদন করতে পারছেন না, করলেও তা বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। সবচেয়ে বিব্রত অবস্থায় আছেন মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে আবেদনকারী শিক্ষিকারা। ব্যক্তিগত চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন অনুসারে বিএমওএইচ মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দিচ্ছেন। তার পরেও বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে, সিএমওএইচ-এর তত্ত্বাবধানে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা হচ্ছে। এমনকি ক্যানসার বা গাইনোকোলজিক্যাল সমস্যা আক্রান্ত রোগীদেরও রেহাই নেই। এঁরা কেউ নিজের কাজে ফাঁকি দিতে চাইছেন না, দায়িত্ব থেকেও অব্যাহতি চাইছেন না।

জয়দীপ সাহা

কালনা, পূর্ব বর্ধমান

শুধু মেয়েরা নন

‘একেই কি বলে সভ্যতা?’ প্রবন্ধ প্রসঙ্গে কিছু কথা। চিকিৎসক অবন্তিকার মৃত্যুর স্মৃতি উস্কে দিল ভারতে টেস্টটিউব বেবির জনক সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের পরিণতি। এক অসহনীয় অবস্থায় তিনি মৃত্যুর পথ বেছে নেন। মনে পড়ছে সত্যেন্দ্র দুবের কথা। স্বর্ণ চতুর্ভুজ প্রকল্পের কাজ যাতে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়, এটা নিশ্চিত করতে গিয়েই বিহারে খুন হন তিনি। শবর বালিকা চুনী কোটালের সঙ্গেই তো রোহিত ভেমুলার নাম আসে। এটা স্পষ্ট যে, পুরুষ-নারী নির্বিশেষে ক্ষমতার কাছে সবাই অসহায়। শ্রীজাতের কবিতার লাইন— “আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ।/ তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।” এই শিরদাঁড়া ‘ঋজু’ রাখার নাম ঔদ্ধত্য। মানিয়ে নেওয়ার পাঠ্যক্রমের বাইরে বেরোলে এটুকু প্রাপ্তি স্বীকার করতেই হবে পুরুষ-নারী নির্বিশেষে। পোশাক সমস্যার মুখোমুখি কি শুধু নারী? হাফপ্যান্ট পরে যাওয়ার জন্য কোভিড ভ্যাকসিন থেকে বঞ্চিত হন যুবক। আর কর্মক্ষেত্রে পুরুষ-নারী নির্বিশেষে টয়লেটের দশা ভুক্তভোগীরা জানেন।

দেবাশিস দাস

বোলপুর, বীরভূম

এটাই সভ্যতা

‘একেই কি বলে সভ্যতা’ প্রবন্ধে স্বাধীনতার ৭৫ বছর আগের বস্তাপচা নারীসমস্যার ইতিকথা পুনরায় প্রদর্শিত হল। ন্যায়-নীতি, নিয়মানুবর্তিতা প্রশাসনিক উদারীকরণের সংমিশ্রণের ফলে আজ মেয়েরা স্বাধীন। রাত ১২টাতেও তাঁরা ওলা বাইকে বাড়ি ফিরছেন, পিঙ্ক ক্যাব চালাচ্ছেন, বাইরে চাকরি করতে যাচ্ছেন। প্রতি দিন সমস্যা ক’জনকে পোহাতে হয়? পে অ্যান্ড ইউজ় টয়লেট এখন রাস্তার মোড়ে মোড়ে। স্টেশনে, বাজারে প্যাড ভেন্ডিং মেশিন। মেয়েদের যাত্রা থামানোর পক্ষপাতী আমরা নই। আমরা নারী-পুরুষ সমান ভেবেই এগোই। তবুও প্রশ্ন, এখনও বাসে লেডিস সিট কেন? কারণ, একেই সভ্যতা বলে। যেখানে এক জন বাস কন্ডাকটর নারীকে মায়ের সম্মান দেন কোনও রকম অশালীন দৃষ্টি বা স্পর্শ ছাড়া।

দেবাশীষ দত্ত

কলকাতা-৬৩

‘অস্বচ্ছতার সঙ্কট’ (৭-৯) শীর্ষক সম্পাদকীয় বিষয়ে দু’একটা কথা তুলে ধরতে চাই। বিশেষত বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি সংক্রান্ত। প্রথমেই বলি যে, কোনও কারণেই মৃত্যু কাম্য নয়। বদলি একটি সরকারি পদ্ধতি, সরকারি নিয়মেই তা স্পষ্ট। আর বদলি তো সারা জীবনের জন্য নয়। পরবর্তী সময়ে আবার বদলির সুযোগ আসবে। তাই বলে আত্মহনন!

বর্তমান সরকার আসার পর দূরদূরান্তের বিদ্যালয়ে চাকরি করা শিক্ষকদের দীর্ঘ দিনের বদলির দাবি মুখ্যমন্ত্রী সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করেছেন। যাঁদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য ৪-৫ ঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হয়, তাঁদের ছাত্রদের পড়ানোর ধৈর্য বা মানসিকতা কতটা অবশিষ্ট থাকতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়। তাই মুখ্যমন্ত্রী কয়েক বছর আগেই মিউচুয়াল ট্রান্সফারের ব্যবস্থা করেছিলেন। তাতে যে বেশি সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকা উপকৃত হয়েছেন, তা বলা যাবে না। কারণ, পাঠ্যবিষয় এবং অন্যান্য শর্ত মিলিয়ে বিদ্যালয় খোঁজাই এক দুরূহ ব্যাপার ছিল।

বর্তমান সরকারের নতুন শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকদের বদলি সংক্রান্ত ব্যাপারটি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করে জেনারেল ট্রান্সফারের ব্যবস্থা করেছিলেন। তাতে অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা বদলি হয়ে নিকটবর্তী স্কুলে এসেছেন। কিন্তু আবার এ-ও শোনা যায়, অনেকে স্কুল পেয়েও আসতে পারেননি। কারণ জানা গিয়েছে, এই বদলির ক্ষেত্রেও নাকি টাকার খেলা চলে। ফলে, অনেক শিক্ষকই বদলির আগ্রহ হারিয়েছেন। মনে হয় এই সমস্যার কথা সরকার বাহাদুরের কানেও পৌঁছেছিল। তাই শিক্ষকদের বদলিকে কলুষমুক্ত করতে এবং সরকারের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তুলে ধরতে ‘উৎসশ্রী’ নামে শিক্ষকদের বদলির নতুন পোর্টাল খোলা হয়েছে। আশা করা যায়, এতে শিক্ষকরা উপকৃত হবেন। এটা ঠিক যে, শিক্ষকরা নিকটবর্তী বিদ্যালয়ে বদলি হলে তাঁরা বেশি সময় দিয়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন করতে সমর্থ হবেন। সরকারের এই পদক্ষেপ ধন্যবাদযোগ্য।

অজয় দেবনাথ

রানাঘাট, নদিয়া

মানুষ ভাবা চাই

অনিতা অগ্নিহোত্রী তাঁর প্রবন্ধে (‘একেই কি বলে সভ্যতা’, ৮-৯) আবারও আমাদের সবার সামনে সমাজে মেয়েদের প্রকৃত অবস্থানটি তুলে ধরেছেন। অর্থনৈতিক ভাবে সচ্ছল এবং অসচ্ছল মেয়েদের সামাজিক অবস্থানের মধ্যে খুব একটা তফাত নেই। গৃহবধূ মানে তিনি সারা জীবন সংসারের হাল ধরলেও, তাঁর কাজের কোনও মূল্য নেই। আর নারী যদি কর্মরতা হন, তা হলে তো ঘরের, বাইরের সব কাজ তাঁকেই করতে হয়। তবু একটা কথা গর্বের সঙ্গে বলা যায়, পুরুষকর্মী অফিসে, দফতরে কাজে ফাঁকি দিয়ে আড্ডা, চা, কফি পান করে নিজেকে কর্মবীর প্রতিপন্ন করেন। কিন্তু মহিলা কর্মচারী কাজ ফেলে গল্প করছেন, এ রকম চিত্র তুলনায় কম। আসলে মেয়েরা কাজের প্রতি পুরুষদের থেকে বেশি একনিষ্ঠ।

যদি সন্তান মানসিক বা দৈহিক প্রতিবন্ধী হন, আর সেই মা যদি কর্মরতা হন, তা হলে তাঁর হেনস্থার শেষ থাকে না। অনেক সময় স্বামীও তাঁকে ছেড়ে চলে যান। এই লড়াইয়ে হয়তো ক্লান্তি, হতাশা আসে, একাকিত্ব গ্রাস করে নারীকে। চিকিৎসক মেয়েটি হয়তো আত্মহনন ছাড়া আর সমাধানের রাস্তা খুঁজে পাননি। কিন্তু যদি কেউ একটু সহানুভূতি, অকৃত্রিম ভালবাসার হাত বাড়িয়ে দিতেন, সাহস জোগাতেন, তা হলে হয়তো অকালে একটা প্রাণ নষ্ট হত না। আমরা মেয়েরা দেবীর সম্মান চাই না, চাই সমাজ আমাদের পুরুষদের মতোই মানুষ ভাবুক। কর্মক্ষেত্রে, ঘরে একটু বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করুক। নারীরা অবলা নন। যতই প্রতিকূলতা আসুক, মেয়েরা তা দূর করে মাথা উঁচু করে বাঁচবেনই।

সর্বানী গুপ্ত

বড়জোড়া, বাঁকুড়া

আকাশকুসুম?

‘একেই কি বলে সভ্যতা’ শীর্ষক প্রবন্ধটি কর্মরত মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়, অথচ কম আলোচিত একটি বিষয়ের উপর আলো ফেলে। কর্মরত মহিলাদের সংগ্রাম, ভারতে একবিংশ শতকেও পুরুষের তুলনায় বহু গুণ বেশি। সেই সংগ্রামে, সরকারের ভরসাটুকু পাশে থাকলে লড়াই সহজ হয়।

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দফতর মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা অনুসারে, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সহজে নিজের জেলায় বদলির জন্য উৎসশ্রী পোর্টাল চালু করেছে। এই সাধু উদ্যোগ শুরুতেই হোঁচট খাচ্ছে। কারণ, নানা জটিল নিয়মকানুনের বাঁধনে বদলি প্রক্রিয়াকে বেঁধে ফেলার চেষ্টাও রয়েছে। ফলে, বহু শিক্ষিকা, যাঁদের চাকরিস্থল বাড়ি থেকে ষাট, সত্তর কিংবা একশো কিলোমিটার (বা তারও বেশি) দূরে, তাঁরাও বদলির সুযোগ পাচ্ছেন না। আবেদন করতে পারছেন না, করলেও তা বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। সবচেয়ে বিব্রত অবস্থায় আছেন মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে আবেদনকারী শিক্ষিকারা। ব্যক্তিগত চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন অনুসারে বিএমওএইচ মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দিচ্ছেন। তার পরেও বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে, সিএমওএইচ-এর তত্ত্বাবধানে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা হচ্ছে। এমনকি ক্যানসার বা গাইনোকোলজিক্যাল সমস্যা আক্রান্ত রোগীদেরও রেহাই নেই। এঁরা কেউ নিজের কাজে ফাঁকি দিতে চাইছেন না, দায়িত্ব থেকেও অব্যাহতি চাইছেন না।

জয়দীপ সাহা

কালনা, পূর্ব বর্ধমান

শুধু মেয়েরা নন

‘একেই কি বলে সভ্যতা?’ প্রবন্ধ প্রসঙ্গে কিছু কথা। চিকিৎসক অবন্তিকার মৃত্যুর স্মৃতি উস্কে দিল ভারতে টেস্টটিউব বেবির জনক সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের পরিণতি। এক অসহনীয় অবস্থায় তিনি মৃত্যুর পথ বেছে নেন। মনে পড়ছে সত্যেন্দ্র দুবের কথা। স্বর্ণ চতুর্ভুজ প্রকল্পের কাজ যাতে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়, এটা নিশ্চিত করতে গিয়েই বিহারে খুন হন তিনি। শবর বালিকা চুনী কোটালের সঙ্গেই তো রোহিত ভেমুলার নাম আসে। এটা স্পষ্ট যে, পুরুষ-নারী নির্বিশেষে ক্ষমতার কাছে সবাই অসহায়। শ্রীজাতের কবিতার লাইন— “আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ।/ তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।” এই শিরদাঁড়া ‘ঋজু’ রাখার নাম ঔদ্ধত্য। মানিয়ে নেওয়ার পাঠ্যক্রমের বাইরে বেরোলে এটুকু প্রাপ্তি স্বীকার করতেই হবে পুরুষ-নারী নির্বিশেষে। পোশাক সমস্যার মুখোমুখি কি শুধু নারী? হাফপ্যান্ট পরে যাওয়ার জন্য কোভিড ভ্যাকসিন থেকে বঞ্চিত হন যুবক। আর কর্মক্ষেত্রে পুরুষ-নারী নির্বিশেষে টয়লেটের দশা ভুক্তভোগীরা জানেন।

দেবাশিস দাস

বোলপুর, বীরভূম

এটাই সভ্যতা

‘একেই কি বলে সভ্যতা’ প্রবন্ধে স্বাধীনতার ৭৫ বছর আগের বস্তাপচা নারীসমস্যার ইতিকথা পুনরায় প্রদর্শিত হল। ন্যায়-নীতি, নিয়মানুবর্তিতা প্রশাসনিক উদারীকরণের সংমিশ্রণের ফলে আজ মেয়েরা স্বাধীন। রাত ১২টাতেও তাঁরা ওলা বাইকে বাড়ি ফিরছেন, পিঙ্ক ক্যাব চালাচ্ছেন, বাইরে চাকরি করতে যাচ্ছেন। প্রতি দিন সমস্যা ক’জনকে পোহাতে হয়? পে অ্যান্ড ইউজ় টয়লেট এখন রাস্তার মোড়ে মোড়ে। স্টেশনে, বাজারে প্যাড ভেন্ডিং মেশিন। মেয়েদের যাত্রা থামানোর পক্ষপাতী আমরা নই। আমরা নারী-পুরুষ সমান ভেবেই এগোই। তবুও প্রশ্ন, এখনও বাসে লেডিস সিট কেন? কারণ, একেই সভ্যতা বলে। যেখানে এক জন বাস কন্ডাকটর নারীকে মায়ের সম্মান দেন কোনও রকম অশালীন দৃষ্টি বা স্পর্শ ছাড়া।

দেবাশীষ দত্ত

কলকাতা-৬৩

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE