Advertisement
০১ মে ২০২৪
Education

সম্পাদক সমীপেষু: অন্ধকার ভবিষ্যৎ

পাঠ্যক্রমের মধ্যপর্বে এসে কলেজ কর্তৃপক্ষের স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতায় অসংখ্য ছাত্রছাত্রী আজ দিশাহীন এবং বিপর্যস্ত।

—প্রতীকী ছবি।

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৩ ০৪:৪৩
Share: Save:

আমাদের সন্তান ডায়মন্ড হারবারের একটি বেসরকারি বি ফার্মা কলেজের শিক্ষার্থী। কয়েক বছর আগে যখন পাঁচ লক্ষ টাকার কোর্স ফি-র বিনিময়ে এই কলেজে ভর্তি করি, তখন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সুনিশ্চিত ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখিয়ে অনেক রকম আশ্বাস দান করা হয়। ভাল ক্যাম্পাসিং এবং উজ্জ্বল কেরিয়ারের স্বপ্নে কার্যত চাষের জমি বিক্রির টাকায় এই কোর্সে ভর্তি করি।

পাঠ্যক্রমের মধ্যপর্বে এসে কলেজ কর্তৃপক্ষের স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতায় অসংখ্য ছাত্রছাত্রী আজ দিশাহীন এবং বিপর্যস্ত। কারণ, এই কোর্সটি শেষ করার পর তাদের সামনে দু’টি পথ খোলা— এক, ক্যাম্পাসিং-এর মাধ্যমে চাকরির সুযোগ গ্রহণ, অথবা দুই, এম ফার্মা পড়া। স্বাভাবিক অধিকারেই প্রতিটি শিক্ষার্থীর‌ই সেই সুযোগ থাকা উচিত যে, এর মধ্যে কোন বিকল্পটি সে গ্রহণ করবে। এমনকি পরবর্তী কালে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের অধিকারও তার নিজস্ব। অর্থাৎ, যে চাকরি বেছে নিচ্ছে, তার যেমন সুযোগ থাকা উচিত পরে চাকরির সিদ্ধান্ত পাল্টে এম ফার্মা করার, বিপরীতে যে এম ফার্মা করবে বলে স্থির করেছে, সে-ও প্রয়োজনে চাকরিতে ঢুকতেই পারে তার এম ফার্মা পড়া ছেড়ে দিয়ে।

কিন্তু, এখানেই বাদ সেধেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাদের তুঘলকি সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা হচ্ছে দু’টির মধ্যে কোনও একটি বেছে নিতে। সর্বোপরি, যে শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসিং-এর মাধ্যমে চাকরিতে ঢুকবে, সে যাতে কোনও ভাবেই আর এম ফার্মা পড়তে না পারে, সেই জন্য তার মার্কশিট আটকে রাখার ভয় দেখাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। কারণ, মার্কশিট ছাড়া এম ফার্মা-র কলেজে ভর্তি অসম্ভব। অথচ, এম ফার্মা করা থাকলে চাকরিক্ষেত্রে বেতনগত সুবিধা স্বাভাবিক ভাবেই বেশি পাবে।

অন্য দিকে, ক্যাম্পাসিং-এর মাধ্যমে বি ফার্মা করা শিক্ষার্থীদের যে বেতন বিভিন্ন সংস্থা দিচ্ছে, তা ৮-১০ হাজার টাকার মধ্যে। তাই অনেকে প্রথমে চাকরি করার সিদ্ধান্ত নিলেও পরে বাধ্য হয়ে সেই চাকরি ছেড়ে এম ফার্মা করার চেষ্টা করছে। কিন্তু, কলেজ কর্তৃপক্ষ কতিপয় ওষুধ কোম্পানির স্বার্থে ছাত্রদের সেই সুযোগ দিতেই নারাজ। জমি এবং সাত লক্ষ টাকা তো গিয়েছেই, এখন স্বপ্ন দেখার অধিকারটুকুও কেড়ে নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করলে আমাদের সন্তানের বিপদ হতে পারে, এমন আশঙ্কাও যথেষ্ট আছে। এই বিষয়টির প্রতি সরকার অবিলম্বে দৃষ্টি দেবে, সেই আশায় থাকলাম।

অমিত কর, ডায়মন্ড হারবার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

দৌরাত্ম্য

বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা ছেলেমেয়ে চাকরি অথবা পড়াশোনার সূত্রে কেষ্টপুর সমর পল্লি বারোয়ারিতলা অঞ্চলে বসবাস করছে। কোথাও চার-পাঁচ জন ছেলে এক সঙ্গে, আবার কোথাও ছেলে-মেয়ে মিলে থাকছে। আর রাতের বেলায় এরাই নানা অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। জনবহুল রাস্তায় প্রকাশ্যে এই সব ছেলেমেয়ে মদ্যপান এবং নানা ধরনের নেশা করছে। প্রসঙ্গত, কয়েক জন স্থানীয় মানুষ মোটা টাকার বিনিময়ে এগারো মাস অথবা তার থেকে বেশি দিনের জন্য এদের ঘর ভাড়া দিচ্ছেন। আর এই ভাড়াটেদের জোগাড় করে দিচ্ছেন বেশ কিছু জমি-ফ্ল্যাটের দালালেরা, মোটা অঙ্কের মুনাফার লোভে।

প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় কাউন্সিলার— সবার তরফে জানানো হয়েছে, কেউ যদি ঘরভাড়া দেন, তবে সেই ভাড়াটের সমস্ত তথ্য থানায় এবং স্থানীয় কাউন্সিলারের অফিসে জমা দিতে হবে। অথচ, এই আদেশনামাকে না মেনে অনেকেই ঘর ভাড়া দিয়ে যাচ্ছেন। আর যখনই কোনও বড় ধরনের ঘটনা বা দুর্ঘটনা ঘটছে, তখন এঁরা প্রশাসন এবং স্থানীয় কাউন্সিলারের শরণাপন্ন হচ্ছেন। সমস্যা হল, এই ছেলেমেয়েদের কার্যকলাপে কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁদের নানা বিপদের মুখে পড়তে হচ্ছে। এ ভাবে চললে আগামী দিনে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রশাসন এবং স্থানীয় কাউন্সিলারকে সে কারণে আগে থেকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।

সুদীপ্ত দে, কলকাতা-১০২

নজরদারি চাই

কলকাতা শহরে রাস্তাঘাট কমছে। তার মধ্যে যানজট, অনিয়ন্ত্রিত রাস্তা অবরোধ বা বিক্ষোভ মিছিলে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠার উপক্রম। একই রাস্তায় বাস, ট্রাক, ম্যাটাডোর, অটো, টোটো সবই চলছে। কেউই প্রায় সিগন্যাল মানে না, রেষারেষি করে, আর তার জেরে প্রাণ যায় সাধারণ মানুষের। বর্ষাকালে রাস্তাঘাটের আরও খারাপ অবস্থা হয়। বড় বড় গর্ত, তাতে কাদা জল। এই সমস্যার কি কোনও স্থায়ী সমাধান হয় না? অন্য দিকে, রাস্তার বেশির ভাগটা দখল করে আছে অস্থায়ী দোকান বা লম্বা অটোর সারি। আজকাল লোকে কোনও পূর্বপরিকল্পিত কাজে যাওয়ার জন্যে অনেক ক্ষেত্রেই মেট্রোর শরণাপন্ন হন। ভিড় হলেও গন্তব্যে পৌঁছনো যায় ঠিক সময়ে। প্রশ্ন হল, এত সংখ্যক টোটো বা অটো রিকশা রাস্তায় যে চলাচল করে, তাদের সবার কি বৈধ লাইসেন্স আছে? তার জন্য কড়া নজরদারির প্রয়োজন। যত্রতত্র থেমে যাওয়া, মাঝরাস্তা থেকে লোক তুলতে গিয়ে আরও বিপদ বাড়ছে। যদিও এই সমস্ত ব্যাপার এখন জনসাধারণের গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে।

একটু ভাল করে চিন্তা করে শহরের রাস্তায় যান চলাচলের একটা ব্লু-প্রিন্ট করা দরকার। যেখানে রাস্তা চওড়া করা সম্ভব, তেমন সব রাস্তার একটা সমীক্ষার প্রয়োজন আছে। ফুটপাতে হকারদের বসার জায়গা নির্দিষ্ট করে দেওয়া উচিত, যাতে পথচারীকে ফুটপাতের বদলে রাস্তা দিয়ে অনাবশ্যক চলাচল না করতে হয়। এর জন্য কড়া নজরদারির দরকার। প্রয়োজনে, ফাইন প্রথা চালু করাও যেতে পারে। পুজোর আগে প্রতি বার রাস্তাঘাট সারানো হয়, কিন্তু অধিকাংশ সময়েই সেটা ভাল ভাবে করা হয় না। ফলে অতি বৃষ্টি বা অন্যান্য কারণে সেগুলি আবার পুরনো অবস্থায় ফিরে যায় কয়েক দিনের মধ্যেই। এর জন্য শীতকালে এই কাজগুলো শেষ করার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা আবশ্যক। সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষিত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করার সময় এসেছে। অনেক জায়গায় সিগন্যালের আলো রাস্তার গাছের ডালপালায় ঢেকে যায়। এতে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বাড়ে। তাই নিয়মিত এই বড় গাছগুলোর ডালপালা কেটে সরিয়ে ফেলার দিকে নজর রাখতে হবে। এতে দুর্ঘটনা ছাড়াও বৈদ্যুতিক বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব। উপরে উল্লিখিত বিষয়গুলিতে যথাশীঘ্র সম্ভব নজর দেওয়ার জন্য তাই প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

অবলোকিত চক্রবর্তী, কলকাতা-৭৫

ফ্লাইওভার কবে

পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান মেনলাইনে বৈদ্যবাটী স্টেশনের কাছে জি টি রোডের ১১ নম্বর রেলগেটটি এক বার বন্ধ হলে খুলতে অনেক সময় লেগে যায়। কারণ, এই লাইনে ইদানীং ট্রেনের সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। দীর্ঘ ক্ষণ রেলগেট বন্ধ থাকায় জি টি রোডে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়, যা কাটতে অনেক সময় লেগে যায়।

বহু দিন ধরে শোনা যাচ্ছে, এই গেটে জি টি রোডের উপরে একটি ফ্লাইওভার তৈরি হবে। কিন্তু এখনও তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, দীর্ঘ দিনের এই সমস্যা সমাধানের জন্য জি টি রোডের উপরে ফ্লাইওভার তৈরির ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

কালী শঙ্কর মিত্র, ভদ্রেশ্বর, হুগলি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education Society
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE