E-Paper

অ-সুবিধার প্রকল্প

২০০৮-এ ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ স্কিম’ চালু হওয়া থেকে আজ পর্যন্ত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা পরিষেবার খরচও বৃদ্ধি পেয়েছে।

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৩ ০৪:৩১
people.

সম্প্রতি হেলথ স্কিমে ক্যাশলেস চিকিৎসার সীমা দেড় লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে দু’লক্ষ টাকা করার কথা ঘোষণা হয়েছে। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যের সব সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগী চিকিৎসা-ভাতা হিসাবে পাঁচশো টাকা পান। এ ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির পদ বা তাঁর বেতন বিচার্য নয়। একই ভাবে, কেউ রাজ্য সরকারের ‘হেলথ স্কিম’-এর সুবিধা নিতে চাইলে, তাঁকেও পদ ও বেতন নির্বিশেষে শুধু চিকিৎসা-ভাতার ওই পাঁচশো টাকাই মাসিক বেতন থেকে কাটাতে হয়। আশ্চর্যের বিষয়, হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার সময় এই স্কিমের সুবিধাভোগী কোনও ব্যক্তি হাসপাতালের কোন ঘরে থেকে চিকিৎসাপ্রাপ্ত হবেন, তা নির্ভর করে তাঁর মাসিক বেতনের উপর। যেমন, কোনও কর্মচারীর মাসিক বেতন ৪৬,২৬০ টাকার কম হলে তিনি বেসরকারি হাসপাতালে ‘জেনারেল বেড’ পাবেন; আবার ৪৬,২৬০ টাকা থেকে ৬৯,৩৯০ টাকার মধ্যে বেতন হলে তিনি ‘সেমি-প্রাইভেট ওয়র্ড’-এ ভর্তি হওয়ার যোগ্য, আর বেতন আরও বেশি হলে তাঁর জন্য বরাদ্দ ‘প্রাইভেট ওয়র্ড’। সমপরিমাণ অর্থের বিনিময়ে প্রাপ্ত সুবিধায় এ-হেন বৈষম্য কেন?

২০০৮-এ ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ স্কিম’ চালু হওয়া থেকে আজ পর্যন্ত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা পরিষেবার খরচও বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ, ‘হেলথ স্কিম’ উপভোক্তাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিষেবা বাবদ সরকারের ধার্য-মূল্য সেই একই রয়েছে। ফলে, অনেক হাসপাতাল এই প্রকল্পের পরিষেবা দিতে অস্বীকার করছে এবং বহু ডাক্তার এত কম ফি-তে রোগীর চিকিৎসা করতে চাইছেন না। ফলে, বহু কর্মচারী হেলথ স্কিমের আওতাভুক্ত হয়েও সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

সম্প্রতি হেলথ স্কিমে ক্যাশলেস চিকিৎসার সীমা দেড় লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে দু’লক্ষ টাকা করার কথা ঘোষণা হয়েছে। একটি সরকারি অফিসে ‘হেলথ স্কিম’ সংক্রান্ত কাজ করার কিঞ্চিৎ অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যে, অনেক বেসরকারি হাসপাতাল রাজ্য সরকারের হেলথ স্কিমের আওতায় নগদহীন চিকিৎসার সুবিধা দেওয়ার অঙ্গীকার করে সরকারি ভাবে নাম নথিভুক্ত করালেও, বাস্তবে সেই সুবিধা দেয় না। ফলে রোগীকে টাকা দিয়ে চিকিৎসা করিয়ে পরে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে সেই টাকা পাওয়ার আবেদন করতে হয়। এবং সে ক্ষেত্রে দেখেছি যে, অনেক হাসপাতাল বিভিন্ন পরিষেবা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা খাতে সরকারের ধার্য-মূল্যের বেশি টাকা বিল করে। ফলে আখেরে ক্ষতি হয় সেই রোগী তথা সরকারি কর্মীর। তাই মূল সমস্যার দিকে না তাকিয়ে, নগদহীন চিকিৎসার সীমা বাড়িয়ে আদতে কোনও উপকার হবে না।

অর্ণব মণ্ডল, রামচন্দ্রপুর, উত্তর ২৪ পরগনা

গাফিলতি

আধার কার্ডধারীদের বয়স পনেরো বছর হ‌ওয়ার পরে আবার পুরনো আধার কার্ডের নম্বর এক রেখে হাতের ছাপ, চোখের মণির ছাপ দিয়ে নতুন করে তা পুনর্নবীকরণ করতে হবে। সেই মতো গত বছরের এপ্রিলে আমার ছেলের আধার কার্ড পরিবর্তন করানো হয়। ওই বছর মে মাসে আধার কর্তৃপক্ষ মারফত চুঁচুড়া হেড পোস্ট অফিসে তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পোস্ট অফিস থেকে সেই গুরুত্বপূর্ণ চিঠিটি আমাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়নি। অথচ, আমাদের বাড়ি থেকে উক্ত পোস্ট অফিসের দূরত্ব দু’কিলোমিটারেরও কম। এত স্বল্প দূরত্বেও যদি কোনও গুরুত্বপূর্ণ চিঠি প্রেরণ করতে পোস্ট অফিস কর্তৃপক্ষের এক বছরের বেশি সময় লেগে যায়, তা হলে এর ব্যবস্থা কে করবে? তা ছাড়া, এত দিন পরে সেই কার্ড আদৌ নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছবে কি না, সে বিষয়েও সন্দেহ হয়।

কারও চাকরির পরীক্ষার চিঠি বা দরকারি জিনিস যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পোস্ট অফিস থেকে নির্দিষ্ট ঠিকানায় না পৌঁছয়, তবে অত্যন্ত অসুবিধার সৃষ্টি হয়। কর্তৃপক্ষ কি সেই বিষয়ে অবহিত?

ঋতুপর্ণা ভট্টাচার্য, চুঁচুড়া, হুগলি

পরিষেবায় ত্রুটি

কিছু দিন আগে আমার পুত্র ও বৌমা তাদের শিশুকন্যাকে নিয়ে মুম্বই থেকে মুম্বই-হাওড়া মেলে প্রথম শ্রেণিতে চেপে খড়্গপুরে আসছিল। কিন্তু সেই বগিতে এক ভদ্রলোক তাঁর পোষ্য কুকুর নিয়ে ওঠেন। আমার নাতনি কুকুরটিকে দেখে ভয়ে পেয়ে যায় ও কাঁদতে থাকে। এই অসুবিধার কথা টিকিট পরীক্ষককে জানিয়েও কোনও রকম সহায়তা পাওয়া যায়নি। ফলে, নাতনিকে নিয়ে বৌমা বেশ কয়েক ঘণ্টা করিডরে কাটাতে বাধ্য হয়। সেই ভদ্রলোক তাঁর পোষ্যকে নিয়ে নামার পর, নাগপুর থেকে আর এক ভদ্রলোক তাঁর পোষ্য কুকুর নিয়ে ওই বগিরই যাত্রী হন! উনি আসছিলেন হাওড়ায়। সেই একই অস্বস্তিকর পরিবেশে আমার পুত্র, বৌমা ও নাতনি পরের দিন খড়্গপুর স্টেশনে নামে। শুধু তা-ই নয়, ট্রেনটিও তিন ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছয়। বেশ কয়েক বছর ধরে অবশ্য এই শাখায় চলা সমস্ত ট্রেন অস্বাভাবিক দেরিতে আসা-যাওয়া করছে। প্রথম শ্রেণির ভাড়া নেহাত কম নয়। আমার প্রশ্ন, এত মূল্যের বিনিময়েও ন্যূনতম আরাম ও নিরাপত্তা কেন দিতে পারছেন না রেল কর্তৃপক্ষ?

মালতী ভট্টাচার্য মণ্ডল, অশোকনগর, পশ্চিম মেদিনীপুর

দালালরাজ

রাজ্য সরকার সব সরকারি হাসপাতালে বিনা পয়সায় যাবতীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন, সত্যিই সব পরিষেবা বিনা পয়সায় পাওয়া যায়? কেউ যদি কিছু দিন সরকারি হাসপাতালে ঘোরাঘুরি করেন, তা হলে ব্যাপারটা পরিষ্কার বুঝতে পারবেন। প্রায় সব জায়গার সরকারি হাসপাতালে টাকার বিনিময়ে চিকিৎসা পাওয়া যায় দালাল শ্রেণির মাধ্যমে। রোগীকে ভর্তি করানো থেকে অপারেশনের দিনও দালাল শ্রেণি নির্দিষ্ট করে দেয় মোটা টাকা হাতিয়ে। তবে জায়গাবিশেষে ঘুষের দর আলাদা। সামান্য এক্স-রে’র ক্ষেত্রেও রেহাই নেই। এমনকি বিভিন্ন বিভাগে যে ওপিডি থাকে, সেখানেও অর্থের বিনিময়ে লম্বা লাইনের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায়। প্রতিবাদ করার উপায় নেই, কারণ দালালদের দাপট ভয়ঙ্কর। হাসপাতালের মেশিনপত্র খারাপ থাকলে তো দালালদের পোয়াবারো। রোগীদের ধরে দালালরা নিজেদের পছন্দমতো বেসরকারি পরীক্ষাগারে হাজির করেন, যেখানে খরচ বিরাট। সব হাসপাতালে পুলিশ উপস্থিত থাকে। তা সত্ত্বেও দালালদের দাপট মাত্রাছাড়া। তা হলে কি বলা চলে যে, সরকারি হাসপাতাল বিনা পয়সার চিকিৎসাকেন্দ্র?

অরুণকুমার সেন, কলকাতা-১৯

অস্থায়ী তোরণ

বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক-বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের জন্য উদ্যোক্তারা অনেক সময় রাস্তার উপরে আলো বা ফ্লেক্স ঝোলানোর জন্য অস্থায়ী বাঁশের তোরণ তৈরি করেন। কিন্তু ঝড় বা জোরে হাওয়ায় তা ভেঙে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। তাই উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি পথচলতি মানুষদেরও এই বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এবং এই ধরনের তোরণ রাস্তায় থাকলে, অবিলম্বে তা সরিয়ে ফেলার জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

তাপস দাস, সিঙ্গুর, হুগলি

ট্রেনে দেরি

হাওড়া-আমতা রেলযাত্রা দুর্বিষহ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলেছে। নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছনো বতর্মানে প্রায় অসম্ভব। এর উপর প্রায়ই মালগাড়ি চলাচল করায় যাত্রিবাহী ট্রেনগুলি অবহেলিত হয়। এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে পূর্বপরিকল্পিত মাজু ও ডাঁসি স্টেশন দু’টিতে ক্রসিং-এর ব‍্যবস্থা করে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে সাধারণ যাত্রীদের সুরাহার ব‍্যবস্থা করা হোক।

বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, মুন্সিরহাট, হাওড়া

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Health West Bengal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy