Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: কেন পায় না বিচার

পিচরাস্তা থেকে যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেই গাছগুলি লাগানো হয়েছিল। তবু গত বছরে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ করার সময়, খুব একটা প্রয়োজন না হলেও রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া আর কদম— তিনটি গাছকে নির্বিচারে কেটে ফেলা হল

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:০০

গাছ লাগানোর শখ ছোটবেলা থেকেই। তাই অজস্র রকমের ফল-ফুলের গাছগাছালিতে ভর্তি আমার সারা বাড়ি। সবুজায়নের নেশায় বাড়ির সামনে পাকা রাস্তার দু’ধারেও বছর ১০-১২ আগে বেশ কয়েকটি গাছ লাগিয়ে ফেলেছিলাম— কদম, বকুল, রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া, বনফুল ও অশোক। তবে গরু-ছাগলের (এমনকি মানুষেরও) উপদ্রবে সব ক’টিকে রক্ষা করতে পারিনি; নিরন্তর তদারকিতে টিকে ছিল শুধু কদম, অশোক, রাধাচূড়া আর কৃষ্ণচূড়া। এত দিনে সেগুলি মহীরুহে পরিণত হতে শুরু করেছিল।

পিচরাস্তা থেকে যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেই গাছগুলি লাগানো হয়েছিল। তবু গত বছরে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ করার সময়, খুব একটা প্রয়োজন না হলেও রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া আর কদম— তিনটি গাছকে নির্বিচারে কেটে ফেলা হল। খুব অল্পের জন্য রেহাই পেল শুধু অশোক গাছটি। নিজের হাতে লালন করে বড় করে তোলা গাছগুলির নৃশংস হত্যালীলা ঘরের ভিতর বসে জানালার ফাঁক দিয়ে নীরবে প্রত্যক্ষ করলাম। আসলে আহাম্মকের মতো সরকারি জায়গায় গাছ লাগিয়ে অন্যায় তো আমিই করেছি। তাই এই বৃক্ষনিধন যজ্ঞ বন্ধ করতে বলার আমার কোনও অধিকারই ছিল না; সামান্য প্রতিবাদ করারও যুক্তি খুঁজে পাইনি। চোখের সামনে গাছগুলিকে কেটে টুকরো টুকরো করে, ডালপালা-গুঁড়ি ট্রাক্টরে চাপিয়ে কোথায় যেন নিয়ে চলে গেল। সে সব কার ভোগে লাগল, কিছু জানতেও পারলাম না; জানার ইচ্ছাও হল না।

তবু সান্ত্বনা ছিল অশোক গাছটিকে নিয়ে। কিন্তু সেটিরও বিনাশ হতে বেশি সময় লাগল না। কিছু দিন আগে একটি রাজনৈতিক দলের বিশাল জনসভা উপলক্ষে আমার বাড়ির সামনের বিস্তীর্ণ ডাঙা-পুকুরটিতে গাড়ি রাখার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। তখনই পাকা রাস্তা থেকে পুকুরপাড়ে গাড়ি নামা-ওঠার ঢালু রাস্তা নির্মাণ করতে গিয়ে, ফুলে ভরা অশোক গাছটিকে সোল্লাসে এক্সকাভেটর দিয়ে সমূলে উপড়ে ফেলে দেওয়া হল। অথচ গাছটিকে সংহার না করে সহজেই পাশ দিয়েও রাস্তাটি বানানো যেত।

এমন আমার বাড়ির সামনেটা বৃক্ষহীন— ধু ধু প্রান্তর— নয়নজুড়ানো শ্যামলিমার লেশমাত্র নেই। কয়েক দিন আগে বাজার যাওয়ার পথে নজরে পড়ল, বীরভূম বনবিভাগ খুঁটি পুঁতে একটি সরকারি প্রচার-বোর্ড লাগিয়েছে। গাছের ছবি দিয়ে তাতে লেখা: ‘SAVE GREEN SEE DREAM— সবুজ রক্ষা স্বপ্ন দেখা।’ এখন বোর্ডটার দিকে চোখ পড়লেই আমার হাসি পায়।

অশোক প্রামাণিক

কুচুইঘাটা, বীরভূম

ডায়ালিসিস কার্ড

পড়াশোনা করে চাকরি পাইনি। একেবারে বেকার। বাড়ি বাড়ি ঘুরে টিউশনি করে রুটিরুজির সন্ধান করতাম। বয়সের মাঝবেলায় নেমে এল অন্ধকার। ডাক্তারবাবু নিদান দিলেন, ক্রনিক কিডনি ডিজ়িজ়। একেবারে স্টেজ ফাইভ। যে ক’টা দিন বাঁচব, ডায়ালিসিস করাতে হবে। ডায়ালিসিস করাতে গিয়ে, পায়ে, ঘাড়ে, হাতে চ্যানেল করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেলাম। তা ছাড়া এটি একটি ভীষণ যন্ত্রণাদায়ক প্রক্রিয়া। আত্মীয়স্বজন সবাই আশা ছেড়ে দিয়েছে। কেউ খবর নেয় না। বৃদ্ধ মাকে সব ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। মা এক এক বার ধিক্কার দিয়ে বলে, দুই বাটি বিষ গুলে তুই-আমি দু’জনে খেয়ে ফেলি।

হাসপাতালেও স্বাগত নই। জেলা হাসপাতালে এখন অবশ্য বিনা পয়সায় ডায়ালিসিস দেওয়া হয়। অথচ হাসপাতালের ডায়ালিসিসবাবুরা টিকটিক করেন, হাসপাতালের ডায়ালিসিস ইউনিট কেবলমাত্র ইমার্জেন্সি রোগীর জন্য। সিকেডি রোগীর জন্য নয়। এক ঘণ্টা-দু’ঘণ্টা ডায়ালিসিস দিয়ে ছেড়ে দেন। দশ-বারো দিন পর পর ডেট দেন। এতে আরও অসুস্থ বোধ করি। তাই সরকারের কাছে নিবেদন, আমাদের মতো রোগীদের জন্য ডায়ালিসিস কার্ড প্রদান করুন, তা হলে আমরা বেসরকারি নার্সিং হোমে সুবিধামতো ডায়ালিসিস নিতে পারি। তা ছাড়া এক বার সেরোলজি করালে সমস্ত জায়গায় গৃহীত হবে, এই রকম নির্দেশ দেওয়া প্রয়োজন। তা হলে জীবনের কয়েকটা দিন ভাল ভাবে কাটাতে পারব।

সত্য রায়

ভৈরবপুর, বাঁকুড়া

পাঠানসরাই

‘মুঘলসরাই’ শীর্ষক পত্রে (৯-৮) পত্রলেখক লিখেছেন, ‘‘জি টি রোডের সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রখ্যাত রাজা শের শাহ সুরির নাম। এই রাস্তার পাশেই ব্রিটিশরা নির্মাণ করেছিল মুঘলসরাই স্টেশন। শের শাহ সুরির নাম যাতে ইতিহাস থেকে মুছে না যায়, সেই কৃতজ্ঞতাবোধ থেকেই স্টেশনের এই নামকরণ।’’ কিন্তু শের শাহ মুঘল ছিলেন না, বরং মুঘলদের চরম শত্রু ছিলেন। তিনি ছিলেন পাঠান এবং হুমায়ুনকে পরাজিত করে বাবর-প্রতিষ্ঠিত, হুমায়ুন-শাসিত মুঘল সাম্রাজ্যের সাময়িক অবসান ঘটিয়ে ভারতে পাঠান সাম্রাজ্যের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। তিনি উদার, ধর্মনিরপেক্ষ এবং জনপ্রিয় শাসক ছিলেন। কিন্তু কোনও উত্তরাধিকারী রেখে যেতে পারেননি বলে তাঁর মৃত্যুর পর মুঘলরা ভারত সাম্রাজ্য পুনরাধিকার করে নেয়। তাই শের শাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে হলে ওই স্টেশনের নাম মুঘলসরাই নয়, ‘পাঠানসরাই’ করতে হয়, যা এত দিন পর করার চেষ্টা হাস্যকর হবে।

সব চেয়ে ভাল হয়, তাঁর শ্রেষ্ঠ কীর্তি জি টি রোড তথা গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোডের নাম পরিবর্তিত করে তাকে ‘শের শাহ রোড’ করা (যা আগেও প্রস্তাবিত হয়েছে) হলে। এতে প্রকৃত ইতিহাসবোধের পরিচয় মিলবে।

সুস্মিতা ভট্টাচার্য

কলকাতা-২৬

রোমান সংখ্যা

‘মহা-শূন্য’ (রবিবাসরীয়, ১৯-৮) নিবন্ধে পথিক গুহ রোমান সংখ্যার প্রসঙ্গে ল্যাটিন বর্ণমালার একটি অক্ষর বাদ দিয়েছেন। D= ৫০০ উল্লেখ করেননি। এ ছাড়াও কোনও বর্ণের মাথায় “-” বার চিহ্ন থাকলে তার মান ১০০০ গুণ হয়ে যায়। উদাহরণ হিসেবে ৫৬০৭৪২= DLXDCCXLII লেখা যায়। আবার ১০০০০০০=M লেখা যায়। যাদব চন্দ্র চক্রবর্তীর ‘পাটীগণিত’ বইয়ে রোমান অঙ্কপাতন প্রণালী প্রসঙ্গে এর বিশদ বিবরণ পাওয়া যায়।

শান্তলাল মুখোপাধ্যায়

নভি মুম্বই

জরাসন্ধ

‘তিনি রাষ্ট্র, তিনিই মহা ভারত’ প্রবন্ধে (রবিবাসরীয়, ২-৯) জরাসন্ধকে অনবধানবশত কংসের ‘জামাই’ লিখেছি। আসলে তা হবে কংসের ‘শ্বশুর’। জরাসন্ধের দুই কন্যা অস্তি ও প্রাপ্তির সঙ্গে কংসের বিবাহ হয়েছিল। এই ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।

শামিম আহমেদ

বেলুড়, হাওড়া

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

ভ্রম সংশোধন

•‘আমডাঙায় সভা করবে বাম’ (এক নজরে, পৃ ৫, ২-৯) শীর্ষক সংবাদে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রকে ‘সাধারণ সম্পাদক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

•‘আরপিন্দরের সোনা, ফের চমক দ্যুতির’ (খেলা, পৃ ১৮, ৩০-৮) শীর্ষক প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে দ্যুতির ইভেন্ট ২০০ আর ৪০০ মিটার। আসলে হবে ১০০ আর ২০০ মিটার। অন্য একটি জায়গায় লেখা হয়েছে মেয়েদের ১০০ মিটারে তিনি রুপো জিতলেন ২৩.২০ সেকেন্ড সময় করে। আসলে তিনি ২০০ মিটারে এই সময় করে রুপো জেতেন।

•‘টোকিয়োয় ফাইনালের স্বপ্ন দেখছেন দ্যুতি’ (খেলা, পৃ ১৮, ১-৯) শীর্ষক খবরে লেখা হয়েছে ‘দ্যুতি চন্দ এশিয়ান গেমসে দু’টি সোনা জিতেছেন’। তা হবে, দু’টি রুপো।

অনিচ্ছাকৃত এই ভুলগুলির জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

Tree Plantation Development
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy