world cup 2018
বিশ্বকাপ ফুটবল দেখতে বসে একটা ব্যাপার দেখে অবাক লাগছে, বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়রা, এমনকি বেশ নামকরা খেলোয়াড়রাও, নির্বিচারে ফাউল করে যাচ্ছেন। যদি কেউ প্রথম ফুটবল খেলা দেখতে বসেন, সে তো ভাববেন, ফুটবলের একটা আবশ্যিক অঙ্গ বোধ হয় বিপক্ষ খেলোয়াড়ের পা মাড়িয়ে দেওয়া, তাঁকে ধাক্কা মেরে ঠেলে ফেলে দেওয়া, তাঁর পিঠে খুব জোরে কনুই দিয়ে মারা, তিনি যখন ছুটছেন তখন জার্সি ধরে টেনে পারলে ছিঁড়ে দেওয়া, প্যান্ট ধরে টানা, কর্নারের সময় তাঁকে জাপ্টে ধরে থাকা, তাঁর হাতে হাত পেঁচিয়ে শিকল দিয়ে রাখা!
এ নিয়ে কথা বলতে গেলে দু’ধরনের আপত্তি শুনতে হয়। এক, ‘‘ফুটবল হচ্ছে কনট্যাক্ট স্পোর্ট, এ সব একটু-আধটু হবেই।’’ আর দুই, ‘‘ফাউল দিচ্ছেন তো রেফারি!’’ মুশকিল হল, এই ধরনের কথায়, অন্যায়কে সঙ্গত বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফুটবল তো আর বক্সিং নয়, যে মারতে হবেই! ফাউল একটু-আধটু হচ্ছে না, বাড়াবাড়ি রকমের হচ্ছে, আর একটা জিনিস বহু বার বা বার বার হলেই তা সহনীয় মনে হওয়া খুব খারাপ অভ্যাস। আর, রেফারি ফাউল দিন আর না দিন, এত ইচ্ছাকৃত অন্যায় কেন করা হবে? কেন খেলাটার প্রতি দায়বদ্ধতা থাকবে না এমন পরিমাণে যে, সৎ খেলোয়াড় বলবেন, কোনও পরিস্থিতিতেই এতটুকু অন্যায় করে জেতার প্রশ্ন ওঠে না?
রূপসা দাস কলকাতা-৩৩
ঠিক মূল্য
সকলকে বিনামূল্যে চিকিৎসা না দিয়ে সরকারের উচিত, যাঁরা দিতে সমর্থ তাঁদের কাছে উচিত মূল্য নেওয়া। আমরা চাই, ঠিক মানের চিকিৎসা, ঠিক দাম। অনেক বেসরকারি হাসপাতালে ঠকানো হয়। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে যদি সেই চিকিৎসা উচিত মূল্যে দেওয়া হয়, যেমন চিকিৎসার খরচ ২৫ থেকে ৩০ শতাংশে নেমে আসবে, তেমনই বেসরকারি হাসপাতালগুলো তাদের অন্যায় লাভ কমাতে বাধ্য হবে। বেসরকারি হাসপাতালে যে চিকিৎসার খরচ এক লক্ষ টাকা, সরকার সেই মানের চিকিৎসা ও সেবা ত্রিশ হাজার টাকায় দিক, মানুষ সেই টাকা বহন করবে। তা ছাড়া যাঁদের কম টাকার মেডিক্যাল ইনশিয়োরেন্স রয়েছে, তাঁরাও এতে উপকৃত হবেন।
কৌশিক সরকার রঘুনাথপুর, পুরুলিয়া
নারী ও বেদ
সুনীল সেনগুপ্ত (১৯-৬) বৈদিক যুগে নারীদের সাবিত্রীমন্ত্র জপ ও বেদ অধ্যাপনার অধিকার বিষয়ে সুস্পষ্ট অভিমত চেয়েছেন। ১) বৈদিক যুগে নারী ও পুরুষের এক সঙ্গে যজ্ঞ করার অধিকার ছিল। ঋগ্বেদ সংহিতায় প্রথম মণ্ডলের ১৩১ নং সূক্তের তৃতীয় শ্লোকে যজমান ‘দম্পতি’র কথা বলা আছে। এতে বোঝা যায় ও যে নারী ও পুরুষ এক সঙ্গে যজ্ঞ সম্পাদন করতেন। উক্ত শ্লোকটির আরম্ভ— ‘‘বি তা ততস্রে’’। ২) নারীরা ঋষি রূপে বেদের মন্ত্র সঙ্কলন ও রচনার অধিকারী ছিলেন। ঋগ্বেদের পঞ্চম মণ্ডলের ২৮ নং সূক্তের রচয়িতা বিশ্ববারা নামে এক মহিলা ঋষি। ওই সূক্তের প্রথম শ্লোকটি আরম্ভ— ‘‘সর্মিদ্ধো অগ্নির্দিবি’’। ৩) অত্রির কন্যা অপালা ঋষি অষ্টম মণ্ডলের ৯১ নং সূক্ত রচনা করেন, যার আরম্ভ— ‘‘কন্যা বারবায়ত্তি’’। ৪) ইন্দ্রাণী ঋষি দশম মণ্ডলের ১৪৫ নং সূক্ত রচনা করেন— ‘‘ইমাং খনাস্যোষধিং’’ ইত্যাদি। নারী ঋষিরা যজ্ঞের অধিকারী ছিলেন, তাই তাঁরা মন্ত্রের স্রষ্টা হিসাবে বেদ অধ্যাপনার অধিকারও পেয়েছিলেন। হাজার হাজার বছর পূর্বে নারীদের এই অধিকার আমাদের শ্রদ্ধায় অভিভূত করে। পুরো ঋগ্বেদ জুড়ে আরও অনেক উদাহরণ আছে এই বিষয়ে।
শ্রীশঙ্কর ভট্টাচার্য কলকাতা-৩৯
সচেতন ধর্ম
গড়বেতা-৩ ব্লকের পাটসা গ্রামে মনসা মন্দিরের পুজোর প্রসাদ খেয়ে ৩০ জন অসুস্থ (২৪-৬) প্রসঙ্গে এই চিঠি। আধুনিক সমস্ত প্রযুক্তির সুযোগ সুবিধা গ্রহণ তথা ব্যবহার করলেও এক শ্রেণির মানুষ এখনও বিভিন্ন পুজোর অনুষ্ঠান পালনে স্বাস্থ্যসম্মত তথা বিজ্ঞানমনস্ক হতে পারেননি। দীর্ঘ ক্ষণ পূর্বে কেটে রাখা আঢাকা ফলের মাধ্যমে ও আটা, গুড়, কাঁচা দুধ, কলা প্রভৃতি মিশ্রিত করে যে সিন্নি নামক বস্তু তৈরি করা হয়, তা থেকে অতিসার তথা পেটের বিভিন্ন উপসর্গ সৃষ্টি হতে পারে। বিজ্ঞানমনস্ক ও স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে ধর্মাচার পালন করুন। ধর্ম পালন করতে গিয়ে যদি নিজেদের শরীরই অসুস্থ হয়ে পড়ে, সে রকম ধর্ম পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে কি?
বেণীমাধব দাস অধিকারী দেউলি, পশ্চিম মেদিনীপুর
বৃত্তি
রাজ্যের ‘বৃত্তিমূলক শিক্ষা ব্যবস্থা’ আজ মুমূর্ষুপ্রায়। তীব্র আর্থিক অনটনের মধ্যে জীবন অতিবাহিত করে চলেছেন এই বিভাগে নিযুক্ত শিক্ষক-প্রশিক্ষক ও কর্মচারীরা। ২০১১ সাল থেকে এই বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ পুরোপুরি বন্ধ থাকার কারণে বহু শিক্ষাকেন্দ্র মৃত্যুর পথে। বর্তমানে প্রায় ২,৭০০টি বৃত্তিমূলক শিক্ষাকেন্দ্র চালু আছে এবং কমবেশি প্রায় দশ হাজার শিক্ষক-প্রশিক্ষক ও কর্মচারী এই বিভাগে নিযুক্ত। এর মধ্যে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক-প্রশিক্ষকরা মাসিক ন’হাজার ও সাত হাজার টাকা বেতন পান এবং সর্বাধিক সংখ্যক নিযুক্ত আংশিক সময়ের শিক্ষক ও প্রশিক্ষকরা যথাক্রমে ক্লাস পিছু ১৬০ টাকা ও ১১০ টাকা বেতন পান। চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের মেডিক্যাল লিভ বা মাতৃত্বকালীন ছুটি থাকলেও, আংশিক সময়ের শিক্ষকরা এ সমস্ত কিছু থেকে বঞ্চিত, এমনকি এঁদের ভাগ্যে বারো মাসের বেতনও জোটে না। প্রভিডেন্ট ফান্ড, পেনশন, গ্র্যাচুইটি বা অন্যান্য কোনও সরকারি সুযোগ সুবিধা নেই এই ব্যবস্থায় নিযুক্ত শিক্ষকদের। ছাত্রছাত্রীরাও বঞ্চিত ‘সবুজ সাথী’র মতো জনপ্রিয় প্রকল্প থেকে। ‘হোম সায়েন্স’ বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা সরকারি নার্সিং ট্রেনিং থেকেও বঞ্চিত। যদি জনপ্রিয় ও সম্ভাবনাময় এই শিক্ষাব্যবস্থার পুনরুজ্জীবনের জন্য, ‘পার্ট টাইম’ ও ‘কন্ট্রাকচুয়াল’ প্রথার বিলোপ সাধনের মাধ্যমে একটি বারো মাসের সম্মানজনক বেতন প্রদানের ব্যবস্থা হয়, তবে প্রায় অভুক্ত কিছু শিক্ষক একটু বাঁচার স্বপ্ন দেখতে পারেন।
রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় পাঁচলা, হাওড়া
ভ্রম সংশোধন
• ‘পান্তা খেয়ে মাথা ঝুলিয়ে শুয়ে থাকো’ শীর্ষক নিবন্ধে (পত্রিকা, ৭-৭) যাকে ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ লেখা হয়েছে, তা বস্তুত পঞ্চাশের মন্বন্তর (১৯৪৩-৪৪)। দ্বিতীয়ত, ‘পরশপাথর’ ছবির চার বছর বাদে তৈরি হয় ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’, ১০ বছর বাদে নয়।
• ‘জোট রুখতে কি ভোট পিছোবে রাজ্যসভার পদে’ শীর্ষক সংবাদ প্রতিবেদনে (পৃ. ৬, ১০-৭) লেখা হয়েছে, ‘‘১৮ জুলাই বাদল অধিবেশন শুরু হয়ে চলবে জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত।’’ তা হবে অগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। এ ছাড়া, তাইল্যান্ডে উদ্ধারকাজের যে ছবি প্রকাশ হয়েছে (পৃ. ৮), তা অন্য উদ্ধারকাজের। বিভিন্ন সংবাদসাইটে এই ভিডিয়ো সম্প্রচারিত হওয়ায় এই বিভ্রান্তি।
• ‘‘ছাত্রীকে ‘ধর্ষণের চেষ্টা’ শিক্ষকের’’ (কলকাতা, ১০-৭) শীর্ষক খবরে জগৎবল্লভপুরের একটি কলেজের বাংলা শিক্ষক শিবশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়কে ডোমজুড়ের এক কলেজের শিক্ষক লেখা হয়েছে।
অনিচ্ছাকৃত এই ভুলগুলির জন্য আমরা দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ই-মেলে পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy