Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: ‘অপরাজিত’ থেকে

‘পথের পাঁচালী’তে দিনের বেলার সমস্ত অংশই, এমনকী ঘরের ভিতরের দৃশ্যও লোকেশনে তোলা হয়েছিল। শুধু রাতের অংশ স্টুডিয়োতে নেওয়া হয়েছিল।

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০০

কলকাতার কড়চা-য় ‘স্মরণীয়’ (১০-১২) শিরোনামে সুব্রত মিত্রের উপর লেখাটিতে আছে: ‘‘...আজ কে না জানে, ‘পথের পাঁচালী’ থেকেই তাঁর (সত্যজিৎ রায়) ছবিতে যে ‘বাউন্স লাইটিং’-এর ব্যবহার শুরু হল, তার আবিষ্কর্তা ছিলেন সিনেমাটোগ্রাফার সুব্রত মিত্র ...’’ প্রকৃত তথ্য: আবিষ্কর্তা সুব্রত মিত্র হলেও, বাউন্স লাইটিং-এর ব্যবহার শুরু হয়েছিল ‘অপরাজিত’ ছবি থেকে। ‘পথের পাঁচালী’তে দিনের বেলার সমস্ত অংশই, এমনকী ঘরের ভিতরের দৃশ্যও লোকেশনে তোলা হয়েছিল। শুধু রাতের অংশ স্টুডিয়োতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ‘অপরাজিত’-র ক্ষেত্রে, হরিহর বারাণসীর যে বাড়িতে ছিল, সেই বাড়ির দিনের বেলার দৃশ্যগুলো স্টুডিয়োর ভিতর সেট তৈরি করে তোলা হয়েছিল। কৃত্রিম আলোতে দিনের বেলার দৃশ্যে ঘরের মধ্যে চরিত্ররা চলাফেরা করলেও দেওয়ালে বা মেঝেতে যাতে কোনও ছায়া না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে সুব্রতবাবু ওই উদ্ভাবন করেছিলেন।

সোমনাথ রায়

সম্পাদক, ‘এখন সত্যজিৎ’ পত্রিকা

হনুমানের মুখ

গৌতম চক্রবর্তী ‘হনুমানের পিঠেই তো ভারততীর্থ’ (৬-১২) নিবন্ধে ‘হনুমান বাহুক’ গ্রন্থ অনুযায়ী হনুমানের মুখ পোড়ার কাহিনি ব্যাখ্যা করেছেন। আরও একটি কাহিনি পুরাণে পাই। হনুমানের মা অঞ্জনা প্রসবের পর বনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করতে গেলে, ক্ষুধার্ত হনুমান সূর্যকে ফল মনে করে লাফ দিয়ে ধরতে যায়। সেই দিন রাহু আবার সূর্যকে গ্রাস করতে উদ্যত হন। রাহুকে দেখতে পেয়ে হনুমান তাঁকেই ফল ভেবে আক্রমণ করতে উদ্যত হয়। রাহু ইন্দ্রের শরণাপন্ন হলে, ইন্দ্র ঐরাবতে চড়ে সূর্যের কাছে আসেন। এ দিকে হনুমান ঐরাবতকে বেশ বড় রকমের ফল ভেবে গ্রাস করতে যেতেই ইন্দ্র বজ্র দিয়ে তাকে প্রহার করেন। এই বজ্রের আঘাতেই হনুমানের হনু, অর্থাৎ চোয়াল পুড়ে যায়।

রতন চক্রবর্তী

উত্তর হাবড়া, উত্তর ২৪ পরগনা

দেব ও দৈত্য

‘রাবণ ও অন্যান্য’ (২৫-১১) চিঠিতে পত্রলেখক বলেছেন, রাবণ যে হেতু ব্রহ্মর্ষি বিশ্রবার পুত্র, তাই তিনি ‘ব্রাহ্মণসন্তান’। আর যে হেতু রাবণ কামাতুর পাপাচারী ও অত্যাচারী, তাই তিনি রাক্ষস। অথচ ‘মনু সংহিতা’ অনুসারে, ব্রাহ্মণের ঔরসে শূদ্রাণীর গর্ভের সন্তান কখনওই ব্রাহ্মণ নয়, প্রতিলোমজ নিষাদ। তা হলে রাক্ষসী মা কৈকসীর পুত্র বলে তো রাবণের রাক্ষস পরিচয়ই স্বাভাবিক। লেখকের মতে, ‘‘‘দেব’ ও ‘দৈত্য’ গুণবাচক শব্দ।’’ যদি সত্যি তা-ই হয়, তবে প্রজাপালক, সুশাসক, সৎ ও দানবীর রাজা বলি কেন দৈত্য বা দানব? আবার, গুরুপত্নী অহল্যাকে ধর্ষণকারী ইন্দ্র কেন ‘অসুর’ নন?

পত্রলেখক বলছেন, শূদ্রনারী মৎস্যগন্ধা, রাক্ষসী হিড়িম্বা, চণ্ডাল গুহক ইত্যাদিদের আর্য ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয় সমাজ ‘একঘরে’ করেনি, বরং একান্ত আপন করে নিয়েছিল। ঠিকই, কিন্তু এ সবের পিছনেও তো কিছু অার্যসুলভ কারণ ছিল। মৎস্যগন্ধা অর্থাৎ সত্যবতী শূদ্র ধীবররাজের ঘরে পালিতা হলেও আসলে ছিলেন ক্ষত্রিয় পুরুবংশের চেদিরাজ উপরিচর বসুর কন্যা। ভীমের হিড়িম্বা রাক্ষসীকে বিয়ে করার শর্তই ছিল, পুত্রসন্তানের জন্মের পর হিড়িম্বাকে ফিরে যেতে হবে তার অরণ্যচারী স্বজনদের কাছে। আর নিষাদরাজ গুহক আগের জন্মে ছিলেন ঋষি বশিষ্ঠের ছেলে বামদেব। তাই তিনি সহজেই ক্ষত্রিয় রাজপুত্র রামচন্দ্রের প্রাণতুল্য সখা।

পৌরাণিক আখ্যানে কংস হলেন পাপিষ্ঠ ও অত্যাচারী রাজা, কারণ তিনি আসলে রাক্ষস দ্রুমিলের ঔরসজাত সন্তান, যাদবপতি মথুরারাজ উগ্রসেনের ঔরসে তাঁর জন্ম নয়। রাক্ষসরাজ রাবণ কামতাড়িত হয়ে বন্দিনি সীতাকে কখনওই স্পর্শ করেননি, তবু তিনি কামাতুর পাপাচারী হিসেবেই ধিক্কৃত। কারণ হিসেবে একটা অদ্ভুত গল্পও ফাঁদা হয়েছে: রাবণ তাঁর ভাইপো নলকুবেরের স্ত্রী রম্ভাকে ধর্ষণ করেছিলেন বলে নলকুবের শাপ দিয়েছিলেন, রাবণ কখনও কোনও নারীর উপর বলপ্রয়োগ করলে মাথা ফেটে তাঁর মৃত্যু হবে। অতএব রাবণ নাকি মৃত্যুভয়ে সীতাকে স্পর্শ করেননি। অথচ বোন শূর্পনখার উপর রাম-লক্ষ্মণের নির্মম আক্রমণের প্রতিশোধ নিতে গিয়ে তিনি হয়ে গেলেন পাপিষ্ঠ!

ঋগ্বেদে আর্যদের বৈদিক দেবতা ইন্দ্রের হাতে হাজার হাজার ‘দাস’ ও ‘দস্যু’দের হত্যার বর্ণনা কি আর্য-অনার্য প্রেমের কথা মনে করায়? আসলে আর্য-অনার্য বৈরিতায় বিজয়ী আর্যপক্ষীয় ঋষিদের চোখেই আমরা পৌরাণিক চরিত্রগুলির পাপ-পুণ্য, মন্দ-ভাল দেখতে অভ্যস্ত। পত্রলেখক ঋষি প্রচেতার পুত্র ব্রাহ্মণ ভার্গব (‘উত্তর কাণ্ড’-এ বর্ণিত) মহাকবি বাল্মীকিকে ‘অনার্য ব্যাধ’ বানিয়ে ছেড়েছেন। ভারতীয় বৈদিক আর্য ও আহুর (অসুর) মাজদার উপাসক ইরানীয় আর্যদের পারস্পরিক সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতেই ইন্দ্রের হাতে বধ হন বৃত্রাসুর, তাই দেবরাজ ইন্দ্র ব্রহ্মহত্যার পাপে লিপ্ত হন। ব্রাহ্মণ ঋষির পুত্র ঘোর কৃষ্ণবর্ণের রাবণকে হত্যা করে রামের ওপর তো ব্রহ্মহত্যার পাপ চাপেনি।

ব্রাহ্মণদের অনুরোধে নিরপরাধ ধার্মিক শূদ্র তপস্বী শম্বুককে রামচন্দ্র স্রেফ তপস্যা করার অপরাধে হত্যা করলেন— সে কাহিনি কি ম্যাক্স মুলার আর মার্ক্সবাদী ইতিহাসবিদদের চক্রান্তে রামায়ণের মধ্যে ঢুকে গিয়েছে?

পীযূষ রায়

বেহালা

কমিউনিস্ট জ্যাক

‘কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য জ্যাক মা’ (২৮-১১) পড়ে আশ্চর্য হইনি, কারণ সমাজতন্ত্রের মোড়কে ধনতন্ত্রের চাষ-আবাদ বহু বছর আগে থেকেই চিন-এ হয়ে আসছে। কিন্তু ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের কাছে জানতে ইচ্ছা করছে, তাঁরা কি এ বার টাটা বিড়লা অম্বানীদের অনুরোধ করবেন, দলের সদস্যপদ নিতে? কারণ জ্যাক মা সেই চিনের মানুষ, যে দেশে মেঘ করলে এ দেশে কমিউনিস্ট পার্টির কর্তারা ছাতা মেলে ধরতে প্রস্তুত হয়ে থাকেন!

হরিনারায়ণ নন্দী

উকিলপাড়া, উত্তর দিনাজপুর

নিত্যদিনের

গত ২৭-১১ থেকে ২৯-১১ আনন্দবাজার পত্রিকা বিভিন্ন শিরোনামে জয়পুরিয়া কলেজের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে খবর পরিবেশন করেছে। আমাদের মনে হচ্ছে, পত্রিকার সাংবাদিক জয়পুরিয়া কলেজের দৈনন্দিন খুঁটিনাটি বিষয়ক সংবাদ পরিবেশনে অত্যন্ত আগ্রহী। যেমন, ২৭-১১ যা ‘লুট’ বলে পরিবেশিত হল, ২৮-১১ তারিখে তার প্রাপ্তিসংবাদ। আবার, ২৯-১১ তারিখে উত্তরপত্রের ‘হারানো’ ও ‘প্রাপ্তি’সংবাদ পরিবেশন করা হচ্ছে।

এগুলি কলেজের একান্ত অভ্যন্তরীণ সমস্যা ও তার সমাধানও কলেজ অভ্যন্তরীণ ভাবে করে নিতে পারে। প্রয়োজনে শিক্ষাবিভাগের উচ্চতর আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। কিন্তু আনন্দবাজার পত্রিকার অযাচিত অনুপ্রবেশ ও অহেতুক বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন সমর্থন করা যায় না।

ঈপ্সিতা চন্দ

সম্পাদিকা, জয়পুরিয়া কলেজ শিক্ষক সমিতি

প্রতিবেদকের উত্তর: সবিনয়ে জানাই, জয়পুরিয়া কলেজ শিক্ষক সমিতি খাতা ‘লুট’ বা ‘হারানো’র খবর অস্বীকার করেনি। প্রকাশিত খবরগুলিতে কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্যও ছিল। চিঠিতে লেখা হয়েছে, কলেজের ‘দৈনন্দিন খুঁটিনাটি বিষয়’ আনন্দবাজারে প্রকাশিত হল কেন? কলেজের হাজিরা খাতা পড়ুয়াদের কেউ কেউ লুট করছেন, তা থানাকে জানাতে হচ্ছে এবং ছাত্রদের শোকজ় করতে হচ্ছে— তা নিত্যদিনের বিষয়? কলেজ এ-ও বলেছে, এগুলি ‘‘অভ্যন্তরীণ সমস্যা ও তার সমাধানও কলেজ অভ্যন্তরীণ ভাবে করে নিতে পারে।’’ সমস্যা চিহ্নিত করতে পারার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ। সমস্যার সমাধান হোক, তা সকলেরই কাম্য, এবং সে কারণে সমস্যা তুলে ধরা সংবাদপত্রের দায়িত্ব।

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

Aparajito Satyajit Ray Bounce Lighting
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy