শেষ পর্যায়ে কিছু উন্নতি দেখব কি?
দেশের অন্য সব রাজ্যকে পিছনে ফেলে যে চড়া সুরে পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়েছিল নির্বাচনের প্রথম পর্ব, নির্বাচনের শেষ পর্বে সেই সুরকে আরও চড়ায় তুলে রাখল এই রাজ্য। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কড়া চিঠি, এই রাজ্যের নির্বাচনী অফিসারদের নিরপেক্ষতা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রীর নামে মানহানির মামলা এবং অন্তিম পর্যায়ে নির্বাচনী ক্ষেত্রের বিভিন্ন এলাকায় ‘বহিরাগতের’ আনাগোনা ও মারধরের অভিযোগের মধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে থাকল ভোটের প্রাক মুহূর্তের পরিবেশ।
শেষ পর্যায়ে ১৯ মে, রবিবার শুধুমাত্র ৯টি কেন্দ্রের ভোট প্রার্থীদের ভাগ্য পরীক্ষা নয়, পরীক্ষাটা এই অন্তিম পর্যায়ে এসে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন-পুলিশ, এবং সর্বোপরি এ রাজ্যের সাধারণ মানুষের। ভোট কাকে দেবেন অথবা দেবেন না, তা তো স্থির করবেন ভোটদাতা স্বয়ং। কিন্তু তাঁর বাড়ি থেকে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র পর্যন্ত যাওয়াটাকে নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকে, নিশ্চিত করতে হবে সুষ্ঠু ভোটকেও। শনিবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যে টুকরো চিত্রগুলো উঠে এসেছে তা স্বস্তিদায়ক নয়। কোথাও অভিযোগ উঠেছে বিরোধী দলের সমর্থক হওয়ার জন্য শাসকের অত্যাচারের অভিযোগ, কোথাও বা উঠেছে ভিন্ রাজ্যের ‘বহিরাগত’দের আনাগোনা ও দাপাদাপির কথা। এই সবই গণতন্ত্রের নামে! প্রতিটি দল মুখে গণতন্ত্র রক্ষার কথা বলছে, অথচ কার্যক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধেই যখন কড়া অভিযোগ উঠছে তখন যথাযোগ্য উত্তর দিতে অপারগ থাকছে প্রত্যেকেই।
এ বারের ভোট তাই, অন্তত এই রাজ্যে হোক অন্য সব কিছুর পাশাপাশি ‘আমার ভোট আমি দেব’ এই অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে। এই অভাগা বঙ্গ বহু বছর হল বিস্মৃত হয়েছে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নামের এক কল্পকথাকে। এ দেশের আরও বেশ কিছু রাজ্য বিস্মৃত ছিল দীর্ঘ দিন। বিহার অথবা উত্তরপ্রদেশ, তাদের কলঙ্কময় অতীতকে পিছনে ফেলে স্বাভাবিকতার পথে যাত্রা শুরু করেছে বেশ কিছু বছর হল। একা আমরাই পড়ে থাকব কেন অনেক পিছনে? গণতন্ত্রের ‘থাপ্পড়’ বলে যদি কিছু থেকে থাকে তবে গণতন্ত্রের অস্ত্র বলেও নিশ্চয়ই কিছু আছে। গণতন্ত্রের সেই অদৃশ্য হাতিয়ারেই বলীয়ান হতে হবে এ বার এই রাজ্যের মানুষকে। কলঙ্ক মোচনের দায় আমার, আপনার। শেষ পর্যায়ে কিছু উন্নতি দেখব কি?
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
আরও পড়ুন: অশান্তির আশঙ্কায় রয়েছে বহু এলাকাই
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আরও পড়ুন: শেষ দফার আগে মমতার ‘পত্রাঘাত’ কমিশনকে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy