নয়ডার একটি পার্কে এ ভাবেই বসানো হয়েছিল একাধিক মূর্তি। —ফাইল চিত্র
অনুপ্রেরণা বড় বিষম বস্তু। পশ্চিমবঙ্গে সরকারি সমস্ত প্রচারে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণার কথা যে ভাবে এ যাবৎ ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে রাজ্যবাসীর হৃদয়ে যে তা দৃঢ়প্রোথিত হয়ে বসে গিয়েছে এত দিনে, এটা বুঝতে রকেটবিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু সেই অনুপ্রেরণাকেই যখন জনস্বার্থের সঙ্গে জুড়ে দেন কেউ, তখন তা যে বেশ নাটকীয় উপাদান যোগ করে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই কাজটাই করলেন মায়াবতী। আদালতে হলফনামা দিয়ে বললেন, ২৬০০ কোটি টাকা খরচ করে রাজ্য জুড়ে নিজের মূর্তি-সহ বিভিন্ন মূর্তি যে বসিয়েছেন তিনি, তা নাকি জনস্বার্থে! মূর্তি দেখে অনুপ্রেরিত হবেন মানুষ!
এই দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে এখন ব্যক্তিপূজার যে রকম হিড়িক, এ বলে আমায় দ্যাখ ও বলে আমায় ধাঁচে যে রকম প্রতিযোগিতা, তাতে দিন আনা দিন খাওয়া আম আদমি ঈষৎ ধন্দে পড়ে যান ঠিকই, তবু চলতে-থাকা এই হেঁইয়ো প্রচার দৌড়ে ক্লান্ত মন ভাসিয়েও দেন এক সময়। সেই মনও চমকে উঠে ফিরে তাকাতে বাধ্য করে, মূর্তি প্রতিষ্ঠা নাকি জনস্বার্থে? মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে মায়াবতীর স্বমূর্তিধারণ আশপাশের নেতা-আমলাদের জন্য ভীতিউদ্রেককারী হতে পারে, হয়তো অনুপ্রেরণার জন্মও দিতে পারে, কিন্তু স্বমূর্তিস্থাপন যে কারও জন্য প্রেরণাদায়ক হতে পারে, অতি বড় অনুপ্রেরিত ভক্তও বোধহয় তা কল্পনা করতে পারেননি।
নেতা বা নেত্রীর সঙ্গে অনুগামীর তফাত বোধ হয় সেখানেই। আম আদমির দূর কল্পনাতেও যে দৃশ্যকল্প তৈরি হয় না, নেতানেত্রীর এক কলমের আঁচড়ে অবলীলায় সেটাই সম্ভব হয়। অতএব, দেশ হয়ে যায় শস্যশ্যামলা, শহর তিলোত্তমা, গোলাভরা ধান এবং জলধিতরঙ্গের চেয়েও আনন্দোচ্ছল মানুষের ছবি ভোটের মরসুমে সামনে এসে যায়। এসে যায় অবলীলায় অবাধেই।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আরও পড়ুন: ‘জনস্বার্থে’ বসানো হয়েছিল ২৬০০ কোটি টাকার মূর্তি! সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা মায়াবতীর
সবটাই হয় জনস্বার্থে। মায়াবতী যে কারণে নাকি উত্তরপ্রদেশ জুড়ে কাতারে কাতারে মূর্তি বসিয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy