Advertisement
০২ মে ২০২৪

লন্ডন ডায়েরি

এ বারের আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের বেশির ভাগ টিকিটই কিনে নিয়েছেন দক্ষিণ এশিয়ার মানুষেরা। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, ৮ লক্ষ টিকিটের মধ্যে বিক্রির জন্য ছাড়া ৩ লক্ষ ২৪ হাজার টিকিটই কিনে নিয়েছেন ভারত,

শ্রাবণী বসু
শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

২৫ হাজার টিকিটের জন্য আবেদন ৬ লক্ষ

এ বারের আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের বেশির ভাগ টিকিটই কিনে নিয়েছেন দক্ষিণ এশিয়ার মানুষেরা। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, ৮ লক্ষ টিকিটের মধ্যে বিক্রির জন্য ছাড়া ৩ লক্ষ ২৪ হাজার টিকিটই কিনে নিয়েছেন ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, এমনকি আফগানিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ! অধিকাংশ সমর্থকই ব্রিটিশ এশীয়, তবে ভারত ও পাকিস্তান থেকেও ইংল্যান্ডে এসে হাজির হয়েছেন বহু ভক্ত। সবচেয়ে বেশি চাহিদা ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের টিকিটের। ২৫ হাজার টিকিটের জন্য আবেদন করেছেন প্রায় ৬ লক্ষ মানুষ! স্টেডিয়ামের বাইরে টিকিট-দালালদের পোয়াবারো, বোঝাই যাচ্ছে।


বহুমূল্য

লন্ডনে গ্রীষ্মের শুরু মানেই সদ্‌বিজ় আর ক্রিস্টিজ়-এ আধুনিক ভারতীয় শিল্পকলার নিলাম। এক সময় মকবুল ফিদা হুসেন নিজে হাজির থাকতেন, সানন্দে দেখতেন তাঁর আঁকা ছবির দর কেমন চড়ছে। এ বছর সদবিজ়-এ নিলামে ওঠা প্রধান শিল্পবস্তুগুলোর মধ্যে আছে প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী অমৃতা শেরগিল-এর আঁকা বিরল এক নিসর্গচিত্র, ‘ট্রিজ়’। শিল্পীর আঁকা মাত্র যে দশটা ছবি ভারতের বাইরে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন, এ তারই একটা। এত দিন পর্যন্ত অমৃতা শেরগিলের ছ’টা ছবি আন্তর্জাতিক বাজারে নিলামে উঠেছে।

‘ট্রিজ়’ ছবিটা ১৯৩৯ সালে সরাসরি অমৃতার কাছ থেকে কিনে নিয়েছিলেন ওঁর বন্ধু লাজ়লো ও রোসি উরবাখ। সেই থেকে ওঁদের পরিবারেই ছিল এই ছবি। ১৯৩৮ সালে বুডাপেস্টে ভিক্টর এগানকে বিয়ে করার এক বছর পর অমৃতা এঁকেছিলেন ‘ট্রিজ়’। ওই বছরেই তিনি ভারতে চলে আসেন, জন্মভূমি হাঙ্গেরিতে ফেরেননি আর কোনও দিন। মনে করা হচ্ছে, নিলামে ছবিটার দাম উঠবে ৫-৭ লক্ষ পাউন্ড! এ বছর নিলামের অন্যতম আকর্ষণ ফ্রান্সিস নিউটন সুজ়া-র ‘আনটাইটলড’ (১৯৫৮) ছবিটি। ওল্ড টেস্টামেন্টে বর্ণিত সুসানা নামের এক ইহুদি মেয়ের গল্প ধরা আছে এই ছবিতে। মনে করা হচ্ছে এই ছবির দর উঠবে ৬-৮ লক্ষ পাউন্ড! মকবুল ফিদা হুসেন, রাম কুমার, ভূপেন খাখরের ছবিও আছে। কালই সেই মাহেন্দ্রক্ষণ!

যে যেখানে দাঁড়িয়ে

গত সপ্তাহ জুড়ে মিডিয়া ব্যস্ত ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফর নিয়ে। রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথ উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্টকে, বাকি রাজপরিবার কিন্তু অত উষ্ণতা দেখায়নি। কথা ছিল, ক্লেরেন্স হাউসে যুবরাজ চার্লস ট্রাম্পের সঙ্গে ১৫ মিনিট কথা বলবেন। সেটা গিয়ে দাঁড়াল জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে রীতিমতো দেড় ঘণ্টার একটা ভাষণে। চার্লস পরিবেশ ও সংরক্ষণ নিয়ে খুব আবেগী, ট্রাম্প মোটেও নন। চার্লসের কথায় তিনি বিন্দুমাত্র প্রভাবিত হননি। সফরের আগে ডাচেস অব সাসেক্স মেগান মার্কলকে ট্রাম্পের ‘ন্যাস্টি’ বলা নিয়ে শোরগোল পড়েছিল, ট্রাম্প এই সফরে টিভি সঞ্চালক পিয়ার্স মর্গানকে বলেছেন, ডাচেস আসলে ‘ভেরি নাইস’। মেগান বাকিংহাম প্যালেসে মধ্যাহ্নভোজে ছিলেন না, তাঁর স্বামী প্রিন্স হ্যারি ছিলেন। অবশ্য ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেননি।


রানি ও ভারত

মহারানি ভিক্টোরিয়ার জন্মের দুশো বছর উদ্‌যাপন হচ্ছে— মিউজ়িয়ম, গ্যালারি, টিভি চ্যানেলে। কেনসিংটন প্যালেসে ২৪ মে জন্ম হয়েছিল তাঁর, তিনিই প্রথম ব্রিটিশ শাসক যিনি তাঁর রাজত্বকালের সুবর্ণ ও হীরক জয়ন্তী পালন করেছিলেন। ১৯০১ সালে ৮১ বছর বয়সে মারা যাওয়ার আগে দেখে গিয়েছিলেন রেল আর বাষ্প-যুগ, শিল্প বিপ্লবের শুরুটাও। গত মাসেই কেনসিংটন প্যালেসে শুরু হয়েছে ‘ভিক্টোরিয়া: ওম্যান অ্যান্ড ক্রাউন’ নামের প্রদর্শনী, সেখানে আছে রানির বালিকাবেলায় পরা গাউন, ৪২ বছর বয়সে স্বামীকে হারানোর পর থেকে তিনি মূলত যে কালো গাউন পরতেন, সেগুলোও। ‘এম্পায়ার অ্যান্ড ইন্ডিয়া’ অংশে দেখা যাবে উপমহাদেশের সঙ্গে ভিক্টোরিয়ার সম্পর্কসূত্রগুলি। আছে কোহিনুরের একটি প্রতিরূপ— প্রিন্স আলবার্ট সেটিকে কেটে ইউরোপীয় ছিরিছাঁদের করে ফেলার আগে ঠিক যেমনটা ছিল, তেমন। পঞ্জাবের শেষ মহারাজা দলীপ সিংহের একটা প্রমাণ আকারের ফটো আছে, আছে তাঁর ব্যবহৃত জ্যাকেটও। কুর্গের রাজকুমারী গৌরাম্মার ছবি আছে, ওঁর শৌখিন জুতোও। ব্রিটিশরা তাঁদের রাজ্য দখল করার পর ওঁরা দু’জনেই ইংল্যান্ডে এসে ছিলেন, হয়ে উঠেছিলেন রানির কাছের মানুষ। পরিচারক থেকে যিনি রানির শিক্ষক হয়ে উঠেছিলেন, সেই মুনশি আবদুল করিমের ব্রোঞ্জমূর্তিও আছে। আছে মহারানির ‘হিন্দুস্তান জার্নাল’ও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Art History London
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE