আমাদের লড়াই কাশ্মীরের জন্য, কাশ্মীরিদের বিরুদ্ধে নয়। রাজস্থানের টঙ্কে একটি জনসভায় স্পষ্ট জানালেন নরেন্দ্র মোদী।—ছবি পিটিআই।
অবশেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মুখ খুললেন। এ কথাটা অনেক দিন আগেই তাঁর কাছে প্রত্যাশিত ছিল। দেরিতে হলেও সে কথা অবশেষে শোনা গেল তাঁর মুখে। ‘লড়াইটা কাশ্মীরের জন্য,কাশ্মীরিদের বিরুদ্ধে নয়’, এ কথাটা যে জোর গলায় বলা দরকার হয়ে পড়েছিল, প্রধানমন্ত্রীর শনিবারের বক্তব্যই সেটা আরও একবার স্পষ্ট করে দিল।
অন্যথায় যা হচ্ছিল, তা তীব্র এক উগ্রতা ছাড়া আর কিছু নয়। কাশ্মীর থাকবে ভূস্বর্গ, মুখে বলতে থাকব কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, অথচ সেই কাশ্মীরেরই মানুষ যাঁরা, তাঁদের বলব দূর হঠো, এর চেয়ে বড় দ্বিচারিতা আর কিছু হতে পারে না। এ মাটি আমার, মানুষ নয়, এই ভাবনার মধ্যে জাতীয়তাবাদের হিংস্র প্রকাশ থাকতে পারে, কিন্তু ন্যূনতম ভারতীয়ত্ব নেই এটা হলফ করে বলাই যায়। রাস্তাঘাটে কাশ্মীরি শালওয়ালাদের পিটিয়ে দেওয়া আম জনতার একাংশই শুধু নয়, সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে শীর্ণতর পেশির আস্ফালনে মত্ত এক দল ক্রোধোন্মাদই নয়, তথাগত রায়ের মত রাজ্যপাল স্তরীয় ব্যক্তিও যখন কাশ্মীরিদের বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করেন তখন বোঝা যায় রোগের প্রকোপটা কতটা ছড়িয়েছে।
এটা ঠিকই, দেরিতে হলেও রাজনাথ সিংহের মত সরকারের শীর্ষস্থানীয়রা তথাগত রায়ের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন, নিন্দা করেছেন কাশ্মীরিদের বিরুদ্ধে আক্রমণের ঘটনাকেও। এনডিএ-র এই জমানায় নরেন্দ্র মোদীকে বাদ দিলে অন্য মন্ত্রীদের গুরুত্ব কতটা তা নিয়ে রাজনৈতিক-প্রশাসনিক স্তরে যথেষ্ট জল্পনা রয়েছে। মোদী বিনে গীত নাই, জমানার প্রধান মন্ত্র যখন এটাই, তখন মোদী কেন মুখ খুল খুলছেন না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল সর্ব স্তরে এই বিশেষত যেখানে এই নিগ্রহের ঘটনা যখন কমছিল না কিছুতেই।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
এখন নরেন্দ্র মোদী স্পষ্ট বাক্যে যা বললেন, সেটা ‘উগ্র’পন্থীদের কানে পৌঁছনো দরকার। আমারই দেশের সহ নাগরিকের বিরুদ্ধে অন্য নাগরিকের বিষ-বিদ্বেষ বাষ্প নির্গত হবে ক্রমাগত, এর চেয়ে মারাত্মক আর কিছু হতে পারে না। বলা-কওয়ার দিনও ফুরলো, এ বার কিন্তু কড়া হাতে এই দৌরাত্ম্যের মোকাবিলা করা দরকার। সরকারের বোঝা ও বোঝানো দরকারএই দুর্বৃত্তপনা বরদাস্ত করা যাবে না কোনও মতেই। আমার দেশের হৃদয়ে কাশ্মীর যতটা, কাশ্মীরিও ততটাই যে স্থান নিয়ে রয়েছে সেটা বোঝাতে না পারলে হেরে যাব আমরা, জিতবে অন্যায়কারীর দল।
আরও পড়ুন: ‘কাশ্মীরের জন্য লড়াই, কাশ্মীরিদের বিরুদ্ধে নয়’, দেশকে বার্তা নরেন্দ্র মোদীর
সরকারের কি আর দ্বিতীয়বার ভাবার অবকাশ রয়েছে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy