Advertisement
E-Paper

খাদ্যগুণ নির্ণয়

বর্তমানে খাবারের প্যাকেটের উপর উপাদানগুলির পরিমাণ লেখা থাকে, তা দেখে একমাত্র পুষ্টিবিশারদরাই বলতে পারবেন সেটি স্বাস্থ্যকর, না অস্বাস্থ্যকর।

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২২ ০৫:১৬

জনপ্রিয়তা ক্রমবর্ধমান প্যাকেটজাত খাবারের। কিন্তু সেখানে ব্যবহৃত উপাদানগুলির পুষ্টিগুণ ঠিকঠাক বজায় থাকছে, না কি স্বাদ বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় যথেচ্ছ অস্বাস্থ্যকর উপাদান মেশানো হচ্ছে, তা সাধারণ মানুষের বোঝার উপায় নেই। বর্তমানে খাবারের প্যাকেটের উপর যে উপাদানগুলির পরিমাণ লেখা থাকে, তা দেখে একমাত্র পুষ্টিবিশারদরাই বলতে পারবেন সেটি স্বাস্থ্যকর, না অস্বাস্থ্যকর। অথচ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের সঙ্গে জনস্বাস্থ্যের প্রশ্নটি জড়িত। বিশেষ করে ভারতের মতো জনবহুল দেশে বিষয়টি সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ২০২০ সালে ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়া-র এক সমীক্ষায় প্রকাশ পেয়েছিল, প্রায় তেরোশো পণ্যের নমুনার মধ্যে ৯৫ শতাংশতেই অন্তত একটি উপাদান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত মাত্রা অতিক্রম করে গিয়েছে। সুতরাং, আইআইএম আমদাবাদের প্রস্তাবনা অনু‌যায়ী, সম্প্রতি সমস্ত প্যাকেটজাত খাবারে প্যাকেটের উপরেই ‘হেলথ স্টার’ বসানোর পরিকল্পনা করেছে এফএসএসএআই। সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর খাবারের প্যাকেটে থাকবে পাঁচটি তারা। এক বা দুই তারাপ্রাপ্ত খাবারকে অস্বাস্থ্যকর হিসেবেই ধরে নিতে হবে। অর্থাৎ, তারকাচিহ্ন গুনেই ক্রেতা বুঝতে পারবেন, খাবারটি কতটা নিরাপদ।

কিন্তু এ-হেন পরিকল্পনায় আপত্তি জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, তারকাচিহ্ন থেকে ক্রেতার বুঝে ওঠা সম্ভব নয়, কেন প্যাকেটজাত খাবারটি তাঁর স্বাস্থ্যের পক্ষে নিরাপদ নয়। তা ছাড়া কোম্পানিগুলি অস্বাস্থ্যকর খাবারের সঙ্গে ফল, বাদামের মতো কিছু পুষ্টিকর উপাদান মিশিয়ে বেশি রেটিং পেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ক্রেতা জানতেও পারবেন না, যে খাবারটিকে নিরাপদ ভেবে তিনি নিজের সন্তানের হাতে তুলে দিচ্ছেন, তাতে হয়তো চিনির মাত্রা অনেক বেশি। একই ভাবে এই রেটিং পদ্ধতি মেনে অনেক স্বাস্থ্যকর খাদ্যও অস্বাস্থ্যকর প্রতিপন্ন হতে পারে। সুতরাং, এই পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে কোনও সুস্পষ্ট স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পদক্ষেপ করা সম্ভব নয়। এই কারণে তাঁরা খাদ্য বা পানীয়ের প্যাকেটের উপরে তারকাচিহ্নের পরিবর্তে সরাসরি ক্ষতিকর উপাদানটি সম্পর্কে লিখে দেওয়ার পক্ষপাতী। এতে ক্রেতার পক্ষে সঠিক এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সুবিধাজনক হবে।

বাস্তবিকই খাদ্যের গুণমান বোঝানোর ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের বোধগম্য হয়, এমন চিহ্ন ব্যবহার করা প্রয়োজন। যেমন, সিগারেট স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর— এই প্রচারের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর প্রতিপন্ন হয়েছে প্যাকেট ও বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত ক্যানসারের ছবিগুলি। সুতরাং, এই বিষয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন, একটি পন্থা সফল না হলে অন্য পদক্ষেপ করতে হবে। কিন্তু উদ্যোগটি অবিলম্বে করতে হবে। বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে স্পষ্ট, বর্তমানে ভারতে প্যাকেটজাত খাদ্যের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অণুপরিবারের জন্ম এবং মেয়েদের কর্মক্ষেত্রে যোগদানের সংখ্যাবৃদ্ধির কারণে সময় বাঁচাতে চটজলদি খাবারের দিকে ঝুঁকছেন মানুষ। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তা স্বাস্থ্যসম্মত হচ্ছে না। ফলস্বরূপ, দেশে ডায়াবিটিস, হৃদ‌্‌যন্ত্রের সমস্যা-সহ নানা রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অল্পবয়সিরাও ওবেসিটি-র শিকার হচ্ছে। সুতরাং, এ ক্ষেত্রে সরকারের কড়া হাতে রাশ ধরা প্রয়োজন। নাগরিক রোগগ্রস্ত হলে তা দেশের উন্নতির পক্ষে অন্তরায়।

Packaged Food Quality
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy