Advertisement
E-Paper

সভ্যতাকে উল্টো দিকে ফেরানোর এই চেষ্টা অনর্থ ডাকবে!

দুর্বোধ্য একটা বিপরীতমুখী যাত্রা শুরুর চেষ্টা হচ্ছে। সবাই আমরা সাক্ষী থাকছি সে চেষ্টার। কেউ প্রতিবাদ করছি, কেউ নীরব থাকছি। কিন্তু নীরব থাকার অবকাশটা বোধ হয় কারও সামনেই আর খুব বেশি দিন থাকবে না।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৪০

দুর্বোধ্য একটা বিপরীতমুখী যাত্রা শুরুর চেষ্টা হচ্ছে। সবাই আমরা সাক্ষী থাকছি সে চেষ্টার। কেউ প্রতিবাদ করছি, কেউ নীরব থাকছি। কিন্তু নীরব থাকার অবকাশটা বোধ হয় কারও সামনেই আর খুব বেশি দিন থাকবে না। হয় এ বিপরীতমুখী যাত্রায় সামিল হতে হবে, না হলে এর উচ্চকিত বিরোধিতা শুরু করতে হবে। আর কোনও বিকল্প থাকবে না।

মার্কিন মুলুকে আচমকা লকলকিয়ে ওঠা জাতিবিদ্বেষের বলি হয়ে গেলেন ভারতীয় ইঞ্জিনিয়র শ্রীনিবাস কুচিভোটলা। বিদ্বেষে উন্মাদ এবং প্রায় ভূতগ্রস্ত এক মার্কিন নাগরিক আমেরিকা থেকে বেরিয়ে যেতে বললেন শ্রীনিবাসকে। তার পর গুলি করে দিলেন।

মার্কিন বিমানবন্দরে নিরাপত্তা কর্মীদের হাতে চরম হেনস্থা হলেন কিংবদন্তী বক্সার মহম্মদ আলির পুত্র। পুরোদস্তুর মার্কিন নাগরিক তিনি, হাতে তাঁর মার্কিন পাসপোর্ট। কিন্তু নামের শুরুতে মহম্মদ দেখেই আবার সেই প্রায় ভূতগ্রস্তের মতো আচরণ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রাখা, অপমানজনক তল্লাশি, কোনও কথাতেই বিশ্বাস রাখতে না পারা।

ট্রাম্প জমানা শুরু হতেই আমেরিকার এই নতুন মুখ প্রকাশ্যে, অথবা প্রচ্ছন্ন মুখটা প্রকট। বিদ্বেষ আর ঘৃণাই যে তাঁর তাস, সে কথা নির্বাচনী প্রচারেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার পরও যখন জিতলেন, তখনই বোঝা গিয়েছিল, মেল্টিং পট নামে পরিচিত যে আমেরিকা, তার প্রবাহের গভীরে অসহিষ্ণু আক্রোশের চোরাস্রোত এক ঘনিয়ে উঠেছে দুর্বার। ট্রাম্প দায়িত্ব নিতেই সেই চোরাস্রোতটা ছিটকে এল উপরে, অসহিষ্ণু আক্রোশ প্রবল বিক্রমে মাথা তুলতে শুরু করল মার্কিন মুলুক জুড়ে। বিদ্বেষ‌ের কারবারিরা এত দিন পর যেন পৃথিবীর প্রাচীনতম ক্রিয়াশীল গণতন্ত্রটির নাগরিক হওয়ার সার্থকতা খুঁজে পেলেন।

বিদ্বেষের কারবারিরা অবশ্য শুধু আমেরিকায় মাথা তোলেননি, পৃথিবীর নানা প্রান্তেই মাথা তুলেছেন তাঁরা। সেই কারণেই ব্রিটেনের গণভোট ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বর্জনের রায় দেয়, মায়ানমার রোহিঙ্গাদের উৎখাতে মেতে ওঠে, বাংলাদেশে মুক্তমনাদের মুছে দেওয়ার তোড়জোড়ে বুঁদ হয়, ভারতে ‘নিষিদ্ধ’ মাংস রাখার মনগড়া অজুহাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত নাগরিককে পিটিয়ে মারা হয়।

সভ্যতার গতিপথটাকে ঠিক উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার এক চেষ্টা শুরু হয়েছে যেন। অগ্রগামী সভ্যতাকে যেন তার ফেলে আসা ইতিহাসে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। এই অপপ্রয়াস জয়ী হবে না। সভ্যতার নিয়মেই এই অপপ্রয়াসের জয় অসম্ভব। সভ্যতাকে যে সঙ্কটের মুখে দাঁড় করাচ্ছে এই অবিমৃষ্যকারীরা, তাতে অনর্থ ঘটবে। আর সে অনর্থের সবচেয়ে বড় শিকার হতে হবে এই অবিমৃষ্যকারীদেরই! অপেক্ষা শুধু এক উচ্চকিত প্রতিরোধের।

তাই আবার বলি, এ সঙ্ঘাতে নীরব থাকার অবকাশটা কিন্তু আর বেশি দিন থাকবে না। এ বার পক্ষ নিতেই হবে।

Anjan Bandyopadhyay Donald Trump Srinivas Kuchibhotla Immigration Policy Of Trump
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy