স্কুল ব্যাগের ওজন কমাতে এ বার নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।
অবশেষে সেই বহুকাঙ্খিত সিদ্ধান্ত এল। বহু বিশেষজ্ঞ বহু কমিটির বহু বছরের সুপারিশ-পরামর্শ শিকেয় তুলে রাখার পর অবশেষে সেই স্বাগত পদক্ষেপ এল। স্কুলের ব্যাগটা যে বড্ড ভারী, শিশুদের পক্ষে বহন করা অসহ্য, এই সারসত্যকে এ যাবৎ উপেক্ষা করে আসার পর এ বার কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা এল। যেখানে নির্দিষ্ট কিছু সিদ্ধান্ত জানিয়ে শিশুর পিঠ-কাঁধ-মস্তিষ্কের উপর থেকে বোঝাটা নামিয়ে নেওয়া হল। নবীন প্রজন্মের জন্য এক নতুন পথচলা শুরু হল এ বার।
এমনটা নয় যে এ দেশে এ নিয়ে বিস্তর চর্চা হয়নি। সমাজ জুড়ে তীব্র দাবি, উপদেষ্টাদের বারংবার অভিমত, এবং সর্বোপরি যশপাল কমিটির অতিদীর্ঘ রিপোর্টেও নির্দিষ্ট সুপারিশ করে বলা হয়েছিল, শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধির অনুকূল পরিবেশ তৈরির জন্য সবার আগে বোঝা কমানো দরকার। সে বোঝা পিঠের যেমন, তেমনই মনেরও। বাড়ন্ত বাচ্চার বৃদ্ধি যে কোনও পানীয় অথবা টনিকে নেই, আছে এই সহজ পন্থাতেই, সে কথা বিস্মৃত হয়েছিলাম আমরা। অতএব নিশ্চুপ সরকার, প্রতিযোগিতাদীর্ণ অভিভাবককুল এবং সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট-এর তত্ত্বে বিশ্বাসী সমাজ ক্রমাগত বোঝা বাড়িয়ে যাচ্ছিল শিশুর কাঁধে। কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা তাই এই মুহূর্তের সবচেয়ে অভিনন্দনযোগ্য পদক্ষেপ।
শুধু স্কুলব্যাগের ওজন বেঁধে দেওয়াই নয়, আরও অনেকগুলো প্রশংসনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে নির্দেশিকায়। একটা নিদিষ্ট বয়স পর্যন্ত হোমওয়ার্কের বোঝা যেন না চেপে বসে শিশুর ওপর, সেই খুঁটিনাটিও নিশ্চিত করা হয়েছে নির্দেশিকায়। অর্থাৎ ওই একেবারেই প্রাথমিক নবীন বয়সটাতে বাইরে থেকে চাপিয়ে দেওয়া গুরুতর কাজের বদলে স্বাভাবিক স্ফুরণের প্রাকৃতিক পথকেই অনুসরণ করার কথাই নির্দিষ্ট হয়েছে, বহু শতাব্দী ধরে মনীষীরা যে কথাটার ওপর বার বার জোর দিয়ে এসেছেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এ পৃথিবীকে জঞ্জালমুক্ত করার অঙ্গীকার যখন নিচ্ছিলাম আমরা, ঠিক তখনই ওই শিশুর সামনে অনেক বোঝার জঞ্জাল পেশ করছিলাম অজান্তেই হয়তো বা। সেই জঞ্জালমুক্তির দরকার ছিল।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
আরও পড়ুন: প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণিতে হোমওয়ার্ক নয়, ক্লাস পিছু ব্যাগের ওজনও বেঁধে দিল কেন্দ্র
নির্মল হোক ভবিষ্যৎ, জঞ্জালমুক্ত হোক বাড়ন্ত শিশুর সময়। নতুন সূর্যের আলো এসে পড়ুক ওই তরতাজা উজ্জ্বল মুখগুলোর উপর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy