Advertisement
E-Paper

উদ্বিগ্ন খোদ মুখ্যমন্ত্রী, পুলিশ তবু নিশ্চিন্তেই

একটার পর একটা প্রাণ বেঘোরে খসে পড়ছে রাজপথে। আমরা অসহায় দর্শক শুধু। রোজ অথবা মাঝেমধ্যেই একটা করে দুঃসংবাদ আসে। আসে হা-হুতাশ। চলেও যায়। কিন্তু থেকে যায় রাজপথে অপমৃত্যুর পরম্পরাটা।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৩৫
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

একটার পর একটা প্রাণ বেঘোরে খসে পড়ছে রাজপথে। আমরা অসহায় দর্শক শুধু। রোজ অথবা মাঝেমধ্যেই একটা করে দুঃসংবাদ আসে। আসে হা-হুতাশ। চলেও যায়। কিন্তু থেকে যায় রাজপথে অপমৃত্যুর পরম্পরাটা।

রাতের কলকাতা মুগ্ধ করত সে তরুণীকে। অফিস সেরে মোহাবিষ্ট চোখ নিয়েই হয়তো অফিসের গাড়িতে বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু উত্তর কলকাতার এক মোড়ে কালান্তক ট্রাক পিষে দিয়ে গেল গাড়িটাকে।

বাগবাজারের সায়নী মুখোপাধ্যায় কখনও ভাবেননি বোধ হয়, রাতের মহানগরই প্রাণ নেবে তাঁর। তুলিকা মিত্রও কখনও ভাবেননি, ছেলে সার্থককে নিয়ে বাইকে করে যাওয়ার সময়, পিছন থেকে বেলাগাম ছুটে আসা ট্রাক বিটি রোডেই পিষে দিয়ে যাবে তাঁদের।

পথদুর্ঘটনার প্রাবল্য এ রাজ্যে এত এখন যে উদ্বিগ্ন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ স্লোগান তুলে বিশেষ অভিযানে নামতে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে পথে নেমেছেন, সচেতনতার লক্ষ্যে পদযাত্রা করেছেন, নানা প্রশাসনিক মঞ্চ থেকে সতর্ক হওয়ার বার্তাটা অবিরাম দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু পুলিশ সম্ভবত মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রায় এক দিন পা মিলিয়েই দায় সেরে ফেলেছে। পথদুর্ঘটনায় রাশ টানতে শুধু সতর্ক করা যে যথেষ্ট নয়, সতর্ক থাকাও যে অত্যন্ত জরুরি, পুলিশ সম্ভবত তা বুঝে উঠতে পারেনি এখনও।

উত্তর কলকাতার যে মোড়ে সদ্য প্রাণ গিয়েছে অফিস-ফেরত তরুণীর, মাসখানেক আগেও সেই মোড়ই প্রাণ নিয়েছিল এক কলেজ ছাত্রীর। দুর্ঘটনাপ্রবণ মোড়ে নজরদারিটা যে অত্যন্ত জরুরি, কলকাতার ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রকরা তা আঁচ করতে পারেননি সম্ভবত।

কলকাতা হোক বা জেলা, মহানগরের রাজপথ হোক বা জাতীয় সড়ক, দুর্ঘটনা রোধে পুলিশি সচেতনতা বা কার্যকরী পুলিশি পদক্ষেপের উল্লেখযোগ্য দৃশ্যমানতা এখনও কোথাওই নেই।

পথ দুর্ঘটনার আঁচ ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর নিজের ঘরেও পৌঁছে গিয়েছে। তার অভিঘাতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও চিকিৎসাধীন। আবার সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরোগ্য কামনায় মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতার হাসপাতালে ছুটে এসেছিলেন যে তৃণমূল কর্মীরা, ফেরার পথে দুর্ঘটনায় তাঁদের মধ্যে দু’জনেরও প্রাণ চলে গিয়েছে।

কোথায়, কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকতে পারে, পুলিশ যে তা আঁচ করতে পারছে না, সে সত্য দৃশ্যমান। কিন্তু রাজ্যের বা কলকাতার পুলিশ কি নিজেদের অকর্মণ্যতার মাত্রাটা আঁচ করতে পারছে? পুলিশ সেটুকু আঁচ করতে পারলেই দুর্ঘটনায় অনেকটা রাশ টানা যাবে, বিশ্বাস রাখি।

Anjan Bandyopadhyay Newsletter
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy