Advertisement
E-Paper

কপালে যখন জয়তিলক, তখন আয়োজনে এই নেতি কেন?

বিরোধী নেত্রীর ভূমিকা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মসনদ পর্যন্ত তাঁর যে যাত্রাপথ, তাতে সিঙ্গুর যে সবচেয়ে বড় মাইলফলক, তা নিয়ে রাজ্যের বা দেশের মানুষের কোনও সংশয় নেই। সংশয় নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজেরও।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০৫
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

বিরোধী নেত্রীর ভূমিকা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মসনদ পর্যন্ত তাঁর যে যাত্রাপথ, তাতে সিঙ্গুর যে সবচেয়ে বড় মাইলফলক, তা নিয়ে রাজ্যের বা দেশের মানুষের কোনও সংশয় নেই। সংশয় নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজেরও। সেই সিঙ্গুরের দিগন্তে যখন চূড়ান্ত জয় সূচিত হল, তখন উদ্‌যাপন যে মহাধুমধামেই হবে, তা প্রত্যাশিত। বেনজির তৎপরতায় জমি পুনরুদ্ধারের কাজ হচ্ছে। যত দ্রুত হওয়ার কথা ছিল, তার চেয়েও দ্রুত বেগে সমীক্ষা-মাপজোক সেরে দলিল-পরচা কৃষকের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। কৃষিযোগ্যতা নেই আর যে জমিতে, তাকে হুবহু পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনার সদর্প ঘোষণাও থাকছে। আর থাকছে সিঙ্গুরের ইতিবৃত্তকে এক চিরন্তন, চিরভাস্বর আলোকবৃত্তে ধরে রাখার প্রচেষ্টা।

ইতিহাসের পাতায় যেন ঠাঁই পায় সিঙ্গুরের উপাখ্যান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জমি রক্ষার জন্য যে আন্দোলন, যে দশকব্যাপী সংগ্রাম, যে অসামান্য বিজয়, সে সবের সমন্বিত ইতিবৃত্ত যাতে এ বঙ্গের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হিসেবে শাশ্বত হয়ে যায়, সেই লক্ষ্যেই প্রস্তুতিটা শুরু হয়েছে।

যে কোনও রাজনীতিকই এমনটাই করবেন। এই রকমই প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু প্রত্যাশিত ছিল না যা, তেমন কিছুও ঘটছে।

বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন যে ভাবে জাতীয় সড়ক আটকে সিঙ্গুরে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন, আজ রাজ্যের মুখ্য প্রশাসক হিসেবেও কি সেই একই ভাবে জাতীয় সড়ক আটকে সিঙ্গুর-বিজয় উদযাপনের কোনও অর্থ থাকতে পারে? এক দশক আগের সে লড়াই ছিল অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম। সিঙ্গুরের জমি এবং রাজনৈতিক জমি আঁকড়ে রাখার মরিয়া চেষ্টায় বিরোধী নেত্রীর আইন ভাঙার সে দৃশ্যপট নৈতিকতার পরিসরে কোনও খটকা জাগায় না। কিন্তু লড়াই যখন সুস্পষ্ট পরিণতিতে পৌঁছে গিয়েছে, কপালে জয়তিলক যখন জ্বলজ্বল করছে এবং সর্বোপরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রিত্বে আসীন রয়েছেন, তখন জাতীয় সড়ক আটকে এই উদ্‌যাপনকে সমর্থন করার যুক্তি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক মহাসড়ক আটকে সভার আয়োজন হয়েছে। এ ধরনের কর্মসূচি স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ জনজীবনে সমস্যা তৈরি করে। জাতীয় সড়কের অংশবিশেষ অবরুদ্ধ হলে, বাংলার সীমানা ছাড়িয়ে ভিন্‌রাজ্যেও প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তাই এই ধরনের কর্মসূচি রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ পদাধিকারীর ইচ্ছায় আয়োজিত হলে বিস্ময় জাগে!

সিঙ্গুরকে সাফল্যের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরার জন্য যে মহাউদ্‌যাপন, সেখান থেকে চারিয়ে যাওয়া বার্তাটা আদ্যন্ত ইতিবাচক হওয়াই জরুরি ছিল। কিন্তু এ আয়োজন যে বার্তা দিচ্ছে, তা কিন্তু সদর্থক নয়।

Anjan Bandyopadhyay Singur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy