Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Political News

পরিসংখ্যান দিয়ে নয়, সন্ত্রাসের শিকড় উপড়ে শান্তি ফেরান কাশ্মীরে

ধাক্কাটা আচমকা এখানেই এসে লাগে। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যখন কিছু বলছেন, তা-ও আবার প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানি কার্যকলাপ প্রসঙ্গে, তখন আমরা, এই দেশের আমজনতা, তা বিশ্বাস করি। অন্তত করতে চাই।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৭ ০৩:২৯
Share: Save:

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ দাবি করলেন, পাক জঙ্গি কার্যকলাপ প্রসঙ্গে পরিস্থিতি এখন অনেকটাই উন্নত হয়েছে। বিষয়টিকে আরও নির্দিষ্ট করে বলার উদ্দেশ্যে পরিসংখ্যানও তুলে ধরলেন তিনি। বললেন, সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর দেশে পাক জঙ্গি অনুপ্রবেশের সংখ্যা কমে গিয়েছে ৪৫ শতাংশ। এবং যার ফলে পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায়।

ধাক্কাটা আচমকা এখানেই এসে লাগে। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যখন কিছু বলছেন, তা-ও আবার প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানি কার্যকলাপ প্রসঙ্গে, তখন আমরা, এই দেশের আমজনতা, তা বিশ্বাস করি। অন্তত করতে চাই। এবং সেই জন্যই রাজনাথ সিংহের বক্তব্যে হোঁচট খেয়ে অস্বস্তির মুখে পড়ি। পাক জঙ্গি অনুপ্রবেশ যদি বিপুল ভাবে কমেই থাকে, জঙ্গি ঘাঁটি যদি উড়িয়ে দেওয়ার কাজ সফল ভাবেই করে চলা যায়, নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতি যদি উন্নতই হয়, তা হলে উপত্যকায় তার লক্ষণ দেখছি না কেন? কেন সেখানকার পরিস্থিতিকে প্রতি দিন একটু একটু করে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে দেখছি? পাক জঙ্গিদের রুখতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে অনেক ভিতরে উপত্যকার মধ্যেই অন্য দেওয়াল তুলে দিচ্ছি না তো?

রাজনাথ সিংহের বক্তব্যে সংশয় আসছে কি শুধু কাশ্মীর উপত্যকার দৈনন্দিন অশান্ত ছবির কারণেই? নাকি পরিসংখ্যানেও অন্য ছবি ফুটতে দেখছি? সাউথ এশিয়া টেররিজম পোর্টাল (এস এ টি পি)-র একটি পরিসংখ্যান বলছে, নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত তিন বছরে জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় নিরাপত্তাকর্মীর মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে ৭২ শতাংশ, নিরীহ মানুষের মৃত্যু বেড়েছে ৩৭ শতাংশ এবং জঙ্গি খতমের সংখ্যা বেড়েছে ৩২ শতাংশ। এর মধ্যে সন্ত্রাসবাদের বলি সবচেয়ে বেশি হয়েছে গত এক বছরে, বিশেষত ৮ জুলাই জঙ্গি নেতা বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর।

এই দেশের যে কোনও মানুষকে প্রশ্ন করুন রাজনাথ সিংহ, উত্তর পাবেন একটাই, কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদের শেষ দেখতে চাই আমরা। এবং এই দেশের আমআদমি জানেন, কাশ্মীরে সেই লক্ষ্য এখনও অনেক দূর।

মাননীয় রাজনাথ সিংহ, প্রচারের ঢক্কানিনাদে আমরা নিশ্চয়ই প্রভাবিত হই। তবে সেই প্রভাব সাময়িক। এই দেশের হৃদয় জয় করে নিতে পারেন আপনি, উপত্যকা থেকে সন্ত্রাসবাদের শিকড়টাকে উপড়ে ফেলে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারেন যদি। কাজে করে দেখান। লোকে আপনাকে বড় বলবে। পরিসংখ্যানগুলো মানুষকেই বলতে দিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE