ব্রিকস সম্মেলনে।
যন্ত্রণা রয়েছে। সন্ত্রাসের নখরাঘাতে নিত্য রক্তক্ষরণ রয়েছে। সেই বিষ-নখ ভাঙতে সকলে কেন যথেষ্ট উৎসাহ দেখাচ্ছেন না, তা নিয়ে বিরক্তি রয়েছে, ক্রোধ রয়েছে। কিন্তু ভারতের বিশ্বজনীন গ্রহণযোগ্যতাটাও রয়েছে। কোনও প্রতিবেশী রাষ্ট্র হয়তো রোজ ভারতকে রক্তাপ্লুত করার অবিশ্রাম প্রয়াসে মগ্ন। কিন্তু তার চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যক রাষ্ট্র ভারতের হাত ধরতে ইচ্ছুক, ভারতের সঙ্গে পথ চলতে আগ্রহী, ভারতকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে উৎসাহী।
রবিবার চাঁদের হাট বসল গোয়ায়। এক ঝাঁক অতিথি। ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে হাজির রাশিয়া, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলের রাষ্ট্রপ্রধানরা। একই সঙ্গে বিমস্টেক দেশগুলির প্রতিনিধি হিসেবে একে একে হাজির বাংলাদেশ, মায়ানমার, তাইল্যান্ড, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রীয় নেতৃত্ব।
পাকিস্তানের সঙ্গে তুমুল উত্তেজনা সন্ত্রাস আর কাশ্মীর ইস্যু ঘিরে। ইসলামাবাদকে কোণঠাসা করতে গোটা বিশ্বকে পাশে পেতে চেয়েছে নয়াদিল্লি। কেউ স্পষ্ট উচ্চারণে পাশে দাঁড়িয়েছে। কোনও রাষ্ট্র নরম বিবৃতি দিয়েছে। কেউ দ্বিধাদ্বন্দ্ব রেখেছে। ভারতীয় কূটনৈতিক শিবিরের অভ্যন্তরীণ চর্চায় এ নিয়ে ঝড় উঠেছে। পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার ডাক দিতে এখনও আপত্তি যাদের, তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু রবিবার ভারতের উঠোনে যে আন্তর্জাতিক সমারোহ রূপ পেয়েছে, তা নেতিবাচক প্রশ্নগুলোর পাহাড়কে টপকে কূটনীতির আকাশে রামধনু এঁকে দিয়েছে।
প্রগতিশীল বিশ্বের প্রতিটি সদস্যের কাছ থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চড়া সুর প্রত্যাশা করে ভারত। সে প্রত্যাশায় কোনও অন্যায়ও হয়তো নেই। তাই জটিল কূটনৈতিক সমীকরণের বাধ্যবাধকতা প্রত্যাশা পূরণের পথে কাঁটা বিছিয়ে দিলে স্বাভাবিক ভাবেই এক রাশ তিক্ততার বাষ্প ঘিরে ধরে। কিন্তু তিক্ততাতেই জগৎ শেষ হয় না। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরাসরি মুখ না খোলার বাধ্যবাধকতা হয়তো কোনও রাষ্ট্রের থাকতে পারে। কিন্তু তাতে ভারতের হাত ধরার আগ্রহে কোনও ঘাটতি পড়ে না।
উরিতে জঙ্গি হামলার পর তাই ইসলামাবাদে নির্ধারিত সার্ক সম্মেলন বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু ভারত-পাক উত্তেজনা ঘিরে তুমুল কূটনৈতিক বিভাজনের মাঝেও ভারত কারও কাছে অচ্ছুৎ হয়ে ওঠে না। পাকিস্তানের ঋতু-নির্বিশেষ মিত্র রাষ্ট্রের কাছেও নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy