ডাভা গ্রামে বিজেপি কর্মী দুলাল কুমারের ঝুলন্ত দেহ। ফাইল চিত্র।
আরও এক বার পুরুলিয়া। আরও এক বার বলরামপুর। আরও একটা রাজনৈতিক মৃত্যু। বিজেপি কর্মী বলেই খুন করা হচ্ছে এমন অভিযোগে কলকাতা থেকে দিল্লি সর্বত্র তোলপাড়। সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে যাচ্ছে এ রাজ্যে তৃণমূল বিরোধিতার ‘শাস্তি’র নিন্দায়। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে বলা হচ্ছে এটা চক্রান্ত। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্যই নাকি এই কাণ্ডগুলো ঘটানো হচ্ছে। চাপানউতোরে সরগরম রাজনৈতিক প্রাঙ্গণ।
কারণটা যাই হোক না কেন, দায় কিন্তু নিতে হবে প্রশাসনকেই। সত্যি যদি তৃণমূল বিরোধিতার কারণে এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে তা হলে তার থেকে মারাত্মক ঘটনা আর কিছু হতে পারে না। বিজেপি করার অপরাধে মৃত্যু, এ হেন পোস্টার লটকে দেওয়ার স্পর্ধাও কল্পনাতীত ভাবে ন্যক্কারজনক। আর যদি শাসকের বক্তব্য ঠিক বলে ধরে নেওয়া যায়, যদি এমনটাই হয়, তৃণমূল সরকারের বদনাম করানোর জন্যই এই ধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে, তাতেও দায় এড়াতে পারে না প্রশাসন। একই অঞ্চলে অল্প কয়েক দিনের ব্যবধানে, একই কায়দায় দু’জন মানুষের হত্যা হয়ে গেল অথচ পুলিশ প্রশাসন কিছুই করে উঠতে পারল না, এর চেয়েও লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না। দায় ঝেড়ে ফেলার কোনও চেষ্টাই ধোপে টিকবে না। ঝাড়খণ্ড, দুর্গম সীমানা, মাওবাদী— কোনও অজুহাত দিলেও না।
সাম্প্রতিক পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিংসা এই রাজ্যকে ইতিমধ্যেই গণতন্ত্রের বধ্যভূমি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে অত্যন্ত সার্থক ভঙ্গিমায়। ভাবমূর্তির বিশ্বাসযোগ্যতা যখন তলানিতে, তখনই পর পর এই দুই হত্যার ঘটনা আরও এক বার পশ্চিমবঙ্গের মুখে কালিমা লেপন করল। অথচ এই কলঙ্ক অপনোদনের দায় ছিল সরকারেরই। রাজনৈতিক-প্রশাসনিক-বাণিজ্যিক কোনও পরিস্থিতির জন্যই এই ধরনের ঘটনা বাঞ্ছিত নয়। সরকারকেই প্রমাণ দিতে হবে তাঁদের সদ্ভাবনার কথা। অন্যথায়, গণতন্ত্র বড় নিষ্ঠুর। সে এক দিন না এক দিন প্রতিশোধ নিয়েই ছাড়ে।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
আরও পড়ুন
পুরুলিয়ায় ফের এক বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ, পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে ইটবৃষ্টি, লাঠিচার্জ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy