সম্প্রতি বিভিন্ন কারণে ছ’হাজারেরও বেশি ছাত্রভিসা বাতিল করল আমেরিকার বিদেশ দফতর। তার মধ্যে কিছু ছাত্রের ভিসা বাতিল হয়েছে ‘সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে সহায়তা’র কারণে। সন্ত্রাসবাদী কারে কয়? প্রশাসন খোলসা করেনি। তবে, ‘ইহুদি-বিদ্বেষী’ আচরণের ‘অপরাধ’-এ ইতিমধ্যেই অনেক ছাত্রছাত্রী সরকারের বিষনজরে। পথে নেমে আন্দোলন করাই একমাত্র ‘অপরাধ’ নয়, কড়া নজর রাখা হচ্ছে তাদের সমাজমাধ্যমের প্রোফাইলেও। কোনও পোস্ট সরকারের পছন্দ না হলে ভিসা বাতিল হতে পারে, এমন আশঙ্কা প্রবল। এ দফায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশে উচ্চ শিক্ষাক্ষেত্রে দখল প্রতিষ্ঠা করার জন্য লাগাতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই একাধিক নীতিগত পরিবর্তন ঘটেছে, যা আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে নেতিবাচক হয়েছে। বাক্স্বাধীনতার দেশ আমেরিকায় তা হলে এ বার সরকারই ঠিক করে দেবে ছাত্রছাত্রীদের মতপ্রকাশের অধিকারের সীমা?
আশঙ্কা: ট্রাম্প প্রশাসনের রোষে আমেরিকার উচ্চ শিক্ষা।
সহ‘চর’
তিব্বতের দুর্গম পার্বত্যভূমিতে দেখা যায় তাদের— অ্যান্টিলোপ। হরিণেরই ভাই-বেরাদর যেন, বাদামি লোমে ঢাকা, বড় বড় চোখ। তিব্বতি অ্যান্টিলোপ বিপন্ন প্রজাতিভুক্ত প্রাণী, তাই তাদের রক্ষণ ও নজরদারি জরুরি। করবে কে? কে আবার, চিন ছাড়া? ‘চাইনিজ় অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস’ আর ‘ডিপ রোবোটিক্স’, দুই প্রতিষ্ঠান মিলে তৈরি করেছে ‘বায়োনিক অ্যান্টিলোপ’। দেখতে অবিকল অ্যান্টিলোপের মতোই, কিন্তু আসলে এআই আর ৫-জি প্রযুক্তিতে ঠাসা। আসল অ্যান্টিলোপের দলে মিশে গিয়ে সে নজর রাখবে স্বজাতির উপরে, ছবি আর তথ্য পাঠাবে নির্মাতাদের। দেশটা চিন, তাই চারপেয়ে ছাড়িয়ে দুপেয়ে মানুষের উপর নজরদারি করতে কত ক্ষণ? এ যে চর না সহচর, কে বলবে?
নতুন ইংরেজি
জেনারেশন আলফার প্রিয় কিছু শব্দ ইন্টারনেট থেকে উড়ে এসে জাঁকিয়ে বসল কেমব্রিজ ডিকশনারির পাতায়। ইংরেজি ভাষায় অন্তর্ভুক্ত হল ‘স্কিবিডি’, যার মানে দারুণ, বিতকিচ্ছিরি কিংবা হিজিবিজি এমন অনেক কিছুই হতে পারে। রয়েছে ‘ডেলুলু’ অর্থাৎ আকাশকুসুমেই আস্থা যার। ‘ট্র্যাডওয়াইফ’ আর ‘ব্রোলিগার্ক’ও আছে তালিকায়। প্রথমটির অর্থ আগেকার মতো গৃহবধূ; দ্বিতীয়টির মানে ইয়ারদোস্ত হয়ে ওঠা প্রযুক্তিবিশ্বের তরুণ প্রভুরা। এমন আরও শব্দ ঢুকেছে, সঙ্কলকদের ধারণা, যেগুলি বহু দিন টিকবে। অভিধান বা ব্যাকরণ তো ভাষার প্রহরী বা সম্ভ্রমরক্ষার পেয়াদা নয়। ভাষানদী ছোটে নিজগতিতে, মেলে কত শাখাপ্রশাখা। সেই বহমানতা দেখা, তার অববাহিকায় প্রাপ্ত যুগচিহ্নের নথি কুড়িয়ে জমিয়ে রাখা পর্যন্তই মানুষের দৌড়।
সুন্দর-অসুন্দর
নভেম্বরে ব্যাঙ্ককে যখন মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার মঞ্চে দাঁড়াবেন তিনি, তাঁর সঙ্গে, তাঁর পাশেই যেন থাকবেন প্যালেস্টাইনের নিপীড়িত মানুষ, অভুক্ত শিশু, বিধ্বস্ত নারীও। বললেন নাদিন আয়ুব, বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় প্যালেস্টাইনের প্রথম প্রতিনিধি। অবশ্য, তিনি দুবাইয়ের বাসিন্দা। কেউ প্রশ্ন করতে পারেন, যে মঞ্চে ভোগবাদের উদ্যাপন ঘটে প্রতি মুহূর্তে, সেখানে কি আদৌ এই প্রতিবাদ সম্ভব, না কি নেহাতই প্যালেস্টাইনপন্থী সহানুভূতির হাওয়া নিজের পালে টানতে চান নাদিন? এর উত্তরে কেউ মনে করিয়ে দিতে পারেন নাগরিক কবিয়ালের পঙ্ক্তি: ‘যে যেখানে লড়ে যায় আমাদেরই লড়াই’। এখনও যদি এমন কেউ থাকেন, প্যালেস্টাইনের অসহ্য বাস্তব যাঁর চোখ এড়িয়ে গিয়েছে, সৌন্দর্যের বিশ্বমঞ্চ থেকে তো তাঁর উদ্দেশেও কথা বলা সম্ভব। কত হাজার মরলে তাঁরা মানবেন যে, এ ভাবে একটা জনগোষ্ঠীর জীবন তছনছ করে দেওয়া যায় না, সেই প্রশ্নটাও তো করা প্রয়োজন।
প্রথম: নাদিন আয়ুব।
নিজ দায়িত্বে রাখুন
বিদেশ সফরে রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে কী কী ‘ব্যক্তিগত’ জিনিস থাকতে পারে? আর যা-ই হোক, ‘পোর্টেবল টয়লেট’ কি নিয়ে যাওয়া সম্ভব? রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নাকি সে-ও সম্ভব করেছেন। ফ্রান্সের প্রচারমাধ্যম আগেই খবর করেছিল— পুতিন যেখানেই যান, ‘কাজ’ সারা হলে দেহরক্ষীরা নাকি তা প্যাকেটে পুরে সিল করে নেন চটপট, অতঃপর ব্যাগে ভরে স্বদেশে ফেরত। সম্প্রতি আলাস্কা-সফরেও খবরে উঠে এসেছে পুতিনের ‘পুপ সুটকেস’। বিদেশি সরকার বা তাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যাতে ল্যাবে মানব-বর্জ্য পরীক্ষা করে প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্য, রোগ-অসুখের গোপন তথ্য পেয়ে না যায়, তাই এ বন্দোবস্ত। নিন্দুকেরা অবশ্য বলছে, সে-ই ভাল: নিজের ভার নিজেই বইল, তোমারও রইল, আমারও রইল!
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)