Advertisement
E-Paper

হতাশার আস্ফালন নয় তো?

এনআরএসে ষোলটা কুকুরছানাকে নির্মম ভাবে পিটিয়ে হত্যা করার ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছিল কলকাতায় তথা গোটা বাংলায় তথা প্রায় গোটা ভারতে। তার রেশ এখনও কাটেনি।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:০৩
আহত অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত।

আহত অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত।

ভূভাগ কোথাও নরম থাকলে বিড়ালের পক্ষে তা আঁচড়ে আক্রোশ চরিতার্থ করা সহজ হয় জানতাম। কিন্তু পুলিশও যদি বিড়ালের মতো আচরণ করে, তা হলে পরিস্থিতি দুর্ভাগ্যজনক হয়ে ওঠে। যেমনটা হল স্বাস্থ্যভবন চত্বরে।

এনআরএসে ষোলটা কুকুরছানাকে নির্মম ভাবে পিটিয়ে হত্যা করার ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছিল কলকাতায় তথা গোটা বাংলায় তথা প্রায় গোটা ভারতে। তার রেশ এখনও কাটেনি। যে দুই নার্সিং ছাত্রীকে ওই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে কুকুরছানা হত্যা করতে, তাঁরা কী করে এখনও হাসপাতালে ঢুকছেন, সেই প্রশ্ন তুলে আসরে নেমেছেন পশুপ্রেমীরা। অভিযুক্তদের দ্রুত বিচার এবং কড়া শাস্তির দাবিও তোলা হচ্ছে।

এই রকম কিছু দাবিদাওয়া নিয়ে যদি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলে, তাহলে পুলিশের তরফ থেকে বলপ্রয়োগ হওয়ার কথা নয়। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে স্বাস্থ্যভবন চত্বর থেকে বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশ বলপ্রয়োগ করল। পশুপ্রেমীদের উপরে লাঠি চলল।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

স্বাভাবিক ভাবেই পুলিশের দিকে কিন্তু আঙুল উঠছে, অনাবশ্যক বলপ্রয়োগের অভিযোগ উঠছে। যে সব অবকাশে লাঠি চালানো বা বলপ্রয়োগ করা জরুরি, সে সব অবকাশে পুলিশ নাকি চোখ তুলে তাকাতেই ভয় পায় আজকাল। জনসাধারণের মুখে মুখেই এই ধরনের কথাবার্তা ফেরে। স্বাস্থ্যভবন চত্বরের ঘটনাটা আরও গুরুতর করে তুলল বিষয়টাকে। নিরস্ত্র এবং শান্তিপূর্ণ নাগরিকদের জমায়েতের উপরে লাঠি চালানোর অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে, কিন্তু দুষ্কৃতীদের দেখে লাঠি ধরা পুলিশ ভুলে গিয়েছে— এই রকম চর্চাই এখন ফিরছে মুখে মুখে।

আরও পড়ুন: পশুপ্রেমীদের অবস্থানে পুলিশের লাঠি! অভিনেত্রী দেবলীনা-সহ অনেকে আহত

স্বাস্থ্যভবন চত্বরে যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তাঁরা কি খুব বিপজ্জনক ছিলেন? পশুপ্রেমীরা তো বটেই, আরও বেশ কয়েক জন বিশিষ্ট নাগরিক সামিল হয়েছিলেন বিক্ষোভে। তাঁদের মধ্যে টলিউডের কয়েক জন জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীও ছিলেন। প্রায় প্রত্যেকেরই অভিযোগ, পুলিশ কোনও অনুরোধ-উপরোধ শুনতেই চায়নি, আচমকা বলপ্রয়োগ করেছে, যাতে বিক্ষোভে সামিল হওয়া বিশিষ্ট জনেরাও জখম হয়েছেন।

বিশিষ্ট জনেরা যে কর্মসূচিতে থাকবেন, সেই কর্মসূচিতে প্রয়োজন হলেও লাঠি চালানো বা বলপ্রয়োগ করা যাবে না, এমন কোনও কথা নেই। কিন্তু এই বলপ্রয়োগ কি এড়ানো যেত না? দৈনন্দিন জীবনে আইনের শাসন মেনে চলেন যে নাগরিকরা, তাঁদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের প্রতি এতটা অসহিষ্ণুতা দেখানো কি উচিত হল? যেখানে বীরত্ব দেখানো জরুরি, সেখানে আর বীরত্ব দেখানোর সাহস পুলিশের হয় না, তাই নিরস্ত্র পশুপ্রেমীদের উপরে এবং বিশিষ্ট শিল্পীদের উপরে এত আস্ফালন— সাধারণ্যের এই চর্চাকে কি তা হলে সত্য বলে ধরে নেব?

Newsletter Protest Beating Violence Animal Lover Debolina Dutta Police NRS Hospital Anjan Bandyopadhyay অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy